ঘেটকচু খাওয়ার উপকারিতা
ঘেট কচু বা খারকোন Araceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। অন্যান্য স্থানীয় নাম: ঘের কচু,ঘেটওল,ঘেটকোল,খারকান, খারকন, খানমান ইত্যাদি। রংপুর অঞ্চলে এটি চামঘাস নামেও পরিচিত। আদিবাসি চাকমা সম্প্রদায় খারকন কে খারবাস, খারাকেও, গাড়ো সম্প্রদায় কালমান বলে।
বৈজ্ঞানিক নাম: Typhonium trilobatum
ঘেটকচু
ঘেট কচু শাকের গাছের ডাটা লম্বা হয়। পাতা গাড় সবুজ রং। ডাটার রং কিছুটা খয়েরি। পাতা দেখতে তিন কোনা খাজ কাটা হয়। লাল রং এর ফুল হয়।ফুল দেখতে অনেকটা কলমের মত।
বিসাতৃতি
চট্টগ্রাম,পার্বত্য চট্টগ্রাম,টাংগাইল,সিলেট এবং ঢাকায় এই শাক পাওয়া যায়।
ঘেটকচুর ব্যবহার
শাক হিসেবে খায়: এই শাকের ডাটাসহ পাতা রসুন কালোজিরা,শুকনা মরিচ ভেজে পাটায় বেটে ভর্তা করে খাওয়া হয়। অনেক এলাকায় খুদের ভাতের সাথে এই শাকের ভর্তা খেতে খুব পছন্দ করে। এছাড়া অনেকে এটির ডাটা ছোট ছোট করে কেটে ভেজে শুঁটকি মাছ দিয়ে রান্না করে খায়। তবে ভাতের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার সময় লেবু বা তেঁতুল মিশিয়ে খেলে গলা চুলকানোর ভয় থাকে না।
এছাড়াও কুচিকুচি করে কেটে রসুন, পেয়াজ, তেল ইত্যাদি দিয়ে দীর্ঘক্ষণ অল্পতাপে জ্বাল দিয়ে শাক হিসাবে খাওয়া হয়।
ঘেটকচুর ওষুধি ব্যবহার:
১.কলার সাথে ঘেটকচু খেলে পাকস্থলীর সমস্যা ভাল হয়ে যায়। গরুর শরীরে ঘা হলে গাড়ো সম্প্রদায়ের মানুষ এই শাকের শিকড় মিহি করে বেটে পেষ্ট তৈরি করে সেখানে ব্যবহার করে।
২.রক্তার্শ বা শুষ্কার্শ যাই হোক না কেন, সব অর্শেই কোষ্ঠবদ্ধতা থাকে। এক্ষেত্রে ঘেঁটকচুর কন্দের তরকারি কয়েকদিন ভাতের সঙ্গে খেলে পায়খানা পরিষ্কার হয়ে গিয়ে কষ্টের লাঘব হয়। এটি সেবনে রক্তস্রাবও কমে যায়। বেশ কিছুদিন খেতে পারলে অর্শের বলি ধীরে ধীরে ছোট হতে থাকে।
৩.পেটব্যথা, অবশ্য তা অম্বলের জন্য নয়, এর কারণ হিসেবে দেখা যায় যে,দাস্ত পরিষ্কার হচ্ছে না,পেটে মাঝে মাঝে বায়ু জমে,ক্ষিদেটা ঠিক ঠিক ভাল হয়,তখনি এই ঘেটকচুর ডাটার তরকারি ভাতের সাথে খেলে পেটব্যথা থাকেনা।
৪.যেসব ফোড়া খুবই শক্ত হয়, পাকে না আবার বসেও না, সেক্ষেত্রে এর কন্দ বেটে গরম করে প্রলেপ দিলে ভাল কাজ হয়। দিনে ২ বার করে পর পর কয়েকদিন দিলে অবস্থাটা বোঝা যাবে।
৫.ভীমরুল, বোলতা, মৌমাছি, ভোমরা, বিছা, বিষাক্ত পিপড়া প্রভৃতি হুল ফোটালে যে যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়, সেই যন্ত্রণা কমাবার জন্য যদি ঘেটকচুর মূল বেটে গরম করে লাগানো হয়ে থাকে তাহলে যন্ত্রণা কমে যায়।