জুলিয়া পাস্ত্রানা
জুলিয়া পাস্ত্রানা

জুলিয়া পাস্ত্রানা

১৮৩৪ সালে মেক্সিকোতে জুলিয়া পাস্ত্রানার জন্ম। ছোটবেলা থেকেই দুটি বিরল রোগে আক্রাল্ত ছিলেন পাস্ত্রানা। একটি জেনেরেলাইজড হাইপারট্রিসোটাস ল্যানুগিনোসা এবং আর একটি জিঞ্জিভাল হাইপারপ্লাসিয়া। প্রথম রোগের জন্য মুখ ও কপাল-সহ তার সারা শরীর জুড়ে ছিল অস্বাভাবিক লোম। দ্বিতীয় রোগের ফলস্বরূপ তার ঠোঁট, চোয়াল এবং মাড়ি অস্বাভাবিক ভাবে পুরু ছিল। অর্থাৎ, তার কদাকার রূপই তার পথের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ‘দ্য এপ ওম্যান’(এপ মানবী),‘দ্য বিয়ার ওম্যান’(ভালুক মানবী), ‘দ্য আগলিয়েস্ট উওম্যান ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’(পৃথিবীর সবচেয়ে কুশ্রী মহিলা), ‘লিঙ্ক বিটুইন ম্যানকাইন্ড অ্যান্ড দ্য ওরাংওটাং’(মানুষ এবং ওরাংওটাংয়ের মাঝামাঝি জীব)।

মানবজাতি যতই আধুনিক হয়ে উঠুক, বর্ণবাদ, জাতিবৈষম্যের মতো ঘৃণ্য বাঁধাধরা চিন্তাভাবনা থেকে এখনও বেরোতে পারেনি। আর উনবিংশ শতকে এই বিষয়গুলি নিয়ে সমালোচিত হওয়া বা জনসমক্ষে আলোচিত হওয়া যথেষ্ট অভিপ্রেত। লন্ডনের কুইন্স হলে তাঁকে প্রদর্শন করে রাখা হয়েছিল শুধুমাত্র তার বিশ্রী বাহ্যিক রূপের জন্য।

লন্ডনের কুইন্স হলে তাকে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছিল শুধু তার বিশ্রী বাহ্যিক রূপের জন্য। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম 'লিভারপুল মার্কারি' সংবাদপত্রে এই ঘটনাকে 'জনসমক্ষে প্রকাশিত সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয়' হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছিল। এই অতিরঞ্জনের মাত্রা ন্যূনতম সভ্যতা ও মানবিকতাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল যখন তারা এই ব্যাপারটিকে উপস্থাপনা করেছিল- 'মানবজাতির বিবর্তনবাদের উদাহরণ পরিদর্শনের একটি অপার সুযোগ' বলে। ১৮৫৪ সালে পাস্ত্রানাকে আমেরিকার একটি প্রদর্শনীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষ তাকে শুধু দেখবে বলে।

পাস্ত্রানার জন্ম এবং জন্মগত ইতিহাস নিয়ে অনেক আকর্ষনীয় তথ্য আছে। অনেকে বলেন পাস্ত্রানা আদিম আমেরিকান উপজাতি ‘রুট ডিগারস’-এর অন্তর্গত। রুট ডিগারসেরা এপ সম্প্রদায়ের এবং এদের পূর্বসূরিরা পাহাড়ের গুহায় বাস করতেন। অনেকে বলে থাকেন পাস্ত্রানার মা মিসেস এসপাসিনোকে রুট ডিগারসের কিছু মানুষ অপহরণ করে। দীর্ঘদিন ধরে সন্তর্পণে একটি বিপন্ন জীবন কাটানোর পরে একদিন পাস্ত্রানাকে নিয়ে পালিয়ে আসেন তার মা।

অন্যপক্ষের মতে, পাস্ত্রানা মেক্সিকোর ওকোরনি গ্রামের একটি মেয়ে যাকে স্থানীয় বাসিন্দারা ‘উল্‌ফ উম্যান’ বলে ডাকত। তাদের কথা অনুযায়ী পাস্ত্রানার মা মারা যাওয়ার পরে তার চাচা তাকে একটি সার্কাসে বিক্রি করে দেন। শোনা যায়, ১৮৫৪ সালে পাস্ত্রানা বাড়ি ছেড়ে স্পেনের সিনেলোয়ায় চলে আসে এবং সিনোলোয়ার তৎকালীন গভর্নর পেদ্রো স্যানচেজের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। এখন প্রশ্ন হল, এগুলির মধ্যে কোনও তথ্যই ফেলে দেওয়ার মতো নয়।

কোনও ঘটনা ইতিহাস হতে সময় লাগে এবং তার মধ্যে সব তথ্যই বানানো হয় না। কথাতেই আছে, ‘যাহা রটে তাহার খানিক বটে।’ তবে পাশাপাশি একথাও বলা যায়, যে মানুষটা সারা জীবন এত ঘৃণা ও পরিহাস পেয়ে বড় হয়েছেন, তার আবির্ভাব ও জীবন সম্পর্কে যে গুজব রটবে না, একথাও নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। হয়ত, বন্য চেহারা এবং শিম্পাঞ্জি মাফিক রূপের জন্যই তার জন্ম প্রসঙ্গে এপ, আমেরিকান উপজাতির কথা উঠে আসে।

১৯৩৩ সালে অ্যাস পনিস নামের একজন ইন্ডি-রক গায়ক পাস্ত্রানাকে নিয়ে ‘জুলিয়া পাস্ত্রানা’ বলে একটি গান লিখেছিলেন। ফরাসী পরিচালক মার্কো ফেরারি ১৯৬৪ সালে জুলিয়ানা পাস্ত্রানার জীবন নিয়ে ‘দ্য এপ উওম্যান’ নামে একটি ছবি করেছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সেলসো গার্সিয়া নামের আরেকজন মেক্সিকান পরিচালক পাস্ত্রানাকে নিয়ে ‘ভেলভেট’ বলে একটি ছবি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। যদিও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

বিশ্বে জুলিয়ানা পাস্ত্রানাকে নিয়ে আরও অনেক রোমহর্ষক গল্প এবং ঘটনা আছে। যেগুলির কিয়দংশ গুজব, কিছু সত্যি। মাত্র ২৬ বছরের জীবনে এতটা জনপ্রিয় হয়েছিলেন একজন মানুষ শুধুমাত্র তাঁর দুর্ভাগ্যের জন্য।

যৌনতার রানী ছিলাম,ভোগ করি যৌনতা: তসলিমা
স্ত্রীকে তালাকের পর দুধ দিয়ে গোসল করে গ্রামবাসীদের খিচুড়ি খাওয়ালেন
মেয়েদের কষ্টের স্ট্যাটাস
জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস ও ২০২৪
চার্লি চ্যাপলিনের বিখ্যাত কিছু উক্তি
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি কনডম-Top 10 condoms in Bangladesh
দৌলতদিয়া কিভাবে যাওয়া যায়
হিজড়া কি সন্তান জন্ম দিতে পারে - Can transgenders give birth to children?
হিজড়া হওয়ার লক্ষণ - Signs of being transgender
নিপাহ ভাইরাস - Nipah virus