শাহী ঈদগাহ,সিলেট -Shahi Eidgah, Sylhet
Shahi Eidgah, Sylhet

শাহী ঈদগাহ,সিলেট -Shahi Eidgah, Sylhet

১৭০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন শহর সিলেট। কালপ্রবাহে দেশের আর্থ-সামাজিক ও ঐতিহাসিক কেন্দ্রবিন্দুতে সিলেটের অবস্থান। আর এসবের অন্যতম সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ।

প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে এখানে বিশাল দুই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ মুসল্লি একসঙ্গে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। এখানেই সিলেটের সর্ববৃহৎ ও প্রধান ঈদ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

ইতিহাস

১৭০০ সালে প্রথম দশকে সিলেটের তদানীন্তন ফৌজদার ফরহাদ খাঁ নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে, তদারকি ও তত্বাবধানে এটি নির্মাণ করেন। প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা উপলক্ষে এখানে বিশাল দুটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ মুসল্লী এক সাথে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। উলেখ্য যে, সিলেট শহরের এ স্থানটি নানা কারণে মানুষের কাছে আকর্ষণীয় ও স্মরণীয়। ১৭৭২ সালে ইংরেজ বিরোধী ভারত - বাংলা জাতীয়তাবাদীর প্রথম আন্দোলন সৈয়দ হাদী ও মাদী কর্তৃক এই ঈদগাহ মাঠেই শুরু হয়েছিল। অতীতে সিলেটের বড় বড় সমাবেশের স্থান ছিল এটি। এখানে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধী, কায়দে আযম, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের মতো নেতারা এসেছেন এবং ইংরেজ বিরোধী গণ আন্দোলের আহবান জানিয়েছেন। যে কারণে এ স্থানটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক।

পরিক্রমা

একটি উচু টিলার উপর সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এই শাহী ঈদগাহ অবস্থিত। মুল ভূ-খণ্ডে কারুকার্যখচিত ২২টি বৃহৎ সিঁড়ি রয়েছে। সিঁড়ি মাড়িয়ে উপরে উঠলে ১৫টি গম্বুজ সজ্জিত ঈদগাহ দেখা যায়। ঈদগাহের প্রাচীর সীমার চার দিক ঘিরে রয়েছে ছোট বড় ১০ টি গেইট। ঈদগাহের সামনে মুসল্লীদের অজুর জন্য রয়েছে বিশাল পুকুর । ঈদগাহের উত্তরে শাহী ঈদগাহ মসজিদ, পাশে সুউচ্চ টিলার ওপর বন কর্মকর্তার বাংলো, দক্ষিণে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট কেন্দ্র, পূর্ব দিকে হযরত শাহজালালের সফরসঙ্গী শাহ মিরারজী (র:) এর মাজারের পাশের টিলার ওপর রয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস।

কিভাবে যাবেন

শাহী ঈদগাহ পরিদর্শন করতে হলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে চায়ের দেশ সিলেটে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে সিলেট আসা যায়। বাস, ট্রেন কিংবা আকাশ পথে যে কোন উপায়েই সিলেট আসতে পারবেন।

ঢাকা থেকে সিলেট বাসে

ঢাকা থেকে সিলেটগামী যে কোন বাসে সিলেট আসা যাবে।ঢাকা থেকে সিলেট এর দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার, ঢাকার ফকিরাপুল, গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালি ও আবদুল্লাপুর বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটের বাস ছেড়ে যায়৷ গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলি ও এনা পরিবহনের এসি বাস যাতায়াত করে।এগুলোর ভাড়া সাধারণত ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। এছাড়াও ঢাকা থেকে সিলেট যেতে শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, এনা পরিবহনের নন এসি বাস জনপ্রতি ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা ভাড়ায় পাবেন। সকাল, দপুর কিংবা রাত সব সময়ই বাস ছেড়ে যায়।সিলেট পৌঁছাতে সাধারণত সময় লাগে ৬ ঘন্টার মত।

ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট

ঢাকার কমলাপুর কিংবা বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উঠতে পারেন।বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে উঠতে হলে কমলাপুর থেকে যে ট্রেন গুলি ছেড়ে যায় তার সাথে ২০ মিনিট সময় যোগ করে নিবেন।কমলাপুর থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ০৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।শ্রেণী ভেদে জনপ্রতি ট্রেনে যেতে ভাড়া পরবে ৩০০ থেকে ১২০০ টাকা।যে কোন ট্রেনকে বেছে নিতে পারেন আপনার ভ্রমণ সঙ্গী হিসাবে। ট্রেনে সিলেট যেতে সময় লাগে ৭-৮ ঘন্টা।

ঢাকা থেকে বিমানে সিলেট 

ঢাকা থেকে সবচেয়ে দ্রুত সময়ে ও সাচ্ছন্দে যেতে আকাশ পথকে বেছে নিতে পারেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ক্লাস অনুযায়ী ভাড়া সাধারণত ২৭০০-৯,০০০ টাকা এর মধ্যে হয়ে থাকে।

চট্টগ্রাম থেকে বাসে সিলেট

চট্রগ্রাম থেকে গ্রীন লাইন, এনা, সৌদিয়া সহ অন্যান্য আরও অনেক বাস সিলেট যায়। এসি ও নন এসি এসব বাসের ভাড়া ৭০০-২০০০ টাকা।

চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেট

সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে যায় উদয়ন এক্সপ্রেস।শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস।পাহাড়িকা এবং উদয়ন এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন সপ্তাহে ৬ দিন চলাচল করে।যে কোন ট্রেনকে বেছে নিতে পারেন আপনার ভ্রমণ সঙ্গী হিসাবে।

সিলেট শহর থেকে শাহী ঈদগাহ

সিলেট শহরের কেন্দ্রবিন্দু হতে প্রায় ২ কিঃমিঃ দুরত্ব শাহী ঈদগাহ। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হতে ৭ কিঃমিঃ এবং সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৫ কিঃমিঃ দুরত্বে শাহী ঈদগাহ’র অবস্থান। তাই সিলেট শহরের যেকোন প্রান্ত থেকে রিকশা বা সিএনজিতে চড়ে দক্ষিণ চত্বরে অবস্থিত সিলেট শাহী ঈদগাহ যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

সিলেটে থাকার মত অনেকগুলো হোটেল আছে, আপনি আপনার প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুযায়ী যে কোন ধরনের হোটেল পাবেন। সিলেট শহরে এখন অনেক গুলো উন্নতমানের হোটেল রয়েছে । সিলেটের লালা বাজার ও দরগা রোডে কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত রেস্ট হাউস আছে ৷ যেখানে ৪০০ থেকে ৫০০০  টাকায় বিভিন্ন ধরণের রুম পাবেন। এছাড়াও হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা, কায়কোবাদ ইত্যাদি হোটেলে আপনার প্রয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী থাকতে পারবেন।চাইলে ঢাকাতে ব্যাক ও করতে পারেন।

খাবার সুবিধা

সিলেট শহরে বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট আছে, আপনার চাহিদামত সবকিছুই পাবেন। সিলেট এর জিন্দাবাজার এলাকার পানসী, পাঁচ ভাই কিংবা পালকি রেস্টুরেন্টের সুলভ মূল্যে পছন্দমত দেশী খাবার খেতে পারেন, এছাড়াও এই রেস্টুরেন্ট গুলোতে অনেক রকম ভর্তা ভাজি পাওয়া যায় বলে সবার কাছে খুব জনপ্রিয়।

কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান

হযরত শাহজালালের দরগাহ শরীফ

হাছন রাজার মিউজিয়াম

মালনীছড়া চা বাগান

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর

পর্যটন মোটেল

ড্রিমল্যান্ড পার্ক

আলী আমজদের ঘড়ি

ক্বীন ব্রীজ

জিতু মিয়ার বাড়ি

মনিপুরী জাদুঘর ও রাজবাড়ি

ওসমানী শিশু পার্ক।

দুর্গাসাগর দীঘি-Durgasagar Dighi
একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের নতুন সময়সূচী-New schedule of Ekta Express train
বলধা গার্ডেন-Bulldha Garden
ভাওয়াল রাজবাড়ী - Bhawal Rajbari
ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী-Bhawal Raj Shmashaneshwari
লক্ষনছড়া-Lokkhonchora
ডিবির হাওর-Dibir Haor
পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী-Paharika Express train schedule
বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Schedule of Vijay Express ২০২৪
লামা দর্শনীয় স্থান - Lama sights