কুঁচ লতার ভেষজ গুণাগুণ - Herbal properties of  jequirity
jequirity

কুঁচ লতার ঔষধি গুণাগুণ

আমাদের দেশে দুই ধরনের রক্তকুঁচ দেখতে পাওয়া যায় এর ভেতর শ্বেতকুঁচ আর রক্তকুঁচ। এই দুটির ভিতর রক্তকুচ সবচেয়ে বেশি দেখা যায় । কুঁচ হচ্ছে এক প্রকারের লেগিউম জাতীয় উদ্ভিদ। এই গাছটি মূলত পরগাছা কাষ্ঠল লতাজাতীয় গুল্ম। শীতের পর পাতা ঝরে যায়। পাতা ডিম্বাকার বা আয়তাকার। এর শাখা নরম, ৫-৭ সেন্টিমিটার লম্বা। একদণ্ডের দু'ধারে ১০-২০ জোড়া পত্রক পরপর বিপরীত দিকে সাজানো থাকে এবং দেখতে সুন্দর। পুষ্পদণ্ডে ঘন ঘন অনেক ফুল জন্মে। ফুল রক্তাভ, গোলাপি বা শ্বেত বর্ণের হয়। ফল শিমের মতো। ফল পাকার কিছুদিন পরে শুকিয়ে ফেটে যায় এবং বীজ চোখে পড়ে। প্রায় মোটর দানার মতো গোলাকার ও লাল টুকটুকে বীজে গোলাকার কালো দাগ থাকে। সব বীজ একই ওজন ও আয়তনের হয়। লাল কুঁচের মুখটি কালো রঙের আষাঢ়-ভাদ্র মাসে ফুল ফুটে এবং অগ্রহায়ণ-মাঘ মাসে ফল পাকলে বীজ সংগ্রহ করা হয়। ফলের নাম রতি ফল। এর আরেক নাম সোনাকুঁড়ি।

বাংলাদেশে এর আঞ্চলিক নামগুলো হচ্ছে: রতি, রত্তি, কুঁচ, কইচ গোটা। কুঁচের আরও যেসব নাম আছে সেগুলো হচ্ছে চূড়ামনি, শাঙ্গুষ্ঠা, গুঞ্জা, সৌম্যা, শিখন্ডী, কৃষ্ণলা, অরুণা, তাম্রিকা, রক্তিকা, কম্ভোজী, ভিল্লিভূষণা, মাণচূড়া। আর কুঁচের সাদা প্রজাতিটির নাম হচ্ছে শ্বেতগুঞ্জা, ভিরিন্টিকা, কাকাদনী।

ইংরেজি নাম: jequirity, বা Crab's eye, বা rosary pea বা precatory pea or bean

বৈজ্ঞানিক নাম: Abrus precatorius

আদিনিবাস

এ গাছ বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমারসহ গোটা অঞ্চলে পাওয়া যায়।

ভেষজ ব্যবহার

১.মাথাব্যথায় :

মাথাব্যথা হলে সাদা কুঁচফল নিয়ে সেটা গুড়া করে ছেকে নিয়ে নিতে হবে । এরপর এই গুড়া নস্যি মতো করে নিলে মাথার ব্যাথা কমে যাবে ।

২.শিরোরোগ:

দুই কানের পাশ দিয়ে যে শিরা দু’টি বরাবর নেমে গিয়ে বুক পর্যন্ত পৌঁছেছে তাতে যন্ত্রণা হয়। বায়ুপ্রধান হলে এ শিরোরোগ সারাদিন টিপটিপ করে এবং সকাল ও সন্ধ্যায় বাড়ে। মুখের একধারে অথবা গোটা মুখে কালো ছোপ পড়বে অথচ লাল হয়ে থাকবে। কুঁচফলের নস্যি নিলে এ শিরোরোগ সেরে যায়।

৩.বমি আনতে :

বেশি বা বিষাক্ত কিছু খাওয়া হয়ে গেলে যদি বমি আনার দরকার হয় তাহলে কুঁচের মূল ৩-৪ গ্রাম পরিমাণ বেটে এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খেলে বমি হয়ে শান্তি পাওয়া যায় ।

৪.পেটে শূল বেদনায় :

বায়ু, পিত্ত বা শ্লেষ্ম, যেজন্যই হোক পেটে শূলবেদনা হলে কুঁচের পাতা থেঁতলে তার রস ১০ থেকে ১২ ফোঁটা আধকাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে শুলব্যথাটা চলে যায়। কুঁচের পাতা বেটে পেটে প্রলেপ দিলেও ব্যথা কমে।

৫.মাথার টাক পড়লে :

কুঁচ পাতা বেটে নিতে হবে । এবার এটি মাথায় ভালোভাবে প্রলেপ দিলে টাক মাথায় ভালো উপকার পাওয়া যায় ।

৬.গর্ভপাত:

গর্ভপাত ঘটাতে বীজচুর্ণ ব্যবহার করা হয়। সায়েটিকা, অন্ধপ্রদেশের জড়তা দূর করা এবং পক্ষাঘাতে বীজের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়।

৭.চর্মরোগ :

কুঁচ গাছের মূল বেটে রস বার করে নিতে হবে । এরপর এটি ভালো করে গায়ে মাখতে হবে তাহলে চর্মরোগ ভালো হয়ে যাবে ।

৮.ফুস্কুড়ি:

ছোট ছোট ফসকুড়ির সঙ্গে চুলকানি, যা সহজে সারানো যায় না, এমন ক্ষেত্রে কুঁচ ফল বাটা তিল তেলে পাক দিয়ে সে তেল লাগালে চুলকানি সেরে যায়।।

বেড়েলার উপকারিতা
গাঁদা বা গন্ধা ফুলের ভেষজ গুণাবলী - Herbal properties of marigold
মুক্তাঝুরি এর উপকারিতা - Benefits of Indian Acalypha
রামবুটান এর উপকারিতা ও গুণাগুণ
ধুতুরা ফুলের গুনাগুণ
আম আদার ঔষধি গুণাগুণ - Medicinal properties of mango ginger
তুলসী গাছের উপকারিতা
আকরকরা গাছ
ভুঁই আমলার ভেষজ উপকারিতা - Herbal Benefits of gale of the wind
আলকুশী বীজের ১৫টি উপকারিতা