হুলাবনকিকার গাছ-Kidney Tea Plant
ইংরেজী নাম: Kidney Tea Plant
বৈজ্ঞানিক নাম: Orthosiphon aristatus
ফুলের রং সাদা ও আকৃতি নলাকার। পাপড়ির চেয়ে পুরুষ কেশরগুলো অনেক লম্বা ও রশ্মির মতো ছড়ানো। গ্রীষ্মকালে ফুল ফোটে। ফুল থেকে ফল হয়। ডাল কেটে লাগালে চারা হয়। এ গাছের শুধু পাতা ভক্ষণযোগ্য, গাছের অন্যান্য অংশ বিষাক্ত।এগুলি হল ভেষজ গুল্ম যার উচ্চতা ১.৫ মিটার। কিছু প্রজাতি তাদের ফুলের কারণে জনপ্রিয় বাগানের উদ্ভিদ।
চাষাবাদঃ
এ গাছ রোদেলা জায়গায় ভালো বাড়ে। তবে কিছুটা ছায়া জায়গাতেও চাষ করা যায়। শুষ্ক জায়গার চেয়ে কিছুটা ভেজা জায়গা হলে গাছ ভালো বাড়ে। নিরপেক্ষ থেকে কিছুটা ক্ষারীয় মাটিতে ভালো জন্মে, তবে মাটি কিছুটা অম্লীয় হলেও গাছের ক্ষতি হয় না। গাছ খরা সইতে পারে। বয়স্ক ডালের ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার অংশ কেটে শাখা কলম করে এর চারা তৈরি করা যায়। ডালের অংশটুকু এমনভাবে নিতে হবে যে অংশে কিছু গিঁট থাকবে। বেড তৈরি করে বা পলিব্যাগে এর চারা তৈরি করা যায়।
বিস্তারঃ
এ গাছের আদিনিবাস আফ্রিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া। চীন, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন, পাপুয়া নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে এ গাছ আছে।
ঔষধি গুণঃ
কিডনির সংক্রমণ, মূত্রথলির সংক্রমণ, মূত্রনালির সংক্রমণ, মূত্রথলির পাথর ইত্যাদি নিরাময়ে এ গাছ ব্যবহার করা হয়।
মূত্রঘটিত বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে এক গ্লাস পানিতে সিকি মুঠো পাতা জ্বাল দিয়ে আধা কাপ থাকতে নামিয়ে তা ঠান্ডা করে দিনে দুবার খেতে হবে। এতে উপকার হবে।
মূত্রথলির পাথর অপসারণে ৯০ গ্রাম হুলাবনকিকার পাতা এক লিটার পানিতে জ্বাল দিয়ে পানি অর্ধেক হলে তা নামিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। তারপর সেই পানি ছেঁকে দিনে একবার খেতে হবে।
এ গাছ কিডনি ও মূত্রথলির নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এজন্য এ গাছের এক নাম কিডনি টি প্লান্ট।
প্রসাবের নানারকম সমস্যায় এ গাছ বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে প্রসাবের প্রবাহ ঠিক রাখতে এ গাছ ব্যবহার করা যায়।
তলপেটে ব্যথা বা প্রস্রাবের জ্বালাযন্ত্রণা হলে নিকুঞ্জ ম্রোং সেই গাছের পাতা তুলে জলে সেদ্ধ করে ছেঁকে সেই জলটা খান। তাতে সমস্যা দূর হয়।
শ্বাসজনিত সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, গেঁটেবাত, স্নায়ুরোগ, দাঁতের সমস্যা, চর্মরোগ, ওজন হ্রাস সমস্যা ইত্যাদিতে এ গাছ কার্যকর।
এ গাছের পাতার রসের ব্যাকটেরিয়া জীবাণু ধ্বংসের ক্ষমতা আছে বলে জানা গেছে।