তামাটে কাঠঠোকরা-Bay woodpecker
তামাটে কাঠঠোকরা Picidae পরিবারের Blythipicus গণের একটি পাখি। পাখটি লালমাথা কাঠঠোকরা নামেও পরিচিত।
ইংরেজি নাম: Bay woodpecker
বৈজ্ঞানিক নাম: Blythipicus pyrrhotis
বর্ণনাঃ
তামাটে কাঠকুড়ালি লাল ডানায় বাদামি ডোরা দেওয়া পাহাড়ি কাঠঠোকরা। এদের দৈর্ঘ্য ২৭ সেমি, ওজন ১৭০ গ্রাম, ডানা ১৪৫ সেমি, ঠোঁট ৫ সেমি, পা ৩ সেমি, লেজ ৯ সেমি। মেয়েপাখি ছেলেপাখির চেয়ে কিছুটা ছোট। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির পিঠ লাল ও দেহতল কালচে বাদামি; কাঁধ-ঢাকনি ও ডানায় প্রশস্ত কালচে বাদামি ডোরা আছে; ঠোঁট ফ্যাকাসে, চোখ অনুজ্জ্বল গাঢ় লাল ও পা শিঙ-বাদামি। ছেলেপাখির কান-ঢাকনি ও ঘাড়ের পাশে উজ্জ্বল লাল পট্টি রয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথায় ছিটা-দাগ থাকে কাঁধ-ঢাকনিতে বেশি স্পষ্ট দাগ ও ঘাড়ের পাশে লাল ছিটা থাকে।
স্বভাবঃ
এতদাঞ্চলে ক্রান্তীয় আর্দ্র নিম্নভূমির বনে অথবা পার্বত্য অরণ্যে দেখা মেলে। এ ছাড়াও হিমালয়াঞ্চলে এদের বিচরণ রয়েছে। খাদ্যের সন্ধানে বের হয় একাকী, জোড়ায় কিংবা পারিবারিক দলে। দিনভর মৃত গাছের কাণ্ডে অথবা শ্যাওলায় ঢেকে থাকা গাছের কাণ্ডে ধারালো মজবুত ঠোঁট চালিয়ে খাবার খোঁজে।
প্রজননঃ
প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে জুন। গাছের কাণ্ডে নিজেরা গর্ত বানিয়ে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিমগুলো সাদা, সংখ্যায় ৩-৪টি; মাপ ২.৯×২.১ সেমি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৫-১৭ দিন।
খাদ্য তালিকাঃ
খাদ্য তালিকায় রয়েছে সাদা পিঁপড়া ও গুবরে পোকার লার্ভা।
বিস্তৃতিঃ
তামাটে কাঠঠোকরা পাখিটি বাংলাদেশ, ভুটান, কম্বোডিয়া, চীন, হংকং, ভারত, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামে পাওয়া যায়। এবং বাংলাদেশের এরা সিলেট ,চট্টগ্রাম অঞ্চলের দেখা যায়।
অবস্থাঃ
প্রজাতিটি বিশ্বে বিপন্নমুক্ত। বিগত তিন প্রজন্ম ধরে এদের সংখ্যা কমেছে, তবে দুনিয়ায় এখন ১০,০০০-এর অধিক পূর্ণবয়স্ক পাখি আছে, তাই এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে এই প্রজাতি পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত (Least Concern LC) বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।