চা পাতা ও ফুল-tea leaves and flowers
tea leaves and flowers

চা পাতা ও ফুল

চা গাছ থেকে চা পাতা পাওয়া যায়। চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম: Camellia sinensis। ইংরজিতে চা-এর প্রতিশব্দ হলো টি (tea)। 

প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া অনুসারে চা-কে পাঁচটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যেমন - কালো চা, সবুজ চা, ইষ্টক চা, উলং বা ওলোং চা এবং প্যারাগুয়ে চা। এছাড়াও, সাদা চা, হলুদ চা, পুয়ের চা-সহ আরো বিভিন্ন ধরনের চা রয়েছে। তবে সর্বাধিক পরিচিত ও ব্যবহৃত চা হল সাদা, সবুজ, উলং এবং কাল চা। প্রায় সবরকম চা-ই ক্যামেলিয়া সিনেনসিস থেকে তৈরি হলেও বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুতের কারণে এক এক ধরনের চা এক এক রকম স্বাদযুক্ত। পুয়ের চা একধরনের গাঁজনোত্তর চা যা অনেক ক্ষেত্রে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

নাইট কুইন

চাষ পদ্ধতিঃ

চা প্রধান কান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের ফসল হলেও উপ-ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলেও এটি কিছু কিছু চাষ করা যায়। প্রথম অবস্থায় পাহাড়ের ঢালু জমি পরিষ্কার করা হয়। এর চারা পৃথক বীজতলায় তৈরী করা হয়।

চারাগুলো যখন ২০ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয়, তখন সেগুলোকে চা-বাগানে সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হয়। সাধারণতঃ দেড় মিটার পরপর চারাগুলোকে রোপণ করা হয়ে থাকে। এরপর গাছগুলোকে বৃদ্ধির জন্য যথামাত্রায় সার প্রয়োগ ও পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হয়। এভাবে দুই থেকে তিন বছর পরিচর্যার পর পাতা সংগ্রহের উপযোগী করে তোলা হয়। কিন্তু গাছগুলো পাঁচ বছর না হওয়া পর্যন্ত যথাযথভাবে পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে না। একটি চা গাছ গড়পড়তা ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত উৎপাদনের উপযোগী থাকে। তারপর পুনরায় নতুন গাছ রোপণ করতে হয়।

দাঁতরাঙা বা বন তেজপাতা

গুণাগুনঃ

চীনজাতীয় গাছের পাতা স্বাদ ও গন্ধের জন্য সুখ্যাত। কিন্তু আসামজাতীয় গাছের পাতা রঙের জন্য বিখ্যাত। এই দুই ধরনের চা-পাতার উন্নত সংমিশ্রণের উপরই এর গুণাগুন নির্ভর করে। স্বভাবতঃই চা মিশ্রণ একটি নিপুণতা ও অত্যন্ত কঠিন কাজ। তাই এটি অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদনা করতে হয়। এরূপভাবে চা মিশ্রণে নৈপুণ্যের লাভের প্রেক্ষাপটে লিপটন, ব্রুকবণ্ড প্রভৃতি চা প্রস্তুতকারক কোম্পানী বিশ্ববাজার দখল ও খ্যাতি লাভ করেছে। উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের চা স্বাদে গন্ধে বিশ্বখ্যাত।

ক্যারট গ্রাস বা পার্থেনিয়াম

লান্টানা বা পুটুস

চা-ফুল দেখতে অবিকল ক্যামেলিয়া ফুলের মতো, দুধসাদা রঙের পাপড়ি মেলে ফুটে আছে। ফুলে পাঁচ-সাতটা পাপড়ি, ফুলের পাপড়ির বিস্তার প্রায় তিন থেকে চার সেন্টিমিটার। ডালের গা ঘেঁষে তিন-চারটা ফুল থোকা ধরে ফুটে আছে। ফুলের মধ্যখানে হলদে রঙের পরাগকেশর আর গর্ভমূল রচনা করেছে স্বর্ণঝুমকার পটচিত্র। সেখানে খেলা করছে খুদে মৌমাছির দল।

সাধারণত চা-গাছে ফুল ফোটা শুরু হয় হেমন্ত থেকে, অক্টোবরের পরে। ফুল ফুটতে থাকে শীতকালজুড়ে। চা-গাছ বাঁচে ৩০ থেকে ৫০ বছর। ফুল ফোটা শুরু হয় বছর সাতেক বয়স থেকে। ফুল উভলিঙ্গী, মৌমাছিরা পরাগায়ন ঘটিয়ে ফল তৈরি করে। চা-গাছের ফল, সে আরেক অদ্ভুত জিনিস। ফল পাকতে অনেক সময় লাগে। ফল থেকে চারা হয়, আবার ফল ভাঙিয়ে তেল বের করা যায়। তেল সুগন্ধযুক্ত ও সুমিষ্ট। এ তেল দিয়ে রান্না করলে আলাদা স্বাদ আসে।

একুশ শতকে বাংলাদেশ অরগ্যানিক টী পঞ্চগড়ে চা উৎপাদন করা শুরু করেছে। এর উৎপাদক কাজী এন্ড কাজী। এছাড়াও, পঞ্চগড়ে ময়নাগুড়ি টি এস্টেট, কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট, টিটিসিএল চা বাগান রয়েছে।

বনগাঁদা বা একমেলা

সুষমা, বিচিত্রা গাছ

চা-পাতার উপকারিতাঃ

১.চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী।

২.চা পাতায় তে রয়েছে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩.কফির তুলনায় চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ কম থাকার কারণে চা পান করলে কফির তুলনায় কম ক্ষতি হয়। তাই চা-পান করাই উত্তম।

৪.লিকার চায়ে এমন কিছু এনজাইম থাকে, যা হার্টে রক্ত সরবরাহ বাড়িয়ে দিয়ে হৃদপিন্ডকে সুস্থ রাখে। তাই তো চিকিৎসকেরা দিনে কম করে দুবার লিকার চা খাওয়ার পরামর্শ দেন।

৫.পুষ্টিগুণ সামান্য হলেও এতে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যেমন- পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যাটেচিন। পলিফেনলস এবং ক্যাটেচিন ফ্রি রেডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয় এবং কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

৬.চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৭.পোকামাকড় কামড়ালে যদি ঐ স্থান চুলকায় ও ফুলে যায় তাহলে সবুজ চায়ের পাতা দিয়ে ঢেকে দিলে আরাম বোধ হয়। রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।

৮.নিয়মিত সবুজ চা পান করলে কিডনি রোগের জন্য উপকারী। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।

৯.গ্রিন টি তুলনামূলক ভালো, কারণ এটা চা-পাতা শুধু ভাপে সেদ্ধ করে শুকিয়ে তৈরি করা হয়।

১০.চা রক্তে কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের জন্যও উপকারী। চায়ের লিকার দাঁতের ক্ষয়রোধ ও মাড়ি শক্ত করে। কাটা জায়গায় গ্রিন টির লিকার লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। নিয়মিত চা পানে রক্ত চলাচল ভাল হয়৷ পেট পরিষ্কার রাখে আর মস্তিষ্ককে রাখে সচল ৷

বৈঁচি ফলের গুণাগুণ
বাক্সবাদাম বা জংলি কাঠবাদাম-bastard poon tree
লান্টানা বা পুটুস-Lantana
তেলাকুচা গাছের গুনাগুন
শতমূলের উপকারিতা ও ঔষদি গুণ
স্বর্ণলতার ভেষজ উপকারিতা
পুঁই শাকের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
ক্যাজুপুট বা কাজুপুট ভেষজ গুণাগুণ - weeping paperbark herbal properties
ঘন্টাপারুল বা ঘন্টাপাটালি গাছের উপকারিতা-Benefits of weaver's beam tree
সোনাপাতার ঔষধি গুণ