কদম এর উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুন
কদম বা বুল কদম Rubiaceae পরিবারের Neolamarckia গণের বৃক্ষ। যা নীপ নামেও পরিচিত। এ ছাড়া বৃত্তপুষ্প, মেঘাগমপ্রিয়, কর্ণপূরক, ভৃঙ্গবল্লভ, মঞ্জুকেশিনী, পুলকি, সর্ষপ, প্রাবৃষ্য, ললনাপ্রিয়, সুরভি, সিন্ধুপুষ্পও কদমের নাম।
বৈজ্ঞানিক নাম: Anthocephalus indicus
ইংরেজি নাম: burflower tree, laran, Leichhardt pine,,kadam
পরিচিতি
কদম একটি দীর্ঘাকৃতি পাতাঝরা বৃক্ষ, ১৫-২০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। গাছটি দ্রুতবর্ধনশীল। পাতা ডিম্বাকৃতি, বড় উজ্জ্বল সবুজ, লম্বা ১৫-২০ সে.মি. । ফুল ক্ষুদ্রাকার হলুদাভ সাদা, সুগন্ধি। ফল মাংসল ও আকৃতিতে টেনিস বলের মতো। এটি বাদুড় ও কাঠবিড়ালীর প্রিয় কাদ্য। জুন-জুলাই মাসে ফুল ধরে ও পরে ফল হয়। ফল পাকলে কমলা রঙের হয়।
বিস্তৃতি
দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়া কদমের আদি বাসস্থান। বাংলাদেশে সব অঞ্চলে বিশেষ করে নিচু এলাকায় এটি ভালো জন্মে। এই গণে প্রজাতির সংখ্যা ২টি।
ব্যবহার্য অংশ
গাছের বৃদ্ধি অত্যন্ত দ্রুত বলে জ্বালানিকাঠের জন্য রোপণ উত্তম। কাঠ খুবই নরম তাই দারুমুল্য নিকৃষ্ট হলেও সাদা, নরম কাঠ বাক্স-পেটরা ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার্য।
ঔষধি গুনাগুন
১.শিশুদের কৃমির উপদ্রবে:
সাধারণত ৪-৫ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে ২০০ মি.লি. কচি কদম পাতার রস দিনে একবার খাওয়াতে হবে। উপদ্রব না কমলে সকালে-বিকালে দু’বার করে খাওয়ালে সপ্তাহখানেকের মধ্যে উপকার পাওয়া যাবে। বয়স অনুপাতে পাতার রসের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
২.মুখের দূর্গন্ধ সরাতে:
মুখের দুর্গন্ধ সরাতে কদম ফুল কুঁচিয়ে পানিতে সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে কুলকুচা করতে হবে। এতে দুর্গন্ধ দূর হবে।
৩. টিউমারের ব্যাথা উপশমে :
কদমের কচি ছার চন্দনের মতো বেটে সাধ্যমতো গরম করে টিউমার প্রলেপ দিলে ফোলা ও ব্যথা দুয়েরই উপশম হয় বলে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকগণ দাবি করেন।
৪.চক্ষু প্রদাহ উপশমে:
কদম ছালের গুঁড়া, অফিম ও ফিটকিরি সমপরিমাণ মিশিয়ে চোখের চারদিকে প্রলেপ দিলে চক্ষু প্রদাহ দূর হয় ।
৫.পিপাসা দূরীকরনে:
প্রবল জ্বরে পিপাসাও প্রবল হয়ে থাকে। এমন অবস্থায় কদম ফলের রস খাওয়ালে পিপাসা দূর হয়।
৬. মুখের ক্ষত কমাতে :
মুখে ঘা বা ক্ষত হলে কদম পাতার ক্বাথ মুখে নিয়ে কুলি করলে সেরে যাবে। পচা ঘা বা ক্ষত ট্যানিনের সংস্পর্শে এলে ক্ষত কোষ অধঃক্ষেপিত হয়ে পাতলা আবরণের সৃষ্টি করে ও ক্ষত সারিয়ে তোলে।
৭.ম্যালেরিয়া চিকিৎসায়:
কদমে কুেইনোভিক এসিড(quinovic acid)এবং সিনকোট্যানিক এসিড (cinchotannic acid) থাকার জন্য এটি ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
৮.কোষ বৃদ্ধিতে:
অনেকেই কদম পাতা দিয়ে বাধা হয়ে থাকেন।কারন গাছের ছাল বেটে ত্বকে লাগিয়ে ,কদম পাতা দিয়ে বাধা হয়ে থাকলে, ত্বকের বৃদ্ধি অর্থাৎ ফোলা কমে যায়।
৯.শিশুর বমি কমাতে:
কদমের ত্বকের রস জরাচূর্ন ওচিনির সাথে মিশিয়ে খেলে বমি নিবারিত হয়।
১০.শক্তি বৃদ্ধি:
কদম ছালের রস জ্বর নাশক ও বল বৃদ্ধিকারক।