ফণীমনসার উপকারিতা,ভেষজগুণ ও ব্যবহার
ফণীমনসা কাঁটাময় ক্যাকটাস। ১ থেকে ৩ মিটার লম্বা হয়। কাণ্ড নেই অথবা থাকলেও খুবই খাটো। চ্যাপ্টা আকৃতির পাতার মতো রসাল অঙ্গ থাকে। কাঁটাওয়ালা এ চ্যাপ্টা অংশকে বলা হয় এরিওল। প্রতি এরিওলে অনেকগুলো কাঁটা গুচ্ছময়ভাবে সন্নিবেশিত থাকে। কাঁটার রং হলুদ। প্রতি এরিওলে খুদে পাতা (৪ থেকে ৬ মিলিমিটার) থাকে, যা কিছুদিনের মধ্যেই ঝরে যায়। গ্রীষ্মে এরিওল অংশে ছোট ছোট ফুলের কুঁড়ি আসে। কুঁড়ি পূর্ণতা পেলে তাতে উজ্জ্বল হলুদ রঙের মাঝারি আকৃতির ফুল ধরে। ফুলের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮ সেন্টিমিটার। প্রতিটি ফুলে অসংখ্য পুংকেশর থাকে। ফল পাকলে বেগুনি বর্ণের হয়। ফল বহুবীজী। শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবেও লাগানো হয়।
বৈজ্ঞানিক নাম: Opuntia dillenii
ইংরেজি নাম: Prickly pear
ভেষজ গুণাগুণ
১.ফণীমনসা গাছ হাড়ের জন্য খুবই উপকারি। এতে ক্যালসিয়াম ছাড়াও আরও অনেক উপকারি পদার্থও থাকে। এই সমস্ত পদার্থ হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা পুনরায় সারিয়ে তুলতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
২.ফণীমনসা গাছের রস পোড়া ক্ষত স্থানে লাগালে ক্ষত দ্রুত ভালো হয়।
৩.ফণীমনসায় উপকারী খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। যা ডায়াবেটিস ও উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর জন্য এটা কার্যকর।
৪.ফণীমনসাতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা অনিদ্রা, দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা দূর করতে সাহায্য করে এবং এই রোগগ্রস্ত মানুষের শরীরে সেরাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে মানুষের নিদ্রা বৃদ্ধি করে এবং মানুষ-কে চিন্তামুক্ত থাকতে সাহায্য করে।
৫.ফণীমনসা গাছে উচ্চমাত্রার আঁশ থাকে যা রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া রক্তচাপও কমিয়ে দেয়।
৬.ফণীমনসা গাছে উচ্চমাত্রার আঁশ কার্বোহাইড্রেট থাকে, যার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।
৭.ফণীমনসা গাছের রস শরবত বানিয়ে খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮.ফণীমনসার গাছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোকেমিকেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ থাকে। এই বিশেষ বিষয়গুলি বয়স্ক মানুষের কাছে খুব উপকারি, এটি বয়স্ক মানুষের কাছে রক্ষাকবচ। এছাড়া মানুষের ত্বকে সেলুলার এফেক্ট থেকে যায় যা কিনা আপনার ত্বককে খারাপ করে দেয়, ফণীমনসার রস সেই খারাপ ত্বকের সমস্যা মেটাতে সাহায্য করে।
৯.ফণীমনসা-এর পাতা থেকে নির্গত রস শরীরের ফোলাভাব কমানোর একটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, আপনার গাঁটের ফোলা, জয়েন্ট পেইন, মাংসপেশী ফোলা কমিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে এই গাছের জুড়ি মেলা ভার। এই গাছের রস আপনার ফোলা জায়গায় লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ব্যথার উপশম হয়ে থাকে এবং ফোলাভাবও কমে যায়।
১০.ফণীমনসায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও সোডিয়াম আছে, যা আপনার মাংসপেশির ব্যথা, কোষের কাজকারবার ঠিকঠাক রাখে।
১১.ফণীমনসায় পানির পরিমাণ অনেকখানি, তাই এর শরবত বানিয়ে খেলে পানির অভাব দূর হয়।
১২.এক গ্লাস ফণীমনসার জুস খেলে মাথা ব্যথা ভালো হয়।