
পারকি সমুদ্র সৈকত, চট্টগ্রাম-Parki beach Chittagong
শীত আসলেই ভ্রমণ পিপাসুরা খুঁজতে থাকে ভ্রমণের জায়গা। পাশাপাশি নতুন গন্তব্যে’রওনা সন্ধানে থাকে পিপাসুরা। আর সেই রকম একটি পছন্দের পর্যটন স্পট “পারকির চর”। যা মিনি কক্সবাজারে হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের অন্যতম সমুদ্র সৈকত আনোয়ারা উপজেলার “পারকি সমুদ্র সৈকত”।
অবস্থান
চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৫ কিলো দূরে পারকি সমুদ্রসৈকত। চট্টগ্রামের দক্ষিণে আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সমুদ্রসৈকত। চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি কিংবা বিমানবন্দর এলাকা থেকে কর্ণফুলী নদী পেরোলেই পারকি চর।
সৈকতের প্রবেশমুখ
পারকি সৈকতে পৌঁছে দুই দিক থেকে সৈকতে প্রবেশ করা যায়। প্রথমটি সৈকতের রোড। দ্বিতীয়টি লুসাই পার্ক। প্রথমটি সৈকতের রোড হলেও এই রোডে খুবই ভীড় থাকে ও অনেকটা গিঞ্জি এলাকা। সবসময় লোকে লোকারণ্য।এই রোড দিয়ে পর্যটকবাহী গাড়িগুলো খুবই বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
একটু নিরিবিলিতে সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে প্রবেশ করুন লুসাই পার্ক দিয়ে৷ এই পার্কে কোন প্রবেশ ফি নেয়া হয়না। রয়েছে গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা। প্রকৃতির সবুজ শ্যামল রুপ যেন লুসাই পার্ক। পর্যটকদের সব ধরণের সুবিধা আপনি এখানে পেতে পারেন। রয়েছে খাবারের ব্যবস্থা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য
পারকী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে দেখা মিলে অন্যরকম এক দৃশ্য। আঁকা বাকা পথ ধরে ছোট ছোট পাহাড়ের দেখা মিলে। চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ (সিউএফল) এবং কাফকোর দৃশ্যও পর্যটকদের প্রাণ জুড়ায়। পারকী সৈকতে যাওয়ার পথে কর্ণফুলী নদীর উপর প্রমোদতরীর আদলে নির্মিত নতুন ঝুলন্ত ব্রীজ চোখে পড়ে। বীচে ঢুকার পথে সরু রাস্তার দুপাশে সারি সারি গাছ, সবুজ প্রান্তর আর মাছের ঘের দেখা যায়। সৈকতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো অসংখ্য ঝাউ গাছ আর ঝাউবন রয়েছে।
যেভাবে যাবেন
চট্টগ্রাম শহরের যেকোন স্থান থেকেই বাস অথবা টেম্পুতে করে চট্টগ্রাম শাহ আমানত সেতু বা তৃতীয় কর্ণফুলি সেতুর কাছে যেতে পারেন। সেখানে গেলেই আপনি বটতলী মহসিন আউলিয়ার মাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন। তবে খেয়াল রাখবেন, ভুলে যেন বাস কন্ডাক্টরের ‘বৈলতলী” উচ্চারণের সাথে ‘বটতলী’কে গুলিয়ে না ফেলেন। দুটি কিন্তু দুই জায়গা। পারকি বীচে যেতে হলে আপনাকে বটতলী মহসিন আউলিয়া মাজারগামী বাসে উঠতে হবে। প্রাচীন এই মাজারটি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত।
বাসে উঠে কন্ডাকটরকে বলতে হবে যেন আপনাকে ‘সেন্টার’ নামক স্থানে নামিয়ে দেয়। জায়গাটির প্রকৃত নাম মালখান বাজার, তবে এটি সেন্টার নামেই পরিচিত। এতটুকু পর্যন্ত আসতে বাসে জনপ্রতি ২৫-৩০ টাকা করে নিবে। সেন্টারে নেমে বীচে যাবার জন্য সি এন জি পাবেন। রিজার্ভ করলে ১০০-১৫০ টাকাতেই পৌঁছে দেবে পারকি সমুদ্র সৈকত। বিচে যাবার আগে খাবার-দাবারসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস সেন্টার বাজার কিংবা কিছুটা দূরেই চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার হাউজিং কলোনী সংলগ্ন বাজার থেকে নিয়ে নিতে পারেন। বীচেও কিছু দোকান-পাট রয়েছে, তবে তাতে সবকিছু না-ও পেতে পারেন। আর চট্টগ্রাম শহর থেকে সি এন জি রিজার্ভ করতে চাইলে সরাসরি পারকি বীচ পর্যন্ত ৪০০-৫০০ টাকা করে নিবে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী
প্রচুর পর্যটক আগমনের কারণে এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠছে হোটেল। পারকি রিসোর্ট যার মধ্যে অন্যতম। পারকিতে রাত কাটাতে চাইলে স্থানীয় রিসোর্টেও উঠতে পারেন। তবে এসব অনেকের পছন্দসই নাও হতে পারে, তাই আপনি চট্টগ্রাম শহরে এসেও রাত যাপন করতে পারেন। চট্টগ্রাম শহরে আছে বেশ নান্দনিক হোটেল রয়েছে।
১. হোটেল প্যা রামাউন্ট, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়াঃনন-এসি সিঙ্গেল ৮০০ টাকা, ডাবল ১৩০০ টাকা, এসি ১৪০০ টাকা ও ১৮০০ টাকা ।
যোগাযোগ : ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪।
২. হোটেল এশিয়ান এসআর, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম। ভাড়া : নন এসি : ১০০০ টাকা, নন এসি সিঙ্গেল। এসি : ১৭২৫ টাকা ।
যোগাযোগ: ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫।
৩. হোটেল সাফিনা, এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম। একটি পারিবারিক পরিবেশের মাঝারি মানের হোটেল । ভাড়া : ৭০০ টাকা থেকে শুরু । এসি ১৩০০ টাকা ।
যোগাযোগ: ০৩১-০৬১৪০।
৪. হোটেল নাবা ইন, রোড ৫, প্লট-৬০, ও আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম। যারা নাসিরাবাদ/ও আর নিজাম রোড এলাকায় থাকতে চান তাদের জন্য আদর্শ । ভাড়া : ২৫০০/৩০০০ টাকা ।
যোগাযোগঃ০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২
৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক, ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম। ভাড়া-২৩০০/৩৪০০ টাকা যোগাযোগ: ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭।