
গন্ধভাদালি লতা
নামঃ
গন্ধভাদালি বা গাঁদাল বা গন্ধভাদুলি বা গন্ধভাদাল হচ্ছে একটি লতানো গাছ। এই উদ্ভিদটির ইংরেজি নাম skunkvine, stinkvine, এর বৈজ্ঞানিক নাম: Paederia foetida। এটি আমাদের দেশে ভাদালে, গন্ধভাদাল, গন্ধভাদুলী, গন্ধভাদুলিয়া, গাঁদাল বা গন্ধাভাদালি নামে পরিচিত। গ্রামে পরিচিত- গন্ধভাদাইল নামে।
বিস্তৃতিঃ
এই গাছ বাংলাদেশ, ভারতের পূর্বাঞ্চল, আন্দামান নিকোবর দ্বীপ, দক্ষিণ ভুটান, কম্বোডিয়া, মায়ানমার, চীন তাইওয়ানে প্রচুর জন্মে।
বংশবিস্তারঃ
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে গাছে ফুল আসে এবং নভেম্বর – ডিসেম্বর মাসে ফল পাকে। বীজ বা লতার কাটিং এর সাহায্যে এর বংশ বিস্তার সম্ভব হলেও শিকড়সহ লতার অংশবিশেষ তুলে লাগালে চারা হয়।
গন্ধভাদালি লতার উপকারিতা
১.শরীরের কোনো অঙ্গ অবশ হয়ে গেলে গাঁদাল পাতার রস খেলে বা ওই স্থানে গাঁদাল পাতা মালিশ করলে আস্তে আস্তে সচল হয় অঙ্গ
২.কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে এই গাছ বিশেষ উপকারী।
৩.আমাশয় হলে গাঁদাল পাতা বেশ উপকার দেয়। প্রথমে গাঁদাল পাতা বেটে নিন। এরপর ২-৪ চামচ গাঁদাল পাতার রস হালকা গরম করে নিন। তারপর তাতে ৯-১০ ফোঁটা মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন। আমাশয় থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন।
৪.৩ গ্রাম কাঁচা হলুদের সঙ্গে ২ চামচ গাঁদাল পাতার রস মিশিয়ে খেয়ে নিন। দু-একদিনের মধ্যেই অর্শের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
৫.দাঁতের ব্যথায় এর ফল খুব উপকারী।
৬.পাতলা পায়খানা হলে গন্ধভাদালির পাতা বেটে রস করে বড়দের আধ কাপ খাওয়ানো হয় এবং ছোটদের ২ চা, চামুচ দিনে দুইবার খাওয়াত হয়।
৭.এর ডাল ও পাতা পানিতে সিদ্ধ করে ক্বাথ তৈরি করে এর সাথে লবণ মিশিয়ে পান করলে, মুখের রুচি ফিরে আসে।
৮.নিয়মিত এই ক্বাথ সেবন করলে গেঁটে বাত উপশম হয়।গাঁদাল পাতার রসের সঙ্গে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খেলে তা আমবাতের সমস্যাও দূর করে।
৯.মূত্রনালীর কষ্ট দূর করার ক্ষেত্রে গাঁদাল পাতার রসে ৩ থেকে ৪ চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
১০. শিশুদের পেটের অসুখে, পেট ফাঁপায় এর পাতার রস দারুণ কাজ করে।
১১.সর্দি জ্বর হলে গন্ধভাদালির পাতার রস করে খাওয়ালে সর্দি জ্বর কমে যায়।
১২.মাথা ধরা, শরীর ব্যথা, ইনফ্লুয়েঞ্জা সাদৃশ্য লক্ষণে এই পাতার রস খেলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
১৩.শুক্রতারল্যে বা কমে গেলে দুই চা-চামচ পাতার রসের সাথে ঘন গরম দুধ মিশিয়ে খাওয়ার উপদেশ দিয়েছেন প্রাচীন বৈদ্যগোষ্ঠী।
আপনার মতামত লিখুন