নারিকেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ - Benefits and Nutritional Properties of Coconut
গাঢ় সবুজ রঙের ডাব একদিন পরিপক্ক হয়ে নারিকেল হয়। তখন এর ভেতরের পানি ডাবের মতো মিষ্টি না থাকলেও, পাওয়া যায় মিষ্টি আর রসালো নারিকেল। এই নারিকেল দিয়েই তৈরি হয় দুধ, তেল আরও কত কী! ঝাল থেকে মিষ্টি- সব রকম রান্নায়ই নারিকেল ব্যবহার করা যায়। নারিকেল যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, তেমনই তৈরি করা যায় মজার সব পিঠা, পায়েস, নাড়ু, সন্দেশ ইত্যাদি।
গাছ
নারিকেল, নারকোল, নারকেল বা ডাব পাম গাছের পরিবারের (আরেকেসি) সদস্য ও ""কোকোস"" গণের একমাত্র জীবিত প্রজাতি।[নারকেল গাছ লম্বায় ৩০ মিটার (১০০ ফুট) লম্বা, পাতা ৪-৬ মিটার (১৩-২০ ফুট) লম্বা; পুরানো পাতাগুলি পরিষ্কারভাবে ছিঁড়ে যায়, কাণ্ডটি মসৃণ । উর্বর জমিতে, একটি লম্বা নারকেল গাছে প্রতি বছর ৭৫ টি ফল পাওয়া যায়, তবে প্রায়শই ৩০ টিরও কম ফল পাওয়া যায় ।যথাযথ যত্ন এবং পরিচর্যা দেওয়া হলে, নারকেল ছয় থেকে দশ বছরে প্রথম ফল উৎপাদন করে, শীর্ষে পৌঁছাতে ১৫ থেকে ২০ বছর সময় নেয় ।
ইংরেজি নাম: Coconut
বৈজ্ঞানিক নাম: Cocos nucifera
পুষ্টি গুণ
নারিকেল শাঁসের পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম নারিকেলে আছে ৩৫৪ ক্যালরি, ৩৩ গ্রাম স্নেহ পদার্থ, ২০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৩৫৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ৩.৩ গ্রাম আমিষ। এছাড়াও ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি-৬ ও বি-১২ রয়েছে।
নারিকেলের উপকারিতা
এবার জেনে নেয়া যাক নারিকেল দেহের কি কি উপকারে আসে-
ত্বক কোমল করে
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে নারিকেলের শাঁস। নিয়মিত এই শাঁস খেলে ত্বক কোমল ও সুন্দর হয়। এছাড়াও ত্বকে সহজে বয়স জনিত বলিরেখা পড়েতে দেয় না এই নারিকেল।
চুল ভাল রাখে
চুলে নারিকেল তেল মাখলে ভাল থাকে এটা জানা কথা কিন্তু নিয়মিত নারিকেল শাঁস খেলে মাথায় খুশকি ও শুষ্কতা দূর হয় এবং চুল পড়াও বন্ধ হয়।
শক্তি যোগায়
নারিকেলে অতিরিক্ত ক্যালরি থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে শরীরে শক্তি যোগায়। তাই কাজের মাঝে ক্লান্তি আসলে বা হালকা খিদে পেলে নারিকেল শাঁস খান, সঙ্গে সঙ্গে কর্মউদ্দীপনা জেগে উঠবে।
হার্ট ভালো রাখে
নারিকেল রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে হার্টের সমস্যা দূর করে। এর মধ্যে যে ফ্যাটি এসিড রয়েছে তা কোলেস্টেরল বাড়ায় না বরং আথেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকি কমিয়ে হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে।
ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করে
নারিকেল রক্তের ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ডায়াবেটিসজনিত কারণে শরীরের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে।
ওজন কমায়
নারিকেল অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়তা করে। নারিকেল খুব অল্প ক্যালোরিতেই মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে অল্পক্ষণের মধ্যেই শরীরে শক্তি যোগায়। তাই নারিকেলের শাঁস খেলে সহসা ক্ষুধা লাগে না। সেক্ষেত্রে শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক এই নারিকেল শাঁস।
দাঁত ও হাড় ভালো রাখে
হাড়ের ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে নারিকেল এবং দাঁত ও হাড়ের গঠনেও ভূমিকা রাখে। অস্ট্রিওপোরেসিস, অস্ট্রিও আর্থারাইটিস, যে কোন হাড় সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় নারিকেল শাঁস ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
হজম সহায়ক
হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও এমিনো এসিড শোষণ করে নিতেও সহায়তা করে নারিকেল।
এছাড়া লিভারের অসুখের ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস সি, জন্ডিস ও অন্যান্য লিভারের অসুখে বেশ ভাল কাজ দেয় নারিকেলের দুধ। নিয়মিত নারিকেলের শাঁস খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার ও অন্যানো আরও কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায় অনেকখানি। এই শাঁস ও জল খাওয়া হয় । ডাবের জলে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম থাকে