সেইন্ট নিকোলাস চার্চ- Saint Nicholas Church
Saint Nicholas Church

সেইন্ট নিকোলাস চার্চ,গাজীপুর

St Nicholas Tolentino Church, Gazipur - Bangladesh

বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় বাৎসরিক উৎসব। ২৫ ডিসেম্বর যীশু খৃস্টের জন্মদিন উপলক্ষে এই উৎসব পালিত হয়। খ্রিস্টানদের মতে এই তারিখের ঠিক নয়মাস পূর্বে মেরির গর্ভে প্রবেশ করে যীশু। তাই প্রকৃত জন্মদিন সম্পর্কে জানা না থাকলেও আদিযুগীয় খ্রিস্টানদের বিশ্বাস অনুসারে এই তারিখেই বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বড়দিন। বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব হলেও অনেক অ-খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও বেশ ঘটা করে এই উৎসব উৎযাপন করে। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অসংখ্য প্রাচীণ গির্জা রয়েছে। আজকে আমরা আপনাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীণ ও ঐতিহাসিক চার্চ সেইন্ট নিকোলাস চার্চ এর গল্প শোনাবো। চলুন তাহলে জেনে নেই কিভাবে যাবেন ঐতিহাসিক এই গির্জাটিতে।

সেইন্ট নিকোলাস চার্চ পরিচিতি

বড়দিনের কার্ড বিনিময় দিয়ে শুরু হওয়া এই উৎসব শেষ হয় উপহার প্রদান, গির্জায় ধর্মোপাসনা, বড়দিনের বৃক্ষ সাজানো, আলোকসজ্জা, মালা, ভোজ, যিশুর জন্মদৃশ্য, হোলি এবং সংগীতের মাধ্যমে। সান্টাক্লজ বা ফাদার ক্রিস্টমাস কর্তৃক শিশুদের জন্য উপহার আনাটা বড়দিনের সবচেয়ে মজার ব্যাপার। উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং আয়ারল্যান্ডে বিশেষ কেকও কাটা হয় যিশুর নামে। কিছু কিছু দেশে মোমবাতি জ্বালিয়েও যিশুর জন্মদিনটিকে পালন করা হয়। অ-খ্রিস্টানদের জন্য বড়দিনের রাষ্ট্রীয় ছুটি একদিনের হলেও খ্রিস্টান প্রধান দেশগুলিতে বারদিনব্যাপী এই উৎসব চলে।  বড়দিন কেবল একটি উৎসবই নয়, বরং খ্রিস্টান এবং অ-খ্রিস্টানদের জন্য অর্থনৈতিকভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

উপহার আদান প্রদান ও উৎসবের নানা অনুষঙ্গের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয়-বিক্রয়ের একটি মরসুম চলে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক দিকটি প্রসারিত হচ্ছে। অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও বড়দিনটিকে রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অসংখ্য প্রাচীন গির্জা রয়েছে। তবে রাজধানী ঢাকার গাজীপুরে অবস্থিত সেইন্ট নিকোলাস চার্চটি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীণ ও ঐতিহাসিক খ্রিস্টান মিশনারী চার্চের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। কেননা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হামবুর্গের বোমা হামলার ফলে গির্জাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল এবং পরবর্তিতে এর ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করা হয় এবং ১৯৯০ ও ২০১২ সালে টাওয়ারে পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করে সেন্ট নিকোলাসের চার্চের বর্তমান অবস্থা ফেরত আনা হয়।

ইতিহাস 

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রস্থান সেইন্ট নিকোলাস চার্চটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি ১৯৬৩ সালে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নির্মিত হয়েছে। কালীগঞ্জের আঞ্চলিক বাংলা ভাষায় প্রথম দ্বিভাষীয় বাইবেল অনূদিত হয় সেইন্ট নিকোলাস চার্চ হতে এবং প্রথম দ্বিভাষিক অভিধান ও গদ্যও প্রকাশিত হয় এই চার্চ থেকেই। পর্তুগীজ খ্রিস্টানরা ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে নিজের আস্তানা ছেড়ে চলে যাবার পর সম্রাট জাহাঙ্গীরের আদেশে এই চার্চটি স্থাপন করা হয়।

১৯৮৮ সালের দিকে বাঙ্গালী কারিগরদের মাধ্যমে নতুন একটি গির্জা ভবন নির্মাণ করা হয়। নতুন তৈরী গির্জার উপরের ছাদ  ছয়টি অষ্টকোণাকৃতির সেমি-গোথিক স্টাইলে অর্থাৎ আটকোণা সেমি-গোথিক স্টাইলে বানানো হয়েছে। প্রবেশ করার জন্য চারটি প্রবেশপথসহ একতলা বিশিষ্ট এই গির্জাটি লোহার তৈরি ১২টি খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে আছে যুগযুগ ধরে। গির্জাটির প্রধান প্রবেশ দ্বারের সামনে রয়েছে দন্ডায়মান যিশুর একটি মূর্তি। এছাড়া গির্জাটির সমবেত উপাসনার প্রার্থনা ঘর, একক উপাসনা ঘর, তিনটি সেমি-সার্কুলার প্রবেশ পথ, বারান্দাযুক্ত প্রবেশ পথ এবং বৃহৎ আকৃতির হল ঘরের স্থাপত্যশৈলী নজরকাড়ার মতো। পরবর্তিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয় গির্জাটিকে কেন্দ্র করে যেটি বর্তমানে নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজি বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়েছে।

কিভাবে যাবেন

এই চার্চে যাওয়ার জন্য প্রথমেই ঢাকা থেকে গাজীপুরে অবস্থিত টঙ্গীতে আসতে হবে। টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জের বাস কিংবা সিএনজি ধরে তারপর আহসান উল্লাহ মাস্টার ফ্লাইওভার পার হতে হবে। এরপর নলছটা সেতু হয়ে সেইন্ট নিকোলাস চার্চে যাওয়া যায়। এই সেতু থেকে গির্জাটির দূরত্ব মাত্র ২-৩ কিলোমিটার। তাছাড়া প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাস নিয়ে খুব সহজেই ঢাকা কিংবা অন্যান্য যেকোন শহর থেকে গির্জাটিতে আসা যায়।

কোথায় থাকবেন 

ঢাকা থেকে একদিনেই সেইন্ট নিকোলাস চার্চ ঘুরে আসতে পারবেন। তবে থাকলে চাইলে অথবা দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে চার্জটিতে আসলে রাত্রিযাপনের জন্য গাজীপুরে শহরের কোণাবাড়ি ও চৌরাস্তা বাস স্ট্যান্ডের কাছে অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে। তাছাড়া গাজীপুরে বেশকিছু অত্যাধুনিক ও মনোরম রিসোর্ট রয়েছে। তবে রিসোর্টে থাকার জন্য আগে থেকেই বুকিং দেওয়া লাগবে। কিন্তু আবাসিক হোটেলে থাকতে চাইলে কেবল যোগাযোগ করে আসলেই হবে।

কোথায় খাবেন

গাজীপুরে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে, সেখানকার খাবারও বেশ জনপ্রিয় ও সুস্বাদু এবং খাবারগুলো বেশ সুলভ মূল্যেই পাওয়া যায়। এছাড়া সেইন্ট নিকোলাস চার্চটির কাছে নাগরী বাজারে হালকা চা-নাস্তা করার জন্য বেশ ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। তবে একদিনের জন্য গেলে পিকনিকের মতো বাসা থেকে পছন্দ অনুযায়ী খাবারও নিয়ে নিতে পারেন।

অক্সফোর্ড মিশন চার্চ-oxford mission church barisal
ঢাকা টু চাঁদপুর লঞ্চ সময়সূচী-Dhaka to Chandpur launch
তারা মসজিদ-Tara Masjid
বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা-Baitush Sharaf Adarsh ​​Kamil Madrasa
সোহাগ পল্লী-Shohag palli
সারাহ রিসোর্ট-Sarah Resort
জিতু মিয়ার বাড়ি-Jitu Mia's house
লালাখাল-Lalakhal tour
ঢাকা টু জামালপুর ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Dhaka to Jamalpur train ২০২৪
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Drutojan Express Train ২০২৪