হলুদ খাওয়ার উপকারিতা ও শত গুণ

রান্নায় হলুদ সাধারণত গুঁড়ো মশলা আকারেই ব্যবহার করা হলেও কাঁচা হলুদও নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। আর কাঁচা হলুদের উপকারিতাও মারাত্মক। আয়ুর্বেদ হলো পাঁচ হাজার বছরের পুরনো বিজ্ঞান, যাকে আমরা এই আধুনিক সময়ে প্রিভেনটিভ সায়েন্স বা ন্যাচারাল সিস্টেম অব মেডিসিন (প্রাকৃতিক ওষুধ) বলে থাকি। আর এই প্রাকৃতিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয়ে আসছে কাঁচা হলুদ।

পুষ্টিগুণঃ

১ টেবিল চামচ হলুদগুঁড়ায় পাওয়া যায় ২৯ ক্যালরি, শূন্য দশমিক ৯১ গ্রাম প্রোটিন, শূন্য দশমিক ৩১ গ্রাম চর্বি, ৬ দশমিক ৩১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২ দশমিক ১ গ্রাম আঁশ ও শূন্য দশমিক ৩ গ্রাম গ্লুকোজ। এ ছাড়া পাওয়া যায় দৈনিক চাহিদার ২৬ শতাংশ ম্যাংগানিজ, ১৬ শতাংশ আয়রন, ৫ শতাংশ পটাশিয়াম, ৩ শতাংশ ভিটামিন সি এবং সামান্য পরিমাণ ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, কপার ও জিংক।

হলুদ খাওয়ার উপকারিতা

১.মুখের রঙ উজ্জ্বল্যেঃ

মুখের লালিত্য বজায় রাখার জন্য মসুর ডাল ও কাঁচা হলুদ বেটে দুধের সর মিশিয়ে মুখে ও হাতে মাখতে হবে। ২ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন এবং ১ মাস ধরে ব্যবহার করুন।

২.ব্রণ নিরাময়েঃ

৩.সকালে খালি পেটে ২ টুকরো কাঁচা হলুদ ও ২টা নিমপাতা একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে ব্রণ সেরে যায়।

৪.কৃমি নাশ করেঃ

১৫-২০ ফোঁটা কাঁচা হলুদের রস ছেঁকে নিয়ে তাতে অল্প লবণ মিশিয়ে সকালে খালিপেটে ৭ দিন খেলেে উপকার পাবেন।

৫.প্রস্রাবের জ্বালাঃ

কাঁচা হলুদের রস ১ চা-চামচ একটু মধু বা চিনি মিশিয়ে ২-৩ সপ্তাহ খেলে প্রস্রাবের জ্বালা কমে যায়।

৬.মচকে গেলেঃ

দেহের কোনো অংশ মচকে গেলে ১ ভাগ লবণ, ২ ভাগ চুন ও ৪ ভাগ হলুদ বাটা একত্রে ভালো করে মিশিয়ে গরম করে চোটের জায়গায় ২-৩ দিন লাগাতে হবে।

৭.ওজন কমায়ঃ

হলুদ নিয়মিত খেলে ওজন কমে আর চিনি জাতীয় খাবার চর্বি আকারে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না। হজমের সমস্যাও দূর করে হলুদ।

৮.লিভার বা যকৃৎ সুরক্ষিত রাখেঃ

১ চামচ কাঁচা হলুদের রস সামান্য চিনি অথবা মধুসহ ১ মাস খেলে লিভার বা যকৃৎ উপশম হবে ।

৯.হাঁপানিতেঃ

হলুদ গুঁড়া ১ চামচ, আখের গুড় ১ চামচ ও খাঁটি সরিষার তেল ১ চামচ একত্রে ভালোভাবে মিশিয়ে খেলে উপশম হয়ে কিছুটা আরাম হয়।

১০.ডায়াবেটিক প্রতিরোধেঃ

হলুদ ও হলুদে থাকা কারকিউমিন অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কাঁচা হলুদ ইনসুলিন হরমোনের ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে ও অগ্ন্যাশয়কে সুস্থ রাখে।

১১.ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ

কাঁচা হলুদের কারকামিন নামক উপাদানের ক্যান্সারনিরোধী ক্ষমতা আছে। কারকামিন টিউমারের কোষকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে বাধা প্রদান করে থাকে। প্রতিদিন অন্তত ২ বা এক টুকরা কাঁচা হলুদ খেলে উপকার পাবেন।

১২.দাঁতের ক্ষয় রোধেঃ

কাঁচা হলুদ দাঁতের ওপরে থাকা এনামেলের আস্তরণকে রক্ষা করে ও দাঁতের ক্ষয় থেকে দাঁতকে বাঁচায়। হলুদের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী থাকায় তা জীবাণুকে থেকেও দাঁতকে রক্ষা করে। 

১৩.সর্দি,কাশিতেঃ 

হলুদে থাকা কারকিউমিন ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দিকাশি কমাতে সাহায্য করে। চা হলুদে থাকা ভিটামিন সি-ও সর্দিকাশি কমাতে সাহায্য করে।

১৪.রক্তচাপ কমাতেঃ

কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন আমাদের রক্তনালীকে উন্মুক্ত করে ও রক্ত চলাচলে বাধাকে দূর করে। ফলে রক্তচাপ কমায়।

১৫.মাথা ব্যথায়ঃ

কাঁচা হলুদ মস্তিস্কে মিউকাস চলাচলকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে সাইনাসের সমস্যা ও অন্যান্য মাথা ধরা ও মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।

কালোজিরার গুনাগুন
কলার উপকারিতা
জয়ন্তী বৃক্ষের ভেষজ গুণাগুণ
কলকাসুন্দার ঔষধি গুণাগুণ
অশ্বগন্ধার উপকারিতা
জবার উপকারিতা ও ঔষধি গুণ
কাঠগোলাপ
আজওয়ান বা আজওয়াইন এর উপকারিতা-Ajwain herb benefits
অনন্তমূল লতার ঔষধি গুণাগুণ
অড়হর ডালের উপকারিতা - Benefits of pigeon pea