লজ্জাবতীর ঔষধি গুণাগুণ
লজ্জাবতী

লজ্জাবতী গাছের ঔষধি গুনাগুন 

লজ্জাবতী অতি স্পর্শকাতর। কোনোভাবে নাড়া দিলে ছড়ানো পাতা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাবে অনেক সময় মশা বা ক্ষুদ্র আকৃতির পোকামাকড় পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার চাপে মারা যায়।আফ্রিকার অনেক অধিবাসী চা ও কফির বিকল্প হিসেবে মাইমোসার লতা-পাতা, ফুল ও কচি ফলের নির্যাস পান করে থাকে। ইন্দোনেশিয়ায় ‘জায়েন্ট মাইমোসা (কাঁটাবিহীন)’ মহিষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার প্রচলন আছে। ‘ওয়াটার মাইমোসা’র শিকড় ও কচি পাতা শিং, মাগুর, কৈ, তেলাপিয়া ও অনুরূপ মাছের প্রিয় খাবার।লজ্জাবতীর লতাপাতা ও ফুলফল পুষ্টিতে অতিসমৃদ্ধ। এতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ প্রোটিনসহ সব ধরনের খাদ্য উপাদান। বিশেষ করে এটি ভিটামিন-এ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও নিয়েসিনে ভরপুর।

 লজ্জাবতীর ঔষধি গুণাগুণ ও উপকারিতা:

লজ্জাবতীর ঔষধি গুণাগুণ অত্যন্ত বেশি। নানা রোগের চিকিৎসায় হারবাল মেডিসিন তৈরিতে এর ব্যবহার যুগযুগ ধরে চলে আসছে। নাক, কান, দাঁত ও ক্ষুদ্রনালির ঘা সারাতে লজ্জাবতীর শিকড় লতা-পাতার ব্যবহার দেশে বিদেশে বহুল প্রচলিত। জন্ডিস, অ্যাজমা, টিউমার, হুপিংকফ, চর্মরোগ, ডায়াবেটিক্সসহ, হার্ট, লিভারের নানা রোগ সারাতে মাইমোসার ঔষধি গুণাগুণ খুব বেশি।

অর্শ রোগ: অর্শের বলিতে জ্বালা বেশী। ঝাল না খেয়েও যেন সেই রকম জ্বালাবোধ। তার সঙ্গে রক্তস্রাবও বেশী হোতে থাকে। এক্ষেত্রে গাছে ও মূলে ১০ গ্রাম আন্দাজ ১ কাপ দুধ ও ৩ কাপ পানি এক সঙ্গে মিশিয়ে একত্রে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে এটা প্রত্যহ সকাল বিকাল ২ বার খেতে হবে। ছাগলের দুধ হলে ভাল হয়।

আমাশয়: লজ্জাবতীর পাতা ও ডাটা ১০/১২ গ্রাম নিয়ে ৪কাপ পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন অবশিষ্ট ১কাপ থাকতে নামিয়ে ফেলুন। ২ভাগ করে সকালে এবং রাত্রে পান করুন ১০দিন। আমাশয় সেরে যাবে।

কানে পুজ হলে: লজ্জাবতীর কাথ তৈরি করুন সাথে সরিষার তৈল মিশিয়ে কানে ১ফোটা করে ব্যবহার করুন। পুজ সেরে যাবে।

যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে: লজ্জাবতীর বীজ দিয়ে তৈল তৈরি করে ব্যবহার করলে যৌনাঙ্গ দৃর ও শক্ত হয়।

যৌনাঙ্গ শৈথিলে: মহিলাদের অধিক সন্তান প্রসবের ফলে যৌনাঙ্গ শিথিল হয়ে যায়।লজ্জাবতীর গাছ,পাতা ও শিকড় দ্বারা তৈল করে কাপরে মেখে পিচু ধারন করলে কয়েক দিনের মধ্যে আরোগ্য হয়।

চর্ম রোগে: লজ্জাবতীর নির্জাস দিনে ২/৩ বার একটু একটু কোরে পান করলে সকল প্রকার চর্ম রোগ ভাল হয়।দেহের লাবন্যতা বৃদ্ধি পায়।

হাত-পা জালা পোড়ায়: লজ্জাবতীর মূল, ডাটা, পাতা সেদ্ধ করে পান করলে শরিলের জালাপোড়া দূর হয়।

অন্ড কোষের পানি জমলে: লজ্জাবতীর পেষ্ট ব্যবহার করুন সেরে যাবে।

কোষ্ঠ কাঠিন্যে: পায়খানা বুলেটের মত শক্ত হয়ে যায় সহজে মল বের হয় না লজ্জাবতীর কাথ ১৫দিন খেলে কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়।

পাথরী রোগে: লজ্জাবতীর শিকড়ের রস কাথ করে নিয়মিত সকাল, সন্ধা পান করলে ১৫দিনে সেরে যাবে।লজ্জাবতী কুষ্ঠ, কফ,রিদরোগ,ঋতুর গোলযোগ, উদরি ইত্যাদি রোগে কার্যকর।

আঁধার যোনি ক্ষতে : এ বিচিত্র রোগটি কৃষ্ণপক্ষে বেড়ে যায় আর শুক্লপক্ষে শুকাতে থাকে । এ ক্ষতটি হয় সাধারণত : হাটুর নিচে আর না হয় কুঁচকির দু’ধারে। এক্ষেত্রে গাছও পাতা ( মূল বাদে ) ১০ গ্রাম শুধু জল দিয়ে ক্বাথ করে খেতে হয় এবং ঐ ক্বাথ দিয়ে মুছতে হয়, ফলে অসুবিধা দুর হয়।

 লজ্জাবতীর ফুল

রমনে অতৃপ্তি : কয়েকটি সন্তান হওয়ার পর প্রসবদ্বারের শৈথিল্য হয়েছে , সেটার অনেকটা মেরামত করে দিয়ে থাকে এ লজ্জাবতীর ক্বাথের ডুশ নেওয়ায়, আর গাছের পাতা সিদ্ধ ক্বাথ দিয়ে তৈরি তেলে ন্যাকড়া ভিজিয়ে পিচুধারণ কারালে এছাড়া অন্ডকোষের পানি জমা সারাতে পাতার পেস্ট ব্যবহার করা হয়।

দুর্গন্ধ দুর করতে : অনেকের ঘামে দুর্গন্ধ হয় এবং জামায় বা গেঞ্জিতে হলদে দাগ লাগে, এক্ষেত্রে লজ্জাবতী গাছের ডাঁটা ও পাতার ক্বাথ তৈরি করে বগল ও শরীর মুছতে হবে বা লাগাতে হবে। 

নাড়ী সরে আসায়:বহু সন্তানের জননী অথবা প্রসবের সময় ধাত্রীর অসাবধানতায় নাড়ী সরে এসেছে, উঁচু হয়ে বসতে গেলে অস্বস্তি বোধ, এক্ষেত্রে গাছে মূলে ১০ গ্রাম আন্দাজ গাছপাতা ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে এটা প্রত্যহ সকাল বিকাল ২ বার খেতে হবে। আর ঐভাবে ক্বাথ তৈরী করে ডুস্‌ দেওয়া, এর দ্বারা ওটি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।

হাত পা জ্বালায়: হাত পা জ্বালার সাথে জ্বরও থাকে।এটা সাধারনতঃ বর্ষা ও শরৎকালে পিত্ত বিকারে দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে লজ্জাবতীর সমগ্রাংশ (গাছ মূল পাতা)১০ গ্রাম ৪ কাপ পানিতে সিদ্ধ ক’রে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে এই ক্বাথটা খেলে ঋতুগত পিত্ত বিকারে ও তজ্জনিত উপসর্গের উপসম হয়।

গর্ভধারণের প্রাথমিক ১০ লক্ষণ
ঘর থেকে টিকটিকি তাড়াবেন যেভাবে
পানিফলের পুষ্টি ও ভেষজগুণ-water caltrop benefits
কালমেঘ পাতার ১৫ টি উপকারিতা
মারহাটিটিগা গাছ ও ফুলের গুনাগুন
জয়ন্তী বৃক্ষের ভেষজ গুণাগুণ
লেটুস পাতার উপকারিতা
জলাতঙ্কের লক্ষণ ও প্রতিকার
মেয়েদের জন্য সেরা ১০টি বডি স্প্রে
মাটির বিস্কুট ‘ছিকর’