আমরুল শাকের উপকারিতা ও ঔষদি গুণাগুণ
আমরুল শাক Oxalidaceae পরিবারভুক্ত গুল্মজাতীয় এক ধরনের লতানো উদ্ভিদ। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। চুকা শাক, টক পাতা, চ্যাংদোলা, চুকত্রিপাতিসহ নানা নামে পরিচিত আমরুল শাক।
আমরুল শাকের পাতা তিনটি অংশে বিভক্ত। এর কাণ্ড ও পাতা সবুজ। পাতার প্রতিটি অংশ লাভ আকৃতির। এর কাণ্ড এক থেকে দেড় ইঞ্চি লম্বা হয়। এর পাতা ও কাণ্ড নরম ও রসালো প্রকৃতির হয়ে থাকে। আমরুল শাকের ফুল দেখতে হলুদ রঙের। এর ফুল আকারে অনেক ছোট। ফুলের ভেতর পাঁচটি পাপড়ি থাকে। এ ছাড়া একটি পুংকেশর নিয়ে ফুলের মধ্যভাগ গঠিত। ফুলের ভেতর অসংখ্য পুষ্পরেণু থাকে, যা এদের বংশবিস্তারে সাহায্য করে।
অন্যান্য নাম: অম্লিকা, আংবতী, আমরুক, আমরু, আমরুল, আমরুল শাক, আমবলি, অম্বলী শাক, আম্বিলী শাক, ক্ষুদ্রাম্লী, চতুশ্ছদা, চাঙ্গেরী, আম্ররোলিকা, চুকাত্রিপাতি, চুকা শাক, চুক্রা, চুত্রিকা, চৌপতিয়া, চ্যাংদোলা প্রভৃতি নামে পরিচিত।
ইংরেজি নাম: creeping woodsorrel বা procumbent yellow-sorrel বা sleeping beauty
বৈজ্ঞানিক নাম: Oxalis corniculata
ঔষদি গুণাগুণ
১.বাচ্চাদের বুকে মাঝে মাঝেই এমনভাবে সর্দি বসে যায় যে বহু চেষ্টাতেও বুক পরিষ্কার হয় না। সঙ্গে যদি কাশিও থাকে, তবে একবেলা অথবা প্রয়োজন বোধে দুবেলা আমরম্নলের রস এক চা চামচ পরিমাণে সামান্য গরম করে শিশুকে খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।
২.মূত্রগ্রহ রোগ হলে- অর্থাৎ প্রস্রাবের বেগ হয় কিন্তু হয় না। অনেক ক্ষেত্রে অপারেশনের দরকার হয়। এরুপ ক্ষেত্রে আমরুল পাতার রস দুই চা চামচ করে প্রতিদিন চার বার আধা কাপ পানি মিশিয়ে খেলে ওই অসুবিধা সেরে যায়।
৩.আমরুল শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' আছে। আমরুল শাক ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ও পেট পরিষ্কার রাখতে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
৪.গায়ে চুলকানি অনেক সময় পাঁচড়া হয়ে যায়। মনে হয় যেন দাদ হয়েছে। এমন ক্ষেত্রে আমরুল পাতার রস গায়ে মাখলে উপশম হয়।
৫.আমরুল জ্বর নাশক। জ্বর চিকিৎসায়, আমাশয় এবং স্কার্ভি রোগে ব্যবহৃত ওষুধের অন্যতম ভেষজরুপে আমরুল পরিচিত।
৬.কোন স্থানে ফোঁড়ায় যন্ত্রণা হলে আমরুলের পাতা বেটে প্রলেপ দিলে যন্ত্রণা লাঘব হয়। পাতা গরম জলে বেটে ফোঁটায় পুলটিস দিলে ফোঁড়া ফেটে যায়।
৭.বিছা কামড়ালে আমরুলের পাতার পাতার রস যন্তণা লাঘব করে, পাতা হতে রগড়ে নিয়ে বেদনার স্থানে প্রলেপ দিলে প্রদাহ ও যন্ত্রণা কমে যায়।
৮.পুরাতন আমাশয় রোগে মাখন তোলা দুধের সঙ্গে আমরুল পাতা সিদ্ধ করে দিনে দুই থেকে তিন বার খেলে বিশেস উপকার হয়।
৯.মুখের দুর্গন্ধনাশে ও দন্ত শোধনের জন্য আমরুল ব্যবহৃত হয়।
১০.আমরুল পাতার রস অল্প চিনির সঙ্গে মিশিয়ে সরবতের মত খেলে আমাশয় রোগজনিত পিপাসার শান্তি হয়।