থানকুনি পাতার উপকারিতা
থানকুনি
থানকুনি পাতার দারুন সব উপকারিতা থানকুনি পাতার পুষ্টিগুন গর্ভাবস্থায় থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা থানকুনি পাতার জুস রূপচর্চায় থানকুনি পাতা

থানকুনি পাতা আমাদের খুব পরিচিত একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ।বৈজ্ঞানিক নাম: Centella asiatica;ইংরেজি: Indian pennywor.থানকুনি পাতার রস রোগ নিরাময়ে অতুলনীয়।প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয় এর ভেষজ গুণ থেকে।থানকুনি অনেক রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।স্বাদটা একটু তিতকুটে, তবে কার্যকরণ বেশ উপকারী।অঞ্চলভেদে এই পাতাটিকে টেয়া, মানকি, তিতুরা, থানকুনি, আদামনি, ঢোলামানিক, থুলকুড়ি, মানামানি, ধুলাবেগুন, আদাগুনগুনি নামে ডাকা হয়।

থানকুনি পাতার উপকারিতা ও কিভাবে খাবেন:

(১)থানকুনি পাতার রস ১ চামচ ও শিউলি পাতার রস ১ চামচ মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে জ্বর প্রতিরোধ করবে।

(২)কোথাও থেঁতলে গেলে থানকুনি গাছ বেটে অল্প গরম করে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে প্রলেপ দিলে উপকার পাবেন।

(৩) চুল পড়ার হার কমাতে আরেকভাবেও থানকুনি পাতাকে কাজে লাগাতে পারেন। কীভাবে? পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা নিয়ে তা থেঁতো করে নিতে হবে। তারপর তার সঙ্গে পরিমাণ মতো তুলসি পাতা এবং আমলা মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। সবশেষে পেস্টটা চুলে লাগিয়ে নিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। ১০ মিনিট পরে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা।এতে চুল পরা বন্ধ হয়ে যাবে।

(৪)যদি মুখ মলিন হয়, লাবণ্যতা কমে যায় তবে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস দুধ দিয়ে খেতে হবে।নিয়মিত খেলে মুখের লাবন্যতা ফিরে আসবে।

(৫)থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খেলে রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানগুলি বেরিয়ে যায়। ফলে একাধিক রোগ দূরে থাকতে বাধ্য হয়।

(৬)প্রতিদিন সকালে ৫/৭টি থানকুনি পাতা চিবিয়ে ৭ দিন খেলে আমাশয় ভালো হয়। থানকুনি পাতা বেটে পাতার রসের সাথে চিনি মিশিয়ে দুই চামচ দিনে দুই বার খেলে আমাশয় ভালো হয়।

(৭)থানকুনি পাতা শরীরে উপস্থিত স্পেয়োনিনস এবং অন্যান্য উপকারি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো এবার থেকে কোথাও কেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে অল্প করে থানকুনি পাতা বেঁটে লাগিয়ে দেবেন।

(৮)থানকুনি পাতায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ যাতে টিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে না।

(৯) থানকুনি পাতায় উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিটা ক্যারোটিন, ফ্য়াটি অ্যাসিড এবং ফাইটোকেমিকাল ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি বলিরেখা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্কিনের ঔজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

(১০) ৪/৫ টি থানকুনি গাছের শিকড়সহ ভালো করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের অসুখ ভালো হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা বেশি কার্যকর।

(১১)২ চামচ থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে অল্প করে চিনি মিশিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে কাশি কমে যায়। আর যদি এক সপ্তাহ খেতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই। সেক্ষেত্রে কাশির কোনও চিহ্নই থাকবে না।

(১২)জ্বরের সময় ১ চামচ থানকুনি এবং ১ চামচ শিউলি পাতার রস মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে অল্প সময়েই জ্বর সেরা যায়। সেই সঙ্গে শারীরিক দুর্বলতাও কমে।

(১৩)প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ৪ চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্তদূষণ দূর হয়।

(১৪)হাফ লিটার দুধে ২৫০ গ্রাম মিশ্রি এবং অল্প পরিমাণে থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে একটা মিশ্রন তৈরি করে ফেলুন। তারপর সেই মিশ্রন থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খাওয়া শুরু করুন। এমনটা এক সপ্তাহ করলেই দেখবেন উপকার মিলবে।

(১৫)থানকুনি পাতা বেটে ঘিয়ের সঙ্গে জ্বাল দিয়ে ঠাণ্ডা করে তা ক্ষত স্থানে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

(১৬)বেগুন/পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে রান্না করে এক মাস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

(১৭)আধা কেজি দুধে ২৫০ গ্রাম মিশ্রি ও ১৭৫ গ্রাম থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে গ্যাস্ট্রিক ভালো হয়।

(১৮)২ চামচ থানকুনির রস সামান্য চিনিসহ খেলে সঙ্গে সঙ্গে খুসখুসে কাশিতে উপকার পাওয়া যায়। ১ সপ্তাহ খেলে পুরোপুরি ভালো হয়ে যাবে।

(১৯)যেসব বাচ্চা কথা বলতে দেরি করে অথবা অস্পষ্ট, সে ক্ষেত্রে ১ চামচ করে থানকুনি পাতার রস গরম করে ঠাণ্ডা হলে ২০/২৫ ফোঁটা মধু মিশিয়ে ঠাণ্ডা দুধের সাথে কিছুদিন খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।

(২০)থানকুনি পাতা বেটে গরম ভাতের সাথে খেলে পেটব্যথা ভালো হয়।

(২১)প্রতিদিন সকালে থানকুনির রস ১ চামচ, ৫/৬ ফোঁটা হলুদের রস সামান্য চিনি ও মধুসহ ১ মাস খেলে লিভারের সমস্যা ভালো হয়।

(২২)ঠাণ্ডায় নাক বন্ধ হলে, সর্দি হলে থানকুনির শিকড় ও ডাটার মিহি গুঁড়ার নস্যি নিলে উপকার পাওয়া যায়।

শিশুর মোবাইল আসক্তি দূর করার উপায় - Ways to get rid of mobile addiction in children
ঠোঁটের চামড়া ওঠার কারণ ও প্রতিকার - Causes and remedies for lip skin
নিম ডাল দিয়ে দাঁত মাজার উপকারিতা - Benefits of brushing teeth with neem dal
কোন দুধ বেশি উপকারী, ঠান্ডা নাকি গরম? - Which milk is more beneficial, cold or hot?
জলপাইয়ের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
এলাচের উপকারিতা
পিপুল গাছের উপকারিতা
পুদিনা পাতার গুণাগুণ ও উপকারিতা
ঢেঁড়সের পুষ্টিগুণ
কাঁচা কলার উপকারিতা