পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার
Causes and Remedies for Ankle Cracks

পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার

পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া একটি বিব্রতকর সমস্যা। শুষ্ক মৌসুম ও আর্দ্রতার ঘাটতিতে এ সমস্যা হয়। পা ফাটলে পায়ের গোড়ালিতে যন্ত্রণা হতে থাকে। দীর্ঘদিন পা ফাটা থাকলে ইনফেকশন হতে পারে, পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়, পা ফুলে যায় এবং দৈনন্দিন চলাফেরা ব্যাহত হয়। 

পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ

১. যাদের গোড়ালির চারপাশের ত্বক শুষ্ক।

2.যাদের গোড়ালির ত্বক একটু মোটা।

৩. দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় যাদের।

৪. অতিরিক্ত ওজন হলে।

৫. জুতোর পেছনের অংশ খোলা হলে পা ছড়িয়ে পড়ে এবং গোড়ালিতে চাপ পড়ে পা ফেটে যায়।

৬. বয়স বাড়ার কারণে ত্বকের পরিবর্তনে।

৭. দীর্ঘক্ষণ ভেজা পরিবেশে থাকলে বা স্যাঁতস্যাঁতে বাথরুম এ থাকলে।

৮. জুতোর সাইজ ঠিক না হলে।

৯. কিছু রোগের কারণে হতে পারে। যেমন – সোরিয়াসিস, অ্যাথলেট’স ফুট, একজিমা, থাইরয়েড ডিজিজ, ডায়াবেটিস।

১০. অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

১১. ভিটামিন, মিনারেলস এবং জিঙ্ক এর অভাব হলে।

১২. শুষ্ক জলবায়ু।

১৩. নিষ্ক্রিয় ঘর্মগ্রন্থি।

উপরের কারণগুলোর সাথে কিছু রোগের কারণেও পা ফেটে যেতে পারে। যেমন-

পামোপ্ল্যান্টার কেরাটোডার্মা (palmo planter keratoderma): এটি এক ধরনের জিনবাহিত রোগ। এক্ষেত্রে রোগীর ত্বক পুরু হয়। মোটা ও পুরু চামড়া সংগত কারণেই খসখসে ও শক্ত হতে থাকে যা পরে ফেটে যায়। ফাটা স্থান দিয়ে নানা জীবাণু ঢুকে হতে পারে মারাত্মক প্রদাহ বা ইনফেকশন। 

সোরিয়াসিস (psoriasis): এটি এক প্রকার অটো ইমিউনো ডিজিজ। এই রোগে হাতে পায়ে চাকা চাকা দাগ হয়ে যায়, চুলকানি, চামড়া ওঠা এ রোগের লক্ষণ। হাত ও পায়ের তালুতে সোরিয়াসিস হলে আক্রান্ত স্থান ফেটে গিয়ে লাল মাংস দেখা যায়। শীতকালে এই ফাটা বেড়ে যায়।

টিরিয়াসিস রুব্রা পাইলারিস (pityriasis rubra pilaris): এটি জিনবাহিত রোগ। এ রোগ যাদের আছে শীতকালে তাদের হাত পা প্রচণ্ড শুষ্ক হয়ে যায় এবং সোরিয়াসিস এর মতোই পা ফেটে যায়।

পায়ের গোড়ালি ফাটার প্রতিকার

১.পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া রোধে সর্বপ্রথম যা করতে হবে তা হলো সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। এবারের পায়ের গোড়ালির অধিক যত্ন নিতে হবে।

২.উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। শীতকাল পার হয়ে গেলেও পায়ের যত্ন নিন। পায়ের জুতা নিয়মিত রোদে দিন। অ্যালার্জির কোনো সমস্যা থাকলে পায়ের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হোন।

৩.সমপরিমাণ গ্লিসারিন ও গোলাপজলের মিশ্রণ পায়ের ফাটা স্থানে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন। এতে পা ফাটা ও ব্যথা কমবে। গ্লিসারিন ত্বক নরম রাখে। অন্য দিকে গোলাপজলে রয়েছে ভিটামিন এ, বি৩, সি, ডি ও ই। আরো রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান।

এ ছাড়া প্রচুর পানি পান করুন। পানি বা পানিজাতীয় খাবার কম খেলে ত্বকের শুষ্কতা ও পা ফাটার মতো সমস্যাগুলো দেখা দেয়।

৪. মধু পায়ের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। এক বালতি হালকা গরম পানিতে এক কাপ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রণ দিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করতে থাকুন । ২০ মিনিট ধরে এই ম্যাসাজ করতে পারেন ।তারপর পা-ঘষার পাথর দিয়ে শক্ত চামড়া ঘষে পরিষ্কার করে দিন।এতে অনেক উপকার পাবেন।

৫. অ্যালোভেরায় বিটামিন এ, সি এবং ই থাকে। এই কারণে ত্বকের জন্য অ্যালো ভেরার জেল খুবই কার্যকরী। হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে, পা-ঘষার পাথর দিয়ে গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করে নিন। তারপর মোটা করে এই জেল লাগান পায়ের তলায়। এরপর মোজা পরে শুতে যান। সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন।

৬. ভ্যাসলিন এর সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে সারা রাত পায়ে লাগিয়ে রাখুন। তবে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর হবে ও পা নরম মিশ্রণ হয়ে যাবে। 

৭. হালকা গরম পানিতে তিন চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। সেই মিশ্রণে পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। ১৫ মিনিট বসে থাকলে পায়ের ত্বক অনেক নমনীয় হবে। এরপর পানি থেকে পা তুলে পা-ঘষার পাথর দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।

৮. অলিভ অয়েল, তিলের তেল, নারকেল তেল, সরষের তেল ও বাদাম তেল পা ফাটার ভালো একটি সমাধান। রাতে যে কোনো একটি ভেজিটেবল তেল লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে পা ফাটা অনেকটাই কমে যাবে।

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ এড়াতে যা করবেন
অরবরই এর উপকারিতা
কুকশিমা গাছ
জামের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য-Nutritious food during pregnancy
বরবটির উপকারিতা
রোজা রেখে মাথাব্যথা হলে যা করবেন - What to do if you have a headache after fasting
মন ভালো রাখার উপায়
ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম
সিগারেট ছাড়ার ১০টি সহজ টিপস - 10 Easy Tips to Quit Cigarettes