কলজেবুটি কাঠঠোকরা-Heart-spotted woodpecker
কলজেবুটি কাঠঠোকরা ওরফে হৃৎপিণ্ড-ফোঁটাযুক্ত কাঠঠোকরা একটি পাখির প্রজাতি যা উডকিপার গোত্রের অন্তর্ভুক্ত।
ইংরেজি নাম: Heart-spotted woodpecker
বৈজ্ঞানিক নাম: Hemicircus canente
বর্ণনাঃ
প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৫-১৬ সেন্টিমিটার। ওজন ৩৬ গ্রাম। স্ত্রী-পুরুষ পাখির চেহারায় সামান্য পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ পাখির কপাল কালো, স্ত্রী পাখির কপাল সাদা। এ ছাড়া উভয়েরই ঝুঁটি পেছনের দিকে খাড়া। ঘাড় কালো, দু’পাশ পীতাভ সাদা। শরীরের ওপরের অংশ কালোর ওপর সাদা। ডানার সাদা বাজু অংশে কালো রঙের ছোট হৃৎপিণ্ড আকারের ফোঁটা। খাটো লেজ; কালো বর্ণের। দেহতল কালচে-জলপাই। ঠোঁট শিঙ-বাদামি। চোখ জলপাই বাদামি। পা ও পায়ের পাতা স্নেট কালো। অপ্রাপ্তবয়স্কদের চেহারা অনেকটাই স্ত্রী পাখির মতো।
স্বভাবঃ
কলজেবুটি কাঠকুড়ালি চিরসবুজ ও আর্দ্র পাতাঝরা বন, অপ্রধান বন ওবাঁশজঙ্গলে বিচরণ করে; সাধারণত একা বা জোড়ায় দেখা যায়। স্বভাবে চঞ্চল। অন্যসব প্রজাতির কাঠঠোকরাদের মতো যত্রতত্র দেখা যায় না। গাছের কাণ্ডের চারপাশে লাফিয়ে ঘুরে ঘুরে শিকার খোঁজে। এ সময় শক্ত-মজবুত ঠোঁট চালিয়ে গাছের বাকলের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কীটপতঙ্গ বের করে আনে। শিকার পেলে তীক্ষ্ণকণ্ঠে ‘ক্লিক-ক্লিক’ সুরে ডেকে ওঠে। এ ছাড়াও মাঝে মধ্যে গাছের ডালের চারপাশে ঘুরে ঘুরে ‘টুই-টুই-টিটিটিটিটি’ সুরে ডাকতে থাকে।
প্রজননঃ
প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত। বাসা বাঁধে গাছের মরা কাণ্ডে গর্ত বানিয়ে। নিজেরাই গর্ত খুঁড়ে নেয়। ডিম পাড়ে ২-৩টি। মাপ ২.৪×১.৮ সেমি।
খাদ্য তালিকাঃ
গাছ পিঁপড়া, উইপোকা ও পোকামাকড়।
বিস্তৃতিঃ
এই প্রজাতির কাঠঠোকরাকে ভারতের হিমালয়ের বনাঞ্চলে এবং বাংলাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়েও দেখতে পাওয়া যায়।
অবস্থাঃ
বাংলাদেশে অপ্রতুল তথ্য শ্রেণিতে রয়েছে। প্রজাতিটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত। অন্যসব কাঠঠোকরার মতোই এদের শক্রসংখ্যা নগণ্য। তথাপিও এদের সংখ্যা অপ্রতুল্য। প্রধান কারণটি হচ্ছে অবাধে বৃক্ষ নিধন; ফলে প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।