কিডনি রোগীর খাবার তালিকা - Kidney patient food list
Kidney Disease Diet

কিডনি রোগীর খাবার তালিকা - Kidney patient food list

আমাদের শরীরে পানি, অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করে কিডনি। পাশাপাশি রক্ত পরিশোধন ও শরীর থেকে দূষিত পদার্থ ছেঁকে বের করে দেয় এই অঙ্গ। গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গের কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। সুস্থ থাকতে এর পাশাপাশি সঠিক ডায়েট ফলো করতে হয়। তবে কিডনি রোগীদের খাবার নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে মানুষের মনে। অনেক কিডনি রোগী অনেক ধরনের খাবার বাদ দেন ও অপুষ্টির শিকার হন।

কিডনি রোগীদের কতটুকু খাবার খেতে হবে এবং পানীয় পান করতে হবে—এটা জানা খুব জরুরি। বিকল হওয়া কিডনি বা বৃক্ক তখন শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো অপসারণ করতে পারে না বিধায় চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শে কিডনিবান্ধব খাবারের দরকার হয়।

সুঠাম স্বাস্থ্যের জন্য খাদ্যের ৬টি উপাদান অপরিহার্য। এগুলো হলো- আমিষ, শর্করা, স্নেহ জাতীয় খাবার, ফল-শাক-সবজী ও পানি, এর পাশাপাশি দুগ্ধজাত খাবার। তবে কিডনি রোগিদের ক্ষেত্রে এর কিছু ব্যতিক্রম ঘটবে।

আরও পড়ুন:  গর্ভাবস্থায় পা ফুলে যাওয়ার কারণ ও করণীয়

কিডনি রোগীর খাদ্য

ক্যালরি : কিডনি রোগীদের সাধারণত ক্যালরির চাহিদা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় বাড়ানো হয়। সাধারত প্রতি কেজি ওজনের জন্য রোগী ভেদে ৩০ থেকে ৩৫ কিলোক্যালরি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

কার্বোহাইড্রেট : কিডনি রোগী মোট ক্যালোরি চাহিদার বেশির ভাগই কার্বোহাইড্রেটের মাধ্যমে পূরণ হয়। খাবারে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ করতে হয় বলে কাবোর্হাইড্রেটকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে শর্করার মাত্রা বিবেচনা করে কার্বোহাইড্রেট হিসাব করা হয়। ভাত, ময়দা, রুটি, চিরা, সুজি , চালের গুঁড়া, চালের রুটি, সাগু, সেমাই ইত্যাদি কিডনি রোগীর জন্য উত্তম কার্বোহাইড্রেট।

প্রোটিন : প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ জরুরি। দীর্ঘ মেয়াদি কিডনি রোগে প্রতি কেজি ওজনের জন্য পয়েন্ট পাঁচ থেকে পয়েন্ট আট গ্রাম প্রোটিন বরাদ্দ করা যেতে পারে। সাধারণত ডাল, বাদাম, কাঁঠালের বিচি, সিমের বিচি ইত্যাদি রোগীকে বর্জন করতে হয়। প্রতিদিনের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা ডিমের সাদা অংশ, মাছ, মুরগির মাংস ও দুধ বা দই ইত্যাদি থেকে হিসাব করে বরাদ্দ করা হয়। গরু, খাসির মাংস, কলিজা, মগজ ইত্যাদি অবশ্যই এড়িয়ে যেতে বলা হয়।

চর্বি : বেশির ভাগ কিডনির রোগীই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে। এ ছাড়া কিডনি রোগীদের যাতে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে না যায়- প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে তাই চর্বির হিসাব যথাযথভাবে করতে হয়। সাধারণত স্যাচুরেটেট বা সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাবার, ফাস্ট ফুড, ডিমের কুসুম এড়িয়ে যেতে হয়। প্রতিদিনের রান্নায় চার চা চামচ (২০ এমএল) তেল ব্যবহার করলে ভালো।

আরও পড়ুন: কিডনি সুস্থ রাখে যেসব খাবার

সবজি : রক্তে পটাশিয়াম, ইউরিক এসিডের মাত্রা, ফসফরাস ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে সবজি হিসাব করা হয়। অতিরিক্ত পিউরিন ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ শাকসবজি, পিচ্ছিল ও গাঢ় লাল রঙের শাক সবজি এড়িয়ে যেতে হবে। কিডনি রোগীদের জন্য চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিংগা ইত্যাদি পানীয় সবজি উপকারী। উপকারী হলেও এগুলোর পরিমাণ মেনে চলাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কাঁচা সবজির সালাদ, সবজি স্যুপ ইত্যাদি কিডনি রোগীদের এড়িয়ে চলতে হয়।

ফল : কিডনি রোগীদের ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হয়। অক্সালিক এসিড, ইউরিক এসিডস, পটাশিয়াম, রক্তচাপ ছাড়াও আরো অনেক কিছু বিবেচনা করে ফল নির্ধারণ করা হয়। তিন চারটি ফল রোগী ভেদে সীমিত আকারে দেয়া হয়। যেমন : আপেল, পাকা পেপে, পেয়ারা ইত্যাদি।

লবণ : লবণ বা সোডিয়াম নিয়ন্ত্রিত পথ্য কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে জরুরি। রক্তচাপ, রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা, ইডিমা বা শরীরের পানির পরিমাপের ওপর ভিত্তি করে লবণের পরিমাপ করা হয়। সাধারণত দুই থেকে পাঁচ গ্রাম লবণ নির্ধারণে করা হয়।

তরল/পানি : কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে তরল নিয়ন্ত্রণ জরুরি। দৈনিক চা, দুধ, পানি সব মিলিয়ে তরলের হিসাব করা হয়। শরীরের ইডিমা, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, সোডিয়ামের মাত্রা, ইজিএসআর- এসবের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে এক থেকে দেড় লিটার, কখনো কখনো দুই লিটার পর্যন্ত তরল বরাদ্দ হয়। অনেকেই অসুস্থ কিডনিকে সুস্থ করার জন্য অতিরিক্ত পানি খান, এটি ভুল।

আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া

কি কি খাওয়া যাবে

যে সব ফল খাওয়া যাবে :(প্রতিদিন যে কোনো এক প্রকারের ফল খাবেন ৫০ – ১০০ গ্রাম )

পেয়ারা ১/২, আপেল ১/২, নাসপাতি ১/২, পাকা পেপে ২-৪ টুকরা, কমলা ১/২, আনারস ২-৪ টুকরা, বেল |

যে সব সবজি খাওয়া যাবে :ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পটল, চালকুমড়া, ডাটা, লাউ, শশা |

যে সব শাক খাওয়া যাবে : ডাটা শাক ,লাউ শাক, কলমি শাক, লাল শাক ৷

যে সব সবজি সিদ্ধ করে পানি ফেলে রান্না করতে হবে : মিষ্টি কুমড়া , আলু , কাঁচা পেপে, কাঁচা কলা, করলা, গাজার, টমেটো, মুলা |

আরও পড়ুন:  কিভাবে কিডনিতে পাথর থেকে মুক্তি পাবেন

কি কি খাওয়া যাবে না

যে সব সবজি বাদ দিতে হবে :সজনে ,ঢেঁড়শ, বরবটি, কচু, মিষ্টি আলু ,পালং শাক, পুঁই শাক, ধনে পাতা |

যে সব ফল খাওয়া যাবে না :কলা ,কামরাঙ্গা, আনার, লেবু, আমরা, বড়োই, পাকা আম, কাঁঠাল |

যেসব খাবার বাদ দিতে হবে : বিভিন্ন প্রকার ডাল, শুকনা ফল ,বাদাম, কাজু বাদাম, খেজুর ও বিচি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে |

ডাবের পানি ও নারিকেলের তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে |

গরু,খাসি, ভেড়া, মহিষ এদের মগজ, কলিজা, মাংস, সামুদ্রিক মাছ, সামুদ্রিক মাছের ডিম্, চিংড়ি বাদ দিতে হবে |

লবণের তৈরি যেসব খাবার বাদ দিতে হবে : ( চিপস, আচার, চানাচুর, শুটকি, পনির )

সকল প্রকার ফর্মুলা এর খাদ্য (হরলিক্স,কমপ্লান ),কোমল পানীয় (কোক,সেভনআপ,) |

আরও পড়ুন:  কিডনির কাজ ও কিডনি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

ঠোঁটের চামড়া ওঠার কারণ ও প্রতিকার - Causes and remedies for lip skin
কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - Home Remedies for Kidney Disease
মাখনা ফলের উপকারিতা-Benefits of Foxnut fruit
নিম গাছের উপকারিতা
লিচুর উপকারিতা
কুলেখারা পাতার ১৫টি উপকারিতা
ভাঁট গাছের উপকারিতা
ঢেঁড়সের পুষ্টিগুণ
রোজমেরি হেয়ার অয়েলের উপকারিতা
পুরুষদের জন্য সেরা ১০টি পারফিউম
মেকআপ করার নিয়ম - Makeup rules