গাছের বর্ণনাঃ
এটি মধ্যমাকৃতির পত্রমোচী বৃক্ষ। ম্লানধূসর মসৃণ কাণ্ডবিশিষ্ট জারুল ২০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। এর পত্র বৃহৎ, ৬-৮ ইঞ্চি দীর্ঘ, আয়তাকৃতির মসৃণ ও দেখতে গাঢ় সবুজ। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতে এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে মাঝারি আকৃতির এই বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখাময়। এই পাতাঝরা বৃক্ষ শীতকালে পত্রশূণ্য অবস্থায় থাকে।
জারুল ইংরেজি: Giant Crape-myrtle, বৈজ্ঞানিক নাম: Lagerstroemia speciosa বেগুনি জারুলকে বর্ষা-জারুল ও বলে।
পাতাঃ
এর পাতার পিঠের রঙ ঈষৎ ম্লান। এর পত্রবিন্যাস বিপ্রতীপ। মঞ্জরী অনিয়ত, শাখায়িত, বহুপৌষ্পিক ও প্রান্তিক। এর লম্বাটে পাতাগুলো পত্রদণ্ডের বিপরীতে সাজানো থাকে। এর লম্বাটে পাতাগুলো পত্রদণ্ডের বিপরীতে সাজানো থাকে। বসন্তে নতুন গাঢ় সবুজ পাতা গজায়।
ফুলঃ
গ্রীষ্মে ফোটে অসম্ভব সুন্দর বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুল। জারুল ফুলগুলো থাকে শাখার ডগায়, পাতার ওপরের স্তরে। প্রতিটি ফুলের থাকে ছ'টি করে পাঁপড়ি, মাঝখানে পুংকেশরের সাথে যুক্ত হলুদ পরাগকোষ। গ্রীষ্মের শুরুতেই এর ফুল ফোটে এবং শরৎ পর্যন্ত তা দেখা যায়। ফুল ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার চওড়া হয় এবং হালকা সোনালি পুংকেশর থাকে।
ফলঃ
ফল ডিম্বাকার, শক্ত ও বিদারি। বীজ ১ সেন্টিমিটার চওড়া, পাতলা বাদামি রঙ্গের। বীজে থেকেই এর বংশবৃদ্ধি হয়।
জন্মস্থানঃ
জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে জারুলের সন্ধান মেলে।
জারুল কাঠঃ
জারুল কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। ঘরের কড়ি-বরগা, লাঙল, আসবাবপত্র ইত্যাদি বহুবিধ কাজে জারুল কাঠ সুব্যবহৃত।জারুল গাছ থেকে কাঠ করতে চাইলে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ বছর সময় লাগে।
জারুল গাছের উপকারিতা
১.জারুল গাছের পাতা বেটে প্রলেপ দিলে বাত ব্যাথার উপকার পাওয়া যায়।
২.জারুল গাছের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে কাশি ভালো হয়ে যায়।
৩.জারুল গাছের মূল চূর্ণ করে গরম পানির সাথে নিয়মিত রাতে খেলে অনিদ্রা কেটে যায়।
৪.জারুল গাছেল শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি সকাল বিকেল সেবন করলে দ্রুত জ্বর ভালো হয়ে যায় ।
৫.এর বীজ, ছাল ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৬. অজীর্ণতায় জারুল উপকারী।