পাহাড়ি নীলকান্ত-Oriental dollarbird
পাহাড়ি নীলকান্ত কোরাসিডি পরিবারের অন্তর্গত ইউরিস্টোমাস গণের এক প্রজাতির বিরল পাখি। এরা বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখি। গ্রীষ্মে প্রজননের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসে । এরা পাহাড়ি নীলকণ্ঠ নামেও পরিচিত।
ইংরেজি নাম: Oriental dollarbird
বৈজ্ঞানিক নাম: Eurystomus orientalis
বর্ণনাঃ
পাহাড়ি নীলকান্ত লম্বায় ২৮ থেকে ৩০ সে মি হয়ে থাকে । পাখার দৈর্ঘ্য ১৭৮ থেকে ১৯৮ মি মি, ঠোঁট ২৭ থেকে ৩৫ মি মি, লেজ ৯০ থেকে ১০২ মি মি হয়ে থাকে । পুরুষ পাখিটির ওজন ১২০ গ্রাম এবং স্ত্রী পাখিটির ওজন ১৭২ গ্রাম হয়ে থাকে । এই প্রজাতির পাখিরা দেখতে গাঢ় বাদামী বর্ণের হয় । দেহের পিছনের অংশ এবং লেজ নীল সবুজ রঙের । এদের পেট এবং লেজের নিচের অংশ হালকা বর্ণের । গলা চকচকে উজ্জ্বল নীল । পাখা গাঢ় নীল রঙের । এদের ঠোঁট ছোট এবং চওড়াকৃতির হয় । ঠোঁট কমলা লাল রঙের সাথে কালো দাগ দেখতে পাওয়া যায় । পা লাল রঙের । স্ত্রী পাখি পুরুষ পাখির তুলনায় কিছুটা অনুজ্জ্বল । এছাড়া এদের মধ্যে আর কোন পার্থক্য নেই । অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি দেখতে খুবই অনুজ্জ্বল । এদের গলায় নীল রঙ দেখতে পাওয়া যায় না । এদের ঠোঁট ও পা লাল বর্ণের হয় ।
স্বভাবঃ
পাহাড়ি নীলকান্ত দিবাচর প্রাণী । এরা দিনের বেলা শিকার করে এবং রাতে বিশ্রাম নেয় । এদেরকে দিনের বেলায় বনে বাদাড়ে ঘুরতে দেখা যায় । এরা চিরসবুজ বন ও বনের প্রান্তে বাস করে। সাধারণত একাকী বা জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায়। গাছের পাতাবিহীন মগডালে বা বৈদ্যুতিক তারে বসে থাকে। হঠাৎ উড়ে এসে পোকামাকড় ধরে আবার ডালে বা তারে ফিরে যায়। এরা সাধারণত ‘ক্যাঁক-ক্যাঁক-ক্যাঁক’ স্বরে ডাকে।
প্রজননঃ
পাহাড়ি নীলকান্তর প্রজননকাল মার্চ থেকে জুন। এ সময় এরা গাছের প্রাকৃতিক কোটরে বাসা বানিয়ে তাতে ৩-৪টি সাদা রঙের ডিম পাড়ে। ডিম ফোটে ১৭-২০ দিনে। বাবা ও মা পাখি উভয়ে ডিমে তা দেয়। বাচ্চারা উড়তে শেখে প্রায় এক মাস বয়সে।
খাদ্য তালিকাঃ
এদের খাদ্য তালিকায় আছে পঙ্গপাল, ঘাস ফড়িং, মথ, ছোট টিকটিকি, উইপোকা, ঘুর্ঘুরে পোকা এবং বিভিন্ন প্রজাতির গুবরে পোকা ।
বিস্তৃতিঃ
এদেরকে দেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায় । এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি অস্ট্রেলিয়া থেকে জাপান পর্যন্ত।
অবস্থাঃ
আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা আশংকাহীন বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে এরা Critically endangered বা মহাবিপন্ন বলে বিবেচিত।