লালপিঠ ফুলঝুরি
লালপিঠ ফুলঝুরি হল ফুলপেকার পরিবার Dicaeidae-এর প্যাসারিন পাখির একটি প্রজাতি। বাংলাদেশে আট প্রজাতির ফুলঝুরির মধ্যে সিঁদুরেপিঠ ফুলঝুরি ও মেটেঠোঁট ফুলঝুরি প্রজাতির পাখি বেশি চোখে পড়ে। দুই প্রজাতি প্রায় সমান সংখ্যক আছে বাংলাদেশে।
বাংলা নাম: সিঁদুরে টুনি, লাল ফুলঝুরি, সিঁদুরে পিঠ ফুলঝুরি ও লালপিঠ ফুলঝুরি নামে পরিচিত পাখিটি।
ইংরেজি নাম: Scarlet backed flowerpecker
বৈজ্ঞানিক নাম: Dicaeum cruentatum
বর্ণনাঃ
দৈর্ঘ্য ৭ সে.মি ও ওজন ৬.০৩ গ্রাম। সিঁদুরেপিঠ ফুলঝুরি দেখতে সুন্দর। পুরেষের মাথা-পিঠ আলতা-লাল বা সিঁদুরে লাল, চোখের ওপরে যেন লেপটানো কালো কাজল, যা ডানার উপরিভাগেও লেগে গেছে। গলা-বুক ও পেটের তলা সাদা। লেজের ওপরের প্রান্ত আবার কালো। পা ও ঠোঁট কালো। স্ত্রী পাখি ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছানা দেখতে প্রায় একই রকম। স্ত্রী পাখির মাথার তালু-পিঠ ও ডানার উপরিভাগ বাদামি, লেজের গোড়া সিঁদুররঙা, আগাটা কালো।
স্বভাবঃ
সিঁদুরেপিঠ ফুলঝুরি বন-বাগানের পাখি। এরা ফুলের মধু বেশি পছন্দ করে। কীটপতঙ্গ ও মাকড়সাও খায়। এছাড়া ছোট ছোট ফলের বীজ খেয়ে এরা গাছের বংশ বিস্তারে সাহায্য করে। ফল খেতে খেতে এরা ফলের ভিতরও ঢুকে যায়। খাবার ভঙ্গিমাও চমত্কার। ডালপালার আড়ালে ঘুরে বেড়ায়।
প্রজননঃ
এই পাখি বাসা বানায় ঘাস, বিভিন্ন নরম গাছের আঁশ, মাকড়সার জাল দিয়ে। ঝুলন্ত-দুলন্ত বাসাটি দেখতে অনেকটাই ছোট আকৃতির লম্বাটে পেঁপের মতো।এই পাখিরা ডিম পাড়ে ২টি। ডিম ফুটে ছানা হয় ৯ থেকে ১১ দিনে।
খাদ্যঃ
এদের মূল খাবার নানান রকম ফল,লোহাজাম, খুদিজাম, গোলাপজাম, পাকা তাল, সফেদা, পেঁপে, পেয়ারা, আতা ও পাকা আমের প্রতি লোভ বেশি। ফল ছাড়াও পোকামাকড়, ফুলের মধুরেণুসহ পান করে তাল-খেজুরের রস।
বিস্তৃতিঃ
নিম্নভূমি বন এবং মাঝে মাঝে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়া জুড়ে বেশ কয়েকটি দেশে বাগানে পাওয়া যায়। এটি বাংলাদেশ, ভুটান, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামে পাওয়া যায়। কোনো বৈশ্বিক জনসংখ্যা গবেষণা করা হয়নি; এটি থাইল্যান্ডে বিশেষ করে এর বেশিরভাগ পরিসর জুড়ে সাধারণ বলে মনে করা হয়, যদিও ভুটান এবং নেপালে এটি বিরল বলে বিবেচিত হয়।