ভুবন চিল-Black Kite
Black Kite

ভুবন চিল

Black Kite

ভুবন চিল, বাদামি চিল, গোদা চিল, ডোম চিল বা কেবলই চিল Accipitridae গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত মিলভাস গণের এক প্রজাতির মাঝারি আকারের সুলভ শিকারী পাখি।

ইংরেজি নাম: Black Kite

বৈজ্ঞানিক নাম: Milvus migrans

বর্ণনাঃ

এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৬১ সেন্টিমিটার, ডানা ৪৩.৮ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৩.৬ সেন্টিমিটার, পা ৫.২ সেন্টিমিটার ও লেজ ২৬.৫ সেন্টিমিটার। পুরুষ চিলের ওজন ৬৩০-৯৩০ গ্রাম এবং স্ত্রী পাখির ওজন ৭৫০-৯৪০ গ্রাম। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা অভিন্ন। তবে স্ত্রী পাখি পুরুষ পাখির তুলনায় একটু বড় হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহ স্পষ্ট গাঢ় লালচে-বাদামি। পিঠ কালচে লাল-বাদামি। ডানার উপরের অংশের মধ্য-ঢাকনি বরাবর ফিকে বাদামি রঙের ফিতা থাকে। ওড়ার সময় এর ডানার নিচের সাদা প্রাথমিক পালকগুলো স্পষ্ট নজরে পড়ে। ঠোঁট স্লেট-কালো। চোখ বাদামি; এবং পা ও পায়ের পাতা ফিকে হলুদ। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও পেটে প্রশস্ত সাদাটে কিংবা পীতাভ ডোরা থাকে। গায়ে অনিয়মিত ফিকে তিলা দেখা যায়। 

স্বভাবঃ

এর ঘন বন, পাতলা বন, পার্বত্য অঞ্চল, নদীর পাড়, বেলাভূমি, বন প্রান্ত, ঘাসবন, সাভানা প্রভৃতি অঞ্চলে দেখা যায়। এছাড়া বড় বড় বন্দর, শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলেও দেখা যায়। উপপ্রজাতি আর্দ্র ও জনহীন এলাকায় ঘুরে বেড়ায়।বড় বড় গাছে এরা দলবদ্ধভাবে রাত কাটায়। ভোরে সূর্য উঠলে এরা দল বেঁধে আকাশে ওড়ে আর অনেক্ষণ ঝাঁক বেঁধে চক্রাকারে উড়ে বেড়ায়। তারপর খাদ্যের সন্ধানে বিভক্ত হয়ে যায়। সন্ধ্যা বেলায় এরা তাদের আবাসে ফিরে আসে এবং পুনরায় ভোর বেলার মত চক্রাকারে কিছুক্ষণ ওড়ে। তারপর গাছে এসে বসে পড়ে।

খাদ্য তালিকাঃ

মাছ এদের প্রধান শিকার। আহত, মৃত বা অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি, স্তন্যপায়ী, ব্যাঙ, সরিসৃপ ও পোকামাকড়ও খায়। গ্রামে হাঁস-মুরগির ছানা ছিনতাই করতে এরা ওস্তাদ। বর্জ্যভূক পাখি হিসেবে কসাইখানা, বর্জ্য-স্তুপ, ময়লাপোঁতা, মাছবাজার ও পোতাশ্রয়ে ওরা উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য খায়। প্রায়ই শকুনের সাথে মিলে উচ্ছিষ্ট বা পশুর মৃতদেহ খায়।

প্রজননঃ

মার্চ থেকে মে ভুবন চিলের প্রধান প্রজনন ঋতু। স্থানভেদে প্রজনন মৌসুমে বিভিন্নতা দেখা যায়। উঁচু গাছে কাঠি, ডালপালা ও কাঠি দিয়ে এলোমেলো মাচার মত বাসা বানায়। বাসায় নষ্ট কাগজ, পাখির পালক, ছেঁড়া কাপড়, শুকনো গোবর, কাদা, উজ্জ্বল প্লাস্টিকের বস্তুও থাকে। বাসার উচ্চতা ভূমি থেকে ৫ মিটার থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত হয়। বাসা বানানো হয়ে গেলে ২-৪টি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ পাটল-সাদা। ডিমের মাপ ৫.৩ × ৪.৩ সেন্টিমিটার। ৩০ থেকে ৩৪ দিনে ডিম ফুটে ছানা বের হয়। ছানারা প্রায় দুই মাস বাসায় থাকে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয় চিলই বাসা বানায়, ডিমে তা দেয় ও সন্তান লালন-পালনের ভার নেয়। দুই বছর বয়সে ছানারা প্রজননক্ষম হয়।

বিস্তারঃ

দুই মেরু আর দুই আমেরিকা মহাদেশ বাদে প্রায় পুরো পৃথিবী জুড়ে এদের বিস্তৃতি। ভারতবর্ষে হিমালয়ের ২৫০০ মিটার পর্যন্ত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মায়ানমারে দেখা যায়।উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়া হয়ে দক্ষিণে পাকিস্তান পর্যন্ত এদের বিস্তৃতি। 

অবস্থাঃ

এরা বিগত কয়েক বছরে কি হারে কমছে বা বাড়ছে সে সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। তবে এরা সন্তোষজনক সংখ্যায় রয়েছে। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। পৃথিবীতে মোট ভুবন চিলের সংখ্যা আনুমানিক ১০ লক্ষ থেকে ৬০ লক্ষটি বলে বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনাল উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

নাকতা হাঁস-Knob-billed duck
দাগি নাটাবটের-Barred Buttonquail
হলদেচাঁদি কাঠকুড়ালি- Yellow-crowned Woodpecker
ধূসরাভ সাত সহেলি-Ashy minivet
লালপিঠ ফুলঝুরি-Scarlet backed flowerpecker
হরিয়াল-Treron
বড় পানকৌড়ি-Great cormorant
কলজেবুটি কাঠঠোকরা-Heart-spotted woodpecker
ধলাগলা সুইবাতাসি-White-throated needletail
তামাটে কাঠঠোকরা-Bay woodpecker