চরফ্যাসনে টানা ৪দিন বিদ্যুতের ভেলকিবাজি নিকট অতীতের যে কোন সময়ের সহ্যসীমা অতিক্রম করেছে। বিদ্যুতের এই অসহ্যভোগান্তিতে জনবিস্ফোরণের আশংকা বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গ্রাহকরা কথ্য-অকথ্য ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। চলতি বিদ্যুৎ ভোগন্তিতে গ্রাহকের ক্ষোভ বিক্ষোভে রুপ নিতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যদিও বিদ্যুতের অব্যহত এই বিপর্যয়ের মধ্যেও কর্তৃপক্ষ নিরব নির্বিকার আছেন বলে গ্রহকরা অভিযোগ করছেন।
সামন্য ঝড়-বৃষ্টিতেই বিদ্যুৎ না থাকা এখানে স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্ত ইদানিং আকাশে মেঘ উঠতেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সাংস্কৃতি চালু হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকলে সংশ্লিস্ট বিদ্যুৎবিভাগের দায়িত্বশীলদের মোবাইল ফোনও বন্ধ হয়ে যায়।ফলে বিদ্যুৎ নিয়ে ধোঁয়া আর ভোগান্তির মধ্যে আছেন উপজেলার ৯০ হাজার গ্রাহক। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের এই ধারাবাহিকতার ফলে স্বাভাবিক উৎপাদন নেই ২৭টি বরফ মিলে।হাট-বাজার কেন্দ্রীক ছোট কারখানাগুলোর উৎপাদনের চাঁকাও থমকে যাওয়ায় শ্রমিকের হাতগুলো বেকার হয়ে আছে। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষগুলো পড়ছে বেকায়দায়।
চরফ্যাসন পল্লী বিদ্যুৎ এবং ওয়েস্টার্ন জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানাযায়, চরফ্যাসনে ৩টি সাব-ষ্টেশনের আওয়াতায় পৌর এলাকায় ৯ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ওয়েস্টার্ন জোন এবং পল্লী গ্রামের ৮০হাজার গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিচ্ছেন পল্লীবিদুৎ কর্তৃপক্ষ। এখানে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ২৮ মেঘাওয়াট। কিন্তু সাব-ষ্টেশনের সংকটের কারণে বিদ্যুৎ বিতরণ হয় ২১ মেগাওয়ার্ড। প্রতি ৩ ঘন্টা পরপর ২ ঘন্টা হিসেবে প্রাপ্ত এই সীমিত বিদ্যুৎ দিয়ে প্রায় ৯০ হাজারের অধিক গ্রাহকের ক্ষোভ প্রশোমনের চেষ্টা চলছে।
ক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, গত ৭ দিন ধরে চরফ্যাসনের বিদ্যুৎ বিপর্যয় অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে নড়েবড়ে অবস্থার মধ্যে আছে। আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। গত ৪ দিনে টানা বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বেহাল দশায় গ্রাহকরা ক্ষুদ্ধ ত্যক্ত বিরক্ত। কিন্ত বিপর্যয়ের এই সময়েও বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে স্পষ্ট কোন বক্তব্য মিলছে না। বিপর্যয় চলমান থাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা কোন ফোন রিসিভ করছেন না। অফিসেও সময় দিচ্ছেন না। এদিকে বিদ্যুতের চলমান লুকোচুরির খেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রাহকরা ইতিমধ্যেই প্রতিবাদ জানানোর প্রস্ততি নিতে শুরু করেছে। চরফ্যাসন সদর , শশীভূষণ, দক্ষিণ আইচা, দুলারহাট এবং আনজুরহাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকার গ্রাহকরা জোটবদ্ধ হয়ে সভা-সমাবেশ করেছে বলে জানাগেছে। গ্রাহকদের এই প্রতিবাদ সহিংস হয়ে উঠতে পারে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে আভাস পাওয়া গেছে। গ্রাহক শহিদুল ইসলাম জামাল অভিযোগ করেন - কয়েক দিন আগে যেদিন দেশে রেকর্ড পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে, সেদিনও চরফ্যাসনে বিদ্যুৎ ছিলনা। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্যই বিদ্যুৎ বিতরণে সমস্যা বলে দাবি করছেন তিনি। যা গ্রাহকদের বিক্ষুদ্ধ ও সহিংস করে তুলতে পারে।
পল্লি বিদ্যুতের এজিএম মো. মহিন উদ্দিন জানান, ৩৩ কেভি লাইনে সমস্যার কারনে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গ্রাহকের ক্ষোভ প্রশোমনের চেষ্টা চলছে।