ফয়েজ লেক-Fayez Lake
Fayez Lake

ফয়েজ লেক, চট্টগ্রাম-Fayez Lake

পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা লেকটি অপরূপ নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতীক। ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত ফয়েজ লেকের অন্যতম আকর্ষণ পাহাড়ি প্রকৃতি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা এবং নৌকা ভ্রমণ ইত্যাদির কারণে দেশি বিদেশি ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ফয়েজ লেক বেশ জনপ্রিয়।

অবস্থান

ফয়েজ লেক বা ফয়েজ হ্রদ বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থান। এটি চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম হ্রদ। পূর্বে এটি পাহাড়তলী লেক হিসেবে পরিচিত ছিল।  জিরো পয়েন্ট থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

বর্ণনা

ফয়েজ লেকে ভ্রমণের সুব্যবস্থা আছে। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান কিংবা ইঞ্জিন চালিত নৌকা, স্পিড বোট নিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে। বন্ধুবান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে পানির কলকল ধ্বনিতে মুখরিত ফয়েজ লেকে নৌভ্রমণ অন্যরকম আনন্দদায়ক। ফয়েজ লেকের চারপাশে পাহাড়ের বুক চিরে ছুটে চলা আপনাকে বিমুগ্ধ করবে। গৌধূলিলগ্নে সূর্য যখন অন্তিম নীলিমায় ডুবে যায়, তখনকার লেকের পরিবেশ খুবই চমৎকার। উপরে টিলায় আছে বনভোজন কেন্দ্র। বনভোজনের জন্য ফয়েজ লেক দারুণ একটা জায়গা। আরেকটি টিলার উপরে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার রয়েছে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে চট্টগ্রাম শহরের বার্ডস আই ভিউ দেখা যায়।

ফয়েজ লেকের অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ড এ বেশ কিছু আধুনিক রাইড রয়েছে। সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, ড্রাই স্লাইড, ফ্যামিলি ট্রেইন, প্যাডেল বোট, ফ্লোটিং ওয়াটার প্লে, পাইরেট শিপের মতো মজাদার সব রাইড। এছাড়াও রয়েছে সি ওয়ার্ল্ড ওয়াটাপার্ক। আধুনিক ওয়াটাপার্কের বিভিন্ন রাইড যেমন স্প্লাশ পুল, ওয়াটার কোষ্টার রাইডার ইত্যাদি আছে পার্কটিতে। অ্যামিউজমেন্ট ওয়ার্ল্ডের উত্তরে টিলার উপরে মূল ফয়েজ লেক। স্বচ্ছ পানির লেকের চার পাশ জুড়ে রয়েছে সবুজ চাদরে মোড়া ঘেরা উঁচু উঁচু পাহাড়। আসমানী, গগনদ্বীপ, জলটুঙ্গি ইত্যাদি নাম রয়েছে এক একটি পাহাড়ের। এসব পাহাড়ের সংরক্ষিত বনে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, চিত্রা হরিণ, খরগোশ আরো অনেক বন্যপ্রাণীর দেখে মেলে।

চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান

সময়সূচি ও টিকেট মূল্য

শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার ও শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। ফয়েজ লেকের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১২০ টাকা,শিশুদের ৬০ টাকা।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে ফয়েজ লেক যেতে হলে আগে আপনাকে চট্টগ্রাম যেতে হবে। কমলাপুর টার্মিনাল থেকে বিআরটিসি করে আর সায়দাবাদ বাস ষ্টেশন থেকে সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভৃতি বাস করে আপনি চট্টগ্রাম যেতে পারেন। গ্রিনলাইন (০২-৭১০০৩০১), সোহাগ (০২-৯৩৪৪৪৭), সৌদিয়া (০১১৯৭০১৫৬১০), টি আর (০২-৮০৩১১৮৯), হানিফ (০১৭১৩৪০২৬৭১) ইত্যাদি পরিবহনের এসি বাস চট্টগ্রাম যায়। ভাড়া ৮৫০-১১০০ টাকা। আর এস আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, শ্যামলী, হানিফ, ঈগল প্রভৃতি পরিবহনের সাধারণ বাসে ভাড়া ৪০০-৫০০ টাকা।

সিলেট থেকে সড়ক ও রেলপথে চট্টগ্রাম আসা যায়। সড়কপথে গ্রিনলাইন পরিবহনের এসি, নন এসি বাস যায় চট্টগ্রাম। এছাড়া সিলেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে সপ্তাহের শনিবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, সপ্তাহের রবিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ২০ মিনিটে আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস এবং সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ১০টা ৩০ মিনিটে মেইল ট্রেন জালালাবাদ এক্সপ্রেস ছেড়ে যায় চট্টগ্রামের উদ্দেশে। ভাড়া ১৭৫ থেকে ১২০০ টাকা।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী

ট্রেনে ঢাকা-চট্টগ্রামের রুটে মহানগর প্রভাতী ঢাকা ছাড়ে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে, চট্টলা এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ২০ মিনিটে, মহানগর গোধূলি ঢাকা ছাড়ে বিকেল ৩টায়, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ঢাকা ছাড়ে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে, তূর্ণা ঢাকা ছাড়ে রাত ১১টায়। ভাড়া ১৬০ থেকে ১১০০ টাকা।

বিমানে বা আকাশপথে চট্টগ্রাম

ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান (০২-৯৫৬০১৫১-১০), জিএমজি এয়ারলাইনস (০২-৮৯২২২৪৮) ও ইউনাইটেড এয়ার (০২-৮৯৫৭৬৪০), রিজেন্ট এয়ারে (০২-৮৯৫৩০০৩) সরাসরি চিটাগং যাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম থেকে ফয়েজ লেক

চট্রগ্রাম শহরের জিইসি মোড় থেকে সিএনজিতে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা নিবে। রিক্সায় নিবে ৪০ টাকা। এক বিকেলে ঘুরে শেষ করা যাবে না, তাই একদিনের প্ল্যান থাকলে সকাল বেলা চলে যাওয়াই ভালো।

কোথায় থাকবেন

ফয়েজ লেকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আছে বিলাসবহুল থাকার ব্যবস্থা। পাহাড়ের ধারে লেকের পাড়ে রয়েছে দারুন সব কটেজ ও রিসোর্ট। নবদম্পতিদের জন্য রয়েছে হানিমুন কটেজ। অবশ্য ইচ্ছা করলে অন্য আবাসিক হোটেলে থেকেও আপনি ফয়’স লেক ঘুরে দেখতে পারেন। এট্রি ফি ও রাইড খরচটা হাতের নাগালেই।

থিম পার্ক ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামাউজমেন্ট ওয়ার্ল্ডে প্রবেশসহ সব রাইড ২০০ টাকা,ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড কনকর্ড প্রবেশসহ সব রাইড ৩৫০ টাকা।

রিসোর্ট ও কটেজ ভাড়া ফয়েজ লেক রিসোর্টে প্রতিদিন রাত যাপন দুই হাজার ৫০০ থেকে সাত হাজার টাকা এবং রিসোর্ট বাংলোয় প্রতিদিন রাত যাপন দুই হাজার ৫০০ থেকে ছয় হাজার টাকা।

এছাড়া চট্টগ্রামে নানান মানের হোটেল আছে। নীচে কয়েকটি বাজেট হোটেলে নাম ঠিকানা দেয়া হলো। এগুলোই সবই মান সম্পন্ন কিন্তু কম বাজেটের হোটেল।

১. হোটেল প্যা রামাউন্ট, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়াঃনন-এসি সিঙ্গেল ৮০০ টাকা, ডাবল ১৩০০ টাকা, এসি ১৪০০ টাকা ও ১৮০০ টাকা ।

যোগাযোগ : ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪।

২. হোটেল এশিয়ান এসআর, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়া : নন এসি : ১০০০ টাকা, নন এসি সিঙ্গেল। এসি : ১৭২৫ টাকা ।

যোগাযোগ: ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫।

৩. হোটেল সাফিনা, এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম। একটি পারিবারিক পরিবেশের মাঝারি মানের হোটেল । ভাড়া : ৭০০ টাকা থেকে শুরু । এসি ১৩০০ টাকা ।

যোগাযোগ: ০৩১-০৬১৪০।

৪. হোটেল নাবা ইন, রোড ৫, প্লট-৬০, ও আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম। যারা নাসিরাবাদ/ও আর নিজাম রোড এলাকায় থাকতে চান তাদের জন্য আদর্শ । ভাড়া : ২৫০০/৩০০০ টাকা ।

যোগাযোগঃ০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২

৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক, ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম। ভাড়া-২৩০০/৩৪০০ টাকা যোগাযোগ: ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী-Dhaka To Chittagong Train Schedule
হাজারিখিল বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য-Hazarikhil Wildlife Sanctuary
নুহাশ পল্লী - Nuhash Palli
জলেশ্বরী রিসোর্ট-Joleswori Resort
ক্বীন ব্রীজ-Keane Bridge
ড্রিমল্যান্ড পার্ক-Dreamland Park
বলাকা ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Balaka train ২০২৪
চাঁদপুর ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়ার তালিকা ২০২৩-Chandpur train schedule and fare ২০২৪
দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Dolanchampa Express Train ২০২৪