চট্টগ্রামের সেরা ৮টি রেস্টুরেন্ট-Top 8 restaurants in Chittagong
restaurants in Chittagong

Top 8 restaurants in Chittagong-চট্টগ্রামের সেরা ৮টি রেস্টুরেন্ট

এদেশের মানুষ ভোজনরসিক। অনাদিকাল থেকেই খাবার নিয়ে এদেশের মানুষের আগ্রহ এবং আকর্ষণ ছিল লক্ষণীয়। সিলেটী আখনী, ঢাকাই বিরিয়ানী, রাজশাহীর কলাই রুটি, নাটোরের কাঁচাগোল্লা কিংবা বগুড়ার দই, প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেরই আছে জ্বিভে জল আনা সব বিখ্যাত খাবার। এই যেমন, মেজবানী মাংসের (কিংবা আঞ্চলিক ভাষায় “মেজ্জানি গোশত”) শুনে আপনার কি এই মুহুর্তেই মাংস দিয়ে দিয়ে ভরপেট ভাত খেতে ইচ্ছে করে নি? বিপ্রপার্টি চট্টগ্রামে অপারেশন শুরু করেছে বেশ কিছুদিন হল। আর বিপ্রপার্টি যেহেতু সাধারণ কোন রিয়েল এস্টেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নয় বরং সমগ্র লাইফস্টাইল নিয়েই আমাদের কাজ তাই, চট্টগ্রামে রেস্টুরেন্ট খুঁজতে গিয়ে যেন আপনার বিপত্তিতে পড়তে না হয় সেজন্যই এই লেখা। তাহলে চলুন, জেনে নেয়া যাক চট্টগ্রামের বিশেষ কিছু রেস্টুরেন্ট সম্পর্কে!

বেভারলি আইল্যান্ড

জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি এবং এর আশপাশের এলাকা তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এখানে সারাদিন তাই মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। শিল্পকলার কাছেই আছে চমৎকার আরেকটি রেস্টুরেন্ট বেভারলি আইল্যান্ড। তাদের ট্যাগ লাইন হল “দেশী উনুনে দেশী খাবার”। এর সাথে মিল রেখেই আপনি এখানে পাবেন বিভিন্ন ধরণের পরটা, নান, কাবাব, সকাল, দুপুর, রাতের খাবার কিংবা বিকালের নাস্তা।

বেভারলি আইল্যান্ডের অন্যতম আকর্ষণ হল ইনডোর অ্যারেঞ্জমেন্টের সাথে সাথে খোলা আকাশের নিচেও বসার ব্যবস্থা। ফিস বার বি কিউ কিংবা স্পেশাল কোন কাবাব নিয়ে দোতালা ছাদের বিশাল এক গাছের নিচে বসে কোন একটা চমৎকার বিকেল আপনার কাটতেই পারে বেভারলি আইল্যান্ডে।

সেভেন ডেজ

ভোজনরসিকদের প্রিয় খাবারের তালিকায় উপরের দিকেই থাকে বিরিয়ানীর নাম। আর বিরিয়ানীর জন্য চট্টগ্রামে বিখ্যাত একটি রেস্টুরেন্টের নাম সেভেন ডেজ। দিনভর বিরিয়ানী প্রিয় মানুষদের ভিড় এখানে লেগেই থাকে। এছাড়া নতুন নতুন ফুড ডেলিভারি সিস্টেমগুলোতেও দেখা যায় মানুষ প্রচুর অর্ডার করছে সেভেন ডেজ-এর খাবার। নগরীর ২নং গেট সংলগ্ন এই রেস্তোরার বিখ্যাত মেজবানী বিফ আখনি কিংবা চিকেন দম বিরিয়ানি চেখে দেখতে হলে যে আপনার খুব বেশি পয়সাকড়ি খরচ করতে হবে তেমনও না। বরং ন্যায্যমূল্যেই পেয়ে যাবেন সেভেন ডেজ-এর খাবার।   

বীর চট্টলা

খাবার তো আমরা প্রতিদিনই খাই, প্রায় প্রতি বেলাতেই খাই। কিন্তু বাইরে খেতে চাইলে খাবারের স্বাদের সাথে সাথে আমরা আরও যা খুঁজি তা হল পরিবেশ। বাংলা ভাষার খুব মজার একটি বিষয় হল শব্দের দ্বৈততা। গল্পগুজব, ফলমূল, আনন্দবেদনা, এরূপ দ্বৈত শব্দ আমরা প্রায়সই ব্যবহার করি। খাবারের ক্ষেত্রে মৌখিকভাবে দ্বৈত আমরা প্রায়ই বলি “খাবার-টাবার”।

চট্টগ্রামের রেস্টুরেন্ট বীর চট্টলা খাবারের জন্য তো অবশ্যই, বিখ্যাত তাদের “টাবারের” জন্যও! এমন বাহারী সাজ এবং আলোকসজ্জা দেশের খুব কম রেস্টুরেন্টেই দেখা যায়! বিশেষ করে নব্বইয়ের দশকের কেউ এই রেস্টুরেন্টে গিয়ে নস্টালজিক হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক! পুরনো দিনে গানের ক্যাসেট প্লেয়ার, ক্যাসেট ফিতা, অ্যালবাম, পুরনো ধাচের আয়না, চটের থলিতে বিভিন্ন মশলা, খাবার টেবিল, চেয়ার, হাত ধোবার স্থান সবই এক কথায় ভিন্নরকম! 

বীর চট্টলার ডেকোরেশনের কথা বলতে গিয়ে অনেক সময়ই চাপা পড়ে যায় তাদের বাহারী পদের খাবার আর তার স্বাদের কথা। দেশী নানা পদের খাবার এখানে মেলে সবসময়েই। মেনুতে যেমন আছে বিরিয়ানী, পোলাও, কোরমা, রোস্ট, বোরহানী, ঠিক তেমনি আছে সাদাভাত, ডাল, হাস বা মুরগীর রসা ভুনা, রুই, ইলিশ, লইট্টাসহ বিভিন্ন মাছ, বেগুন, টমেটো, ঢেঁড়স, শাক ভাজি কিংবা ভর্তা। ডেকোরেশন আর আইটেম মিলিয়ে দামও যথেষ্ট ন্যায্য। আর স্বাদ? স্বাদ বুঝতে হলে আপনাকে চলে যেতে হবে বন্দরনগরীর জামালখানের এই রেস্তোরাতে।

মেজ্জাইন্না বাড়ি

চট্টগ্রামের খাবারের কথা হবে আর সেখানে মেজবানের কথা থাকবে না তা কী করে হয়? বিখ্যাত মেজবানী গোশতের জন্য চট্টগ্রামে রেস্টুরেন্ট আছে বেশ অনেকগুলো। তবে আমাদের লিস্টে আমরা বলব মেজ্জাইন্না বাড়ির কথা। চট্টগ্রামের বিখ্যাত চাটগাঁইয়া মেজবানির আয়োজন এখানে বেশ জমজমাট। চমৎকার সাজানো গোছানো এই রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায় মেজবানী গোশত, চনার ডাল (ছোলার ডাল), কালো ভুনা, গরুর নলা, আখনী বিরিয়ানি, বোরহানিসহ মুখরোচক নানান সব খাবার। এছাড়াও চালের আটার রুটি, ভুনাখিচুড়ি, সাদা ভাত, সালাদ, মিক্সড সবজি টাইপ আইটেমও এখানে পাওয়া যায়। দামও যথাযুক্ত। মেজ্জাইন্না বাড়ির অবস্থান চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সের পিছে, নাসিরাবাদ হাউজিং এ। নগরীর ২নং গেট থেকে বেশ কাছেই এই রেস্টুরেন্টটি। বিয়ে বা এমন কোন বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্যও ভাড়া দেয়া হয় এই রেস্টুরেন্টিকে। 

হাক্কা চাটগাঁ

ঢাকাতে ফুড কোর্টের আইডিয়া বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যেখানে কয়েকটি ফুড চেইন একটি কমন স্পেস শেয়ার করে কাবার সার্ভ করার জন্য। এতে মানুষ যেমন একটি নির্দিষ্ট স্থানে বিভিন্ন ধরণের খাবার উপভোগ করতে পারে তেমনি রেস্টুরেন্টের জন্যও এই মডেল বেশ লাভজনক। হাক্কা চাটগাঁ অনেকটা এমনই একটি ফুড কোর্ট। এখানে তিনটি রেস্টুরেন্ট একই ছাদের নিচে খাবার সার্ভ করে। হাক্কা চাটগা ছাড়াও এখানে আছে বিখ্যাত ম্যাড সেফ এবং তারকা রেস্টুরেন্ট। তাই ইন্ডিয়ান রেসিপি কিংবা বার্গারের মত ফাস্টফুডের জন্য যেতে পারেন ২ নং গেট আর প্রবর্তক মোড়ের মাঝামাঝি অবস্থানে, পশ্চিম নাসিরাবাদে থাকা এই রেস্টুরেন্টে।      

তাজিংডং

চট্টগ্রামে রেস্টুরেন্ট নিয়ে করা এই তালিকার শেষটা আমরা করব কিছুটা ভিন্নধর্মী এক রেস্টুরেন্টের কথা দিয়ে। দেশে দিনে দিনে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। মানুষ প্রতিদিন ঘুরতে যাচ্ছে বান্দরবানসহ দেশের আনাচে কানাচে। আর সেই থেকেই বিখ্যাত হয়ে উঠছে বান্দরবান কিংবা অন্যান্য পার্বত্য এলাকার বিভিন্ন খাবার। কিন্তু তেমন খাবার যদি আপনি চট্টগ্রামে বসেই খেতে চান? এর সমাধান তাজিংডং এর মত রেস্টুরেন্ট। ভিন্নধর্মী ডেকোরেশন আর ভিন্ন স্বাদের পাহাড়ি খাবার নিয়ে চট্টগ্রাম পোলোগ্রাউন্ড মাঠের পাশে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে এই রেস্টুরেন্টটি। মেনুতে থাকা বিভিন্ন খাবারের আইটেমের সাথে সাথে অবশ্যই পাহাড়ি স্পেশাল মুন্ডি সুপ এবং চাটনি খেতে ভুলবেন না যেন!

কুটুমবাড়ি

চট্টগ্রামের একে খান মোড়ে ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁ। আশরাফুল আহসান রাকিব, রুবেল মোঃ ওয়াজেদুল ইসলাম ও মনির হোসেনের উদ্যোগে 'কম লাভে বেশি বিক্রি' নীতিতে চলা এই রেস্তোরাঁ ৭ বছরের ব্যবধানে চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার মোড়, ওয়াসা মোড় ও চকবাজারে প্রসারিত হয়েছে আরও তিনটি শাখা।

কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁয় রয়েছে ১০০ ধরনের দেশি খাবারের আইটেম। খাসি ব্রেক রোস্ট দিয়ে তৈরি নবাব বিরানি এবং চিকেন কালিয়া চট্টগ্রামে একমাত্র কুটুমবাড়িতেই পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতীত ঐতিহ্যের খাবার জর্দা ভাত, কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর ফিরনির আলাদা কদর আছে গ্রাহকদের মাঝে। গ্রাহকদের সুবিধায় ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এই রেস্তোরাঁ।

এছাড়া সকালে খাসির পায়া, গরুর নেহরি, সুপ, হায়দ্রাবাদ বিরানি, ইরানি মোরগ পোলাও, চিকেন বিরানি, কাচ্চি বিরানি, বিভিন্ন ধরনের ভর্তার জন্য প্রসিদ্ধ কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁ। অনান্য সাধারণ রেস্তোরাঁর তুলনায় এখানে খাবারের দামও খুব বেশি নয়। এছাড়া ডেকোরেশন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে রেস্তোরাঁটি।

এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আহসান রাকিব বলেন, 'শুধুমাত্র ফুড কোয়ালিটির কারণেই অল্প সময়ে কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁ চট্টগ্রামের নতুন ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কোনো খাবার গ্রাহকদের কাছে পরিবেশনের আগেই আমাদের নিজস্ব টিম খাবারের মান পরীক্ষা করে। যদি কখনো খাবারের মান পরিবেশন যোগ্য না হয়, সেটি পরিবেশন করা হয় না। কুটুমবাড়ির বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে টাটকা খাবার।'

চলতি বছরের নভেম্বরে পর্যটন শহর কক্সবাজারে শুরু হয়েছে এই ব্র্যান্ডের নতুন শাখা। পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আরও ৫টি শাখার পাশাপাশি দেশের সকল বিভাগীয় শহরে কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর শাখা খোলা হবে।

জামান হোটেল

চট্টগ্রাম নগরীর আলকরণ মোড়ে ১৯৭৬ সালে যাত্রা শুরু জামান হোটেলের। মোহাম্মদ জামান, মালেকুজ্জামান, নুরুজ্জামান নামে ৩ ভাইয়ের পরিচালনায় পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও ঢাকায় এই হোটেলের ২০টি শাখা প্রসারিত হয়েছে।

শুরুতে চা-পরোটার জন্য চট্টগ্রামজুড়ে এই হোটেলের ব্যাপক কদর ছিল। পরবর্তীকালে দেশি খাবারের জন্য আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এটি। দেশি খাবারের পাশাপাশি জামান হোটেলের মিক্সড সবজি ও মসুর ডালের রয়েছে ব্যাপক কদর।

হোটেলটির তিন উদ্যোক্তার কেউই এখন আর বেঁচে নেই। তাদের সন্তানরা জামান হোটেলের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। এখনো রুচিসম্মত দেশি খাবারের প্রসঙ্গ উঠলেই জামান হোটেলের নাম আসে সবার আগে।

জামান হোটেলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ জামানের ছেলে কায়সার জামান বলেন, 'চট্টগ্রামে খাবার হোটেলের ব্র্যান্ড সৃষ্টি হয়েছে জামান হোটেলের হাত ধরে। বিরানি, সাদাভাত, চিকেন-সহ দেশি সব খাবার পরিবেশন করা হয় এই হোটেলে। গ্রাহকদের সন্তুষ্টির বিষয়টি সবসময় গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।'

ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের ট্রেনের সময়সূচি-Dhaka to North Bengal Train schedule
ঢাকা টু দুবাই বিমান ভাড়া ২০২৩-Air fares from Dhaka to Dubai
বোটানিক্যাল গার্ডেন-National Botanical Garden
নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা-Napittachora Waterfal
সুপ্তধারা ঝর্ণা-Suptadhara Jharna
বেলাই বিল-Belai Beel
নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট,গাজীপুর-nakshatrabari-resort,gazipur
জৈন্তা হিল রিসোর্ট-Jainta Hill Resort
সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ২০২৩-Silk City Express train ২০২৪
মারায়ং তং ভ্রমণ গাইড ও ক্যাম্পিং - Marayang Tong Travel Guide & Camping