যষ্টিমধুর উপকারিতা

পরিচিতি

যষ্টিমধু হচ্ছে গ্লাইসাইররিজা গ্লাবরা গাছের শিকড়। বাংলায় গাছটিকে যষ্টিমধু গাছ বলা হয়ে থাকে। যষ্টিমধু, যাকে সাধারণভাবে মুলেঠি বা লিকোরিস বলা হয় এর বৈজ্ঞানিক নাম Glycyrrhiza Glabra, এবং এটা ফাবাসিয়া গোত্রের অন্তর্গত । ওষধিগুণের জন্য এর শিকড়ই সবথেকে উপকারী । 

বর্ণনা

এটি একটি ভেষজ বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ যা উচ্চতায় ১ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এর পাতাগুলি প্রায় ৭–১৫ সেমি দীর্ঘ। ফুলগুলি ০.৮–১.২ সেমি লম্বা, বেগুনি থেকে ফ্যাকাশে নীল বর্ণের হয়। ফলটি একটি বিভাজক পড, ২–৩ সেমি দীর্ঘ, বেশ কয়েকটি বীজ সমন্বিত। শিকড় স্টলোনিফেরাস হয়।

বিস্তৃতি

এটি লিগিউম জাতীয় বিরুৎ যা মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন অংশে পাওয়া যায়।  বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহে যষ্টিমধু ঔষধি উদ্ভিদ নামে পরিচিত। 

উৎপাদনকারী দেশ

যষ্টিমধু উৎপাদনকারী দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ইরান, ইতালি, আফগানিস্তান, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, পাকিস্তান, ভারত, ইরাক, আজারবাইজান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং তুরস্ক।

যষ্টিমধুর উপকারিতা 

১.চুলের যত্নে

যষ্টিমধু, তিলের তেল ও আমলকি মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয়, খুশকির যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি মেলে।

২.রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

যষ্টিমধু শরীর থেকে ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিকেল দূর করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও উন্নত করে।

৩.ত্বকের জন্য

ত্বকের ফোলা ও চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে যষ্টিমধুর নির্যাস থেকে প্রস্তুত ওষুধ কাজে লাগে। যষ্টিমধু যে ভাবেই ব্যবহার করা হোক না কেন এটি ত্বকের উপকার করে।

৪..দাঁতের স্বাস্থ্য

যষ্টিমধু একটি মাল্টিপারপোজ হার্ব। এটি দাঁত ও মাড়িকেও সুস্থ রাখে। যষ্টিমধুর দু’টি কার্যকর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঠেকাতে পারে। 

৫.অ্যালার্জিতে

অ্যালার্জি দূর করতেও খুবই উপকারী। আবার মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেও এটি কার্যকর।

৬.পুষ্টিজনিত কারণে

পুষ্টিজনিত কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়লে রোজ অল্প পরিমাণে যষ্টিমধু খেলে উপকার পাবেন।

৭.পেটের সমস্যায়

বুকজ্বালা, পাকস্থলীর আলসার, কোলাইটিস, গ্যাস্ট্রাইটিস, পাকস্থলীর ভেতরে প্রদাহ ও পরিপাকতন্ত্রের ওপরে প্রদাহজনিত সমস্যায় যষ্টিমধু ব্যবহার করা হয়। 

৮.আলসার ও জন্ডিসে

যষ্টিমধু আলসার ও জন্ডিসেও খুবই উপকারী। আধ কাপ গরম দুধে এক গ্রাম যষ্টিমধু গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়ে প্রতিদিন সকাল-বিকেল পান করলে উপকার পাবেন।

৯.লিভারের জন্য

লিভারের সুরক্ষাতেও যষ্টিমধু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১০.স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ

মলিকিউলার অ্যান্ড সেলুলার এন্ডোক্রিনোলজি নামক মেডিক্যাল জার্নালের প্রতিবেদনে আছে, এটি ভীষণ ভাবে স্ট্রেস হরমোন করটিসল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

১১.সর্দি-কাশিতে

সর্দি-কাশি-গলাব্যথা দূর করার সঙ্গে সঙ্গে এটা ঠান্ডা লেগে বুকে কফ জমে গেলেও সেই কফ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে যষ্টিমধু।

১২.টিউমার প্রতিরোধক

গ্লাইসিরাইটিনিক অ্যাসিড টিউমার সৃষ্টিকারী ‘এপস্টাইন বার ভাইরাস’ কার্যকারীতা প্রতিহত করে। 

আকনাদির উপকারিতা-Benefits of snake vine
হারিয়ে যাচ্ছে বেতফল-cane fruit benefits
আমের উপকারিতা
দারুচিনির উপকারিতা
পুদিনা পাতার গুণাগুণ ও উপকারিতা
নিশিন্দা গাছের ঔষধি গুন
ঝিঙের পুষ্টিগুণ
ধুতুরা ফুলের গুনাগুণ
অনন্তমূল লতার ঔষধি গুণাগুণ
মাধবীলতার উপকারিতা - Benefits of hiptage