খৈয়াছড়া ঝর্ণা-Khoiyachora Waterfal
Khoiyachora Waterfal

Khoiyachora Waterfal-খৈয়াছড়া ঝর্ণা

যান্ত্রিক জীবন থেকে পরিত্রাণ পেতে মানবজাতি স্বভাবতই ছুটে গেছে প্রকৃতির কাছে। কারো প্রিয় পাহাড় – পর্বত, কারো আবার প্রিয় জলাধার। মানুষের মস্তিষ্ক স্বাভাবিক রাখতে প্রকৃতির ভূমিকা অসামান্য। বাংলাদেশে পাহাড়ের যেমন রয়েছে অবাধ বিচরণ, তেমনি রয়েছে জলাধারের সমান অধিকার। বান্দরবান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ভ্রমণ করলে এমনই কিছু জলাধার এবং জলপ্রপাত এর দেখা মিলবে। চট্টগ্রামে রয়েছে কমলদহ, নাপিত্তাছড়া, সহস্রধারা, ঝরঝরি ঝর্ণা সহ বেশ কয়েকটি ঝর্ণা। মানবিক কোলাহল থেকে দূরে সরে প্রকৃতির যত কাছাকাছি যাওয়া যায়, মানসিক প্রশান্তি ততই খুজে পাওয়া যায়। এ কথা মাথায় রেখেই হয়ত ঝর্ণা গুলোর অবস্থান মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে, গভীর জঙ্গলের ভিতরে, যেখানে যেতে হলে পাড়ি দেয়া লাগে দুর্গম পথ। এরকমই ধরাছোঁয়ার বাইরে আরেক জলপ্রপাত খৈয়াছড়া ঝর্ণা।

চট্রগ্রামের দর্শনীয় স্থান

বিবরণ

খৈয়াছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পাহাড়ে অবস্থিত একটি জলপ্রপাত। মীরসরাই উপজেলায় অবস্থিত অন্যান্য জলপ্রপাত যেমন কমলদহ ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা, ঝরঝরি ঝর্ণা প্রভৃতির তুলনায় খৈয়াছড়া ঝর্ণা ও এর ঝিরিপথ অন্যতম বৃহৎ। খৈয়াছড়া ঝর্ণায় মোট ৯টি বড় ঝর্ণার ধাপ (তথা ক্যাসকেড) ও অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন ধাপ রয়েছে। মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নে ঝর্ণারটির অবস্থানের কারণে ঝর্ণাটির নামকরণ করা হয়েছে "খৈয়াছড়া ঝর্ণা"।

অবস্থান

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারের উত্তর পার্শ্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার পূর্বে এই ঝর্ণার অবস্থান।[৪] ঝর্ণাটির অবস্থান পাহাড়ের ভেতরের দিকে হওয়ায় সরসরি কোন যানবাহন ব্যবহার করে ঝর্ণাটির পাদদেশ পর্যন্ত পৌছানো সম্ভব হয় না।

খৈয়াছড়া ঝর্ণার উচ্চতা

এই ঝর্ণাটি নয় ধাপ বিশিষ্ট হওয়ায় এর উচ্চতা অন্যান্য সকল ঝর্ণা থেকে অনেকখানি বেশি। খৈয়াছড়া ঝর্ণার প্রথম স্তরের উচ্চতা প্রায় ৬০ ফিট, দ্বিতীয় ধাপের উচ্চতা প্রায় ৪০ ফিট এবং তার পরবর্তী অর্থাৎ তৃতীয় ধাপের উচ্চতা প্রায় ১২০ ফিট।

সৃষ্টির ইতিহাস

ধারণা করা হয় প্রায় ৫০ বছর আগে থেকেই প্রবাহিত হচ্ছে খৈয়াছড়া ঝর্ণাটি। জনমানহীন পাহাড়ি এলাকা এবং ঝোপ ঝাড়ের আধিক্যের জন্য এটির অবস্থান আবিষ্কারে সময় লেগেছে। আবার অনেকে ধারণা করেন প্রায় ৫০ বছর আগে পাহাড়ি ঢলের ফলে এই ঝর্ণাটি তৈরি হয়েছে, এর পূর্বে এখানে ঝর্ণাটি ছিল না। ২০১০ সালে সরকার বারৈয়াঢালা ব্লক থেকে কুণ্ডের হাট (বড়তাকিয়া) ব্লকের ২৯৩৩.৬১ হেক্টরর পাহাড়কে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করায় খৈয়াছড়া ঝর্ণা জাতীয় উদ্যানের আওতাভুক্ত হয়।

খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখতে যাওয়ার উপযুক্ত সময়

যেকোনো ঝর্ণাই মূলত পানিতে পরিপূর্ণ থাকে বর্ষা এবং তার পরবর্তী কয়েকমাস পর্যন্ত। তবে খৈয়াছড়া ঝর্ণায় বছরের প্রায় সবসময় আপনি কমবেশি ঝর্ণাধারা দেখতে পাবেন।

আপনি ঝর্ণার উন্মত্ত রুপ দর্শন করতে চাইলে বর্ষা বা তার পরপরই আপনাকে খৈয়াছড়া যেতে হবে। তবে মনে রাখবেন একদম ভরা বর্ষায় ঝর্ণা ভ্রমণে জোঁকের আধিক্য, পিচ্ছিল ঝিরিপথসহ আরো বেশ কিছু সমস্যায় আপনাকে পড়তে হতে পারে। তাই ঝর্ণা ভ্রমণের উপযুক্ত সময় বর্ষার শেষ হতে পুরো শরৎের সময়টুকু পর্যন্ত। মাসের হিসেবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টুকু ঝর্ণা ভ্রমণের সসবচেয়ে ভালো সময়।

কিভাবে যাবেন

রেলযোগে

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যে কোন আন্তঃনগর ট্রেনে চড়ে নেমে মীরসরাই স্টেশনে নেমে যাবেন। ভাড়া ২৮৫ থেকে ১১৭৯ টাকা। মীরসরাই থেকে অটোরিকশায় সরাসরি খৈয়াছড়া ঝর্ণার ট্রাইল পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৩০-৪০ টাকা।

দেশের যেকোনো জেলা হতে এই ঝর্ণাটি ভ্রমণ করতে চাইলে চট্টগ্রামের বাসে আসলে সরাসরি বড়তাকিয়া বাজার নেমে ঝর্ণায় যেতে পারবেন।

সড়কযোগে

ঢাকার কমলাপুর ও সায়দাবাদ থেকে প্রতিদিন বিআরটিসি, হানিফ, শ্যামলীসহ অসংখ্য বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সেগুলোর যে কোন একটাতে চড়ে নেমে যাবেন বড়তাকিয়া বাজারে। সময় লাগে ৬-৭ ঘণ্টা। ভাড়া ৫০০-১৫০০ টাকা। বড়তাকিয়া থেকে হেঁটেই সরাসরি খৈয়াছড়া যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন?

বড়তাকিয়া বা খৈয়াছড়া এলাকায় থাকার জন্য ভালো কোন আবাসন ব্যবস্থা নেই। তবে স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে তাদের বাড়ীতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতে পারবেন। তাছাড়া আপনার সাথে অতিরিক্ত ব্যাগ ও জিনিসপত্রও তাদের কাছে রেখে যেতে পারবেন। মিরেরসরাইয়ে বেশ কিছু হোটেল আছে। ভাড়া পড়বে সিজনভেদে ৩০০-১০০০ টাকা জনপ্রতি।

কী খাবেন?

খৈয়াছড়ায় ঝর্ণা ঘুরতে গেলে অবশ্যই নিজেদের খাবার সাথে করে নিয়ে যাওয়া উচিত। বড়তাকিয়া বাজারে কয়েকটি খাবারের দোকান আছে, সেখান থেকেও খাবার নিয়ে যেতে পারেন। ঝর্ণা এলাকার কাছাকাছি কোন খাবারের হোটেল নেই। খাবার না নিয়ে গেলে বিপদে পড়তে হতে পারে। তবে স্থানীয়দের বাড়িতেও খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন। ঝর্ণায় যাওয়ার আগে কথা বলে টাকা দিয়ে রাখলে ওরা খাবার বানিয়ে রাখে। এছাড়া সাথে করে বিস্কুট ও মুড়ির মত শুকনা খাবারও নিয়ে যাবেন। পর্যাপ্ত খাবার পানি সাথে নিয়ে যাবেন।

রুপসা এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Rupsha Express train ২০২৪
কড়াপুর মিয়া বাড়ি মসজিদ-korapur mia bari mosque
বলাকা ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Balaka train ২০২৪
একডালা দুর্গ-Ekdala Fort
আলীকদম দর্শনীয় স্থান - Alikadam is a place to visit
সুপ্তধারা ঝর্ণা-Suptadhara Jharna
হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Haor Express Train ২০২৪
ইটনা হাওর ভ্রমণ গাইড - itna haor Travel Guide
লামা দর্শনীয় স্থান - Lama sights
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ ট্রেনের সময়সূচী-Dhaka to Mymensingh Train Schedule