ঝিঙের পুষ্টিগুণ
কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন, পটাশিয়াম, চর্বি (ফ্যাট), আঁশ, লোহা, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’, রিবোফ্ল্যাবিন ও নিকোটিনিক অ্যাসিড। এসব উপাদান শরীরের জন্য খুবই দরকারি।
প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী ঝিঙায় পুষ্টি
শর্করা ৪.৩ গ্রাম, আমিষ ১.৮ গ্রাম, জলীয় অংশ (পানি) ৯৫ গ্রাম, খাদ্য শক্তি ৩০ কিলোক্যালরী, খনিজ লবণ, ০.৩ গ্রাম, চর্বি ০.৬ গ্রাম। ভিটামিন এ ৬৭০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ বা থায়ামিন ০.১১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-২ বা রাইবোফ্লাভিন ০.০৪ মিলিগ্রাম, নায়াসিন বা ভিটামিন বি-৬ ০.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৬ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম, আয়রণ ০.৫ মিলিগ্রাম, আঁশ ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন-ই ১.২০ মিলিগ্রাম।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে :
ডায়াবেটিস রোগে যারা আক্রান্ত হয়েছেন যারা তাদের খাবার দাবারের ব্যাপারে বেশ সতর্ক থাকতে হয়। তবে কিছু কিছু খাবার আছে যা ডায়েবেটিস আক্রান্তদের রোগ নিয়ন্ত্রণে বেশ কাজে লাগে। ঝিঙে সেক্ষেত্রে অন্যতম। ঝিঙেতে রয়েছে পেপটাইড এনজাইম নামক একটি উপাদান। এই পেপটাইড এনজাইম রক্তের ইনসুলিনের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। তাই এই মৌসুমে ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ঝিঙে খাওয়ার অভ্যাস ভালো ফল দেবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
লিভার ভালো রাখে :
ঝিঙে লিভার ভালো রাখতে বেশ কাজে দেয়। নিয়মিত ঝিঙের রস খেলে লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে এটি হজমের ক্ষেত্রে বেশ কাজে দেয়। একই সাথে এই সবজিটি মানুষের শরীরের রক্তকেও করে তোলে পরিশুদ্ধ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় :
ঝিঙেকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিকের একটি বড় উৎস হিসেবে ধরা হয়। মানদ দেহের বিষাক্ত সব উপাদান দূর করতে এর জুড়ি মেলা ভার। এছাড়াও এর অ্যান্টিবায়োটিক এর শক্তি ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে। এছাড়া নানা রকম রোগজীবাণুর হাত থেকে শরীরকে বাঁচিয়ে রাখতেও বেশ ভূমিকা পালন করে ঝিঙেতে থাকা অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান।
ওজন কমায় :
যারা বাড়তি ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাদের জন্য ঝিঙে হতে পারে একটি বড় সমাধান। কেননা, এই সবজিটি শরীরের বাড়তি ওজনকে কমিয়ে ফেলতে বেশ সাহায্য করে থাকে। এতে কম পরিমাণে ক্যালোরি থাকাই এর কারণ।
ঝিঙায় আঁশ থাকায় সহজে হজম হয় এবং কোষ্টকঠিন্য (শক্ত পায়খানা) দূর করে।
যারা গ্যাষ্টিকে ভ‚গছেন তারা ঝিঙে খান উপকার পাবেন।
ঝিঙাতে ভিটামিন ই থাকা এটি শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। রক্তের বিদ্যমান এলডিএল লো-ডেনসিটি লাইপ্রোটিন) নামের একপ্রকার ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমায়।
হৃদরোগ ও ষ্টোকের জন্য দায়ী রক্তনালীতে এথোরোস্কেলেরোসিস প্রতিরোধ করে।
মহিলাদের সন্তান ধারণ ক্ষমতা ও পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শরীরে বয়সের চাপ পড়তে দেয় না। ফলে তারুণ্য বজায় থাকে।
তেতো ঝিঙে কৃমি ও অর্শ রোগে বেশ উপকার সাধন করে।
ঝিঙে লতার শিকড় গরুর দুধে বা ঠান্ডা পানিতে ঘষে সকাল বিকাল পরপর তিনদিন খেলে পাথুরী রোগ দূর হয়।
যাদের পেটে বেশী গ্যাস জমা হয় তারা ঝিঙের তরকারী জোল সহ নিয়মিত খান উপকার পাবেন।
তেতো ঝিঙা বেটে দেহের কোন অংশ আঘাত লেগে ফোলে গেলে প্রলেপ দেন কমে যাবে।
শরীরের কোনো অংশে ঘা হলে তেতো ঝিঙের রস লাগালে ঘা কমে যাবে।
যাদের পেটে পানি জমে তারা ঝিঙের তরকারি খান উপকার পাবেন।
কারো বমি বমি ভাব হলে কয়েকটা ঝিঙার পরিপক্ক বীজ বেটে পানির সাথে মিশিয়ে খান উপকার পাবেন।