![আউটসোর্সিং এর জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট আউটসোর্সিং এর জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট](https://agami24.com/uploads/2022/03/photos/Popular-website-for-outsourcing-6229b3103a0ea.webp)
আউটসোর্সিং এর জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট
ওয়েব ওয়ার্ল্ডে প্রচুর নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে আউটসোসিং বা ফ্রিল্যান্সিং অন্যতম। এসব প্লাটফর্মে কাজ করতে হলে আপনাকে ভাল ভাল আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট এর সাথে যুক্ত হতে হবে।
বেশিরভাগ সংস্থাগুলি প্রায়ই তাদের কিছু কাজ অন্য দেশের অন্যান্য কর্মীদের কাছে আউটসোর্স করে। এসব আউটসোর্স কাজের জন্য অনেক ওয়েবসাইট আছে। কিন্তু সবগুলো সাইটই যে ভালো বা আপনার জন্য উপযুক্ত হবে এমন নয়। কারণ, একেক ওয়েবসাইটের একেক ধরণের। যেমন – কোথাও নির্দিষ্ট ধরণের কাজ পাওয়া যায় আবার কিছু সাইট কেবল দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের জন্য আবার কিছু সাইট আছে যা সবার জন্য উন্মুক্ত।
আউটসোর্সিং কি? (What is outsourcing)
আউটসোর্সিং সম্পর্কে আমরা এতো সময় একটু কিছু জানতে পেরেছি। তাই সরাসরি আউটসোর্সিং এর সংজ্ঞা না দিয়ে একটি উদাহরণের মাধ্যমে আপনাদের আউটসোর্সিং সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
আমি আশাকরি এই উদাহরণ পড়ার পরে আপনারা আউটসোর্সিং কি সেটা নিজেরা বুঝতে পারবেন।
উদাহরণঃ ধরুন আপনার একটি মুদির দোকান আছে। আপনার দোকানের সমস্ত মালামাল বিক্রি করার জন্য কয়েক জন কর্মচারী রয়েছে যাদের মাধ্যমে আপনি যাবতীয় কর্মকাণ্ড গুলো করিয়ে নিতে পারেন।
এখন আপনার মুদির দোকানের সমস্ত মালামাল ক্রয় বিক্রয় করার জন্য অন্য কোনো লোক নিতে হচ্ছে না। এখন আপনি মুদি দোকানের জন্য যদি একটি ওয়েবসাইটের প্রয়োজন হয়, তাহালে কি আপনার কর্মচারীদের দিয়ে সেটা করতে পারবেন না।
কারণ, যারা মুদি দোকানে কাজ করে তারা ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানে না। তাই এর জন্য আপনাকে একজন ওয়েব ডেভেলপার এর সাথে কন্টাক করে একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে হবে।
এখন আপনি দুইটি উপায় কন্টাক করে একজন ওয়েব ডেভেলপার এর কাজ থেকে ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন। একটি হলো অনলাইনে কোনো ফ্রিল্যান্সারের সাথে কন্টাক করে ওয়েবসাইট তৈরি করে নেওয়া এবং অপরটি হলো সরাসরি কন্টাক করে ওয়েবসাইট তৈরি করে নেওয়া।
এখানে আপনাকে অনলাইন বা অফলাইন যে কোনো একটি ক্ষেত্রে ওয়েব ডেভেলপারের সাথে কন্টাক করে কাজটি করিয়ে নিতে হবে।
এখানে আপনি একটি বিষয়ে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন যে, আপনি একজন ওয়েব ডেভেলপারকে দোকানে কর্মচারী হিসাবে নিয়েগ না দিয়ে তার সাথে কন্টাক এর মাধ্যমে কাজটি করে নিলেন
সেহেতু এখানে আপনার খরচ বেঁচে যাচ্ছে। আর আপনি যদি একজন ডেভেলপারকে দোকানে নিয়োগ করে ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে গেলে তাকে মাসে অনেক টাকা বেতন দিতে হত।
অথচ আপনি যখন কন্টাক এর মাধ্যমে বাহিরের একজনের কাজ থেকে কাজটা করে নিলেন তখন কিন্ত আপনার অনেক খরচ কম হচ্ছে।
এবার মূল কথায় আসা যাক। এখানে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য দুইটি পক্ষ রয়েছে। একটি হলো আপনি এবং অপরটি হলো ওয়েব ডেভেলপার।
এখন আপনি ওয়েব ডেভেলপারকে দিয়ে আপনার দোকানে নিয়োগ না দিয়ে বাহিরের সোর্স থেকে ডেভেলপারকে দিয়ে যে কাজ করিয়ে নিলেন সেটা হলো আউটসোর্সিং এবং যে ব্যাক্তি অনলাইনের মাধ্যমে কাজটি করে দিয়েছেন তিনি হলো ফ্রিল্যান্সার।
সহজে বলতে গেলে, আপনি যে কাজটি আপনার দোকানের কর্মচারীদের দিয়ে না করিয়ে বাহিরের সোর্স থেকে কাজটি করিয়ে নেওয়ার কারণে আপনি আউটসোর্সিং করেছেন।
তাহালে এখানে আপনি হচ্ছেন একজন আউটসোর্সার এবং আপনি যাকে দিয়ে কাজ করিয়েছেন তার ক্লায়েন্ট হিসাবে আপনি আউটসোর্সিং করেছেন।
পক্ষান্তরে আপনার কাজটি যে করে দিয়েছে সে হলো ফ্রিল্যান্সার। মানে যে আপনার কোম্পানির কাজ করে টাকা আয় করছে সে কখনো আউটসোর্সিং করছেন না। যে কাজটা করিয়ে নিবে সে আউটসোর্সিং করছে।
Outsourcing শব্দটি ইংরেজি outside resourcing থেকে আনা হয়েছে।
এখানে,
Out (বাহিরের) + Sourcing (উৎস) = Outsourcing (বাহিরের উৎস)।
সহজে ভাষায় আউটসোর্সিং কি?
এক কথায় আউটসোর্সিং বলতে নিজের সোর্সের বাহিরে অন্য কোনো সোর্স হতে কোনো ব্যাক্তির সাথে কন্টাক করে কোনো কাজ করে নেওয়াকে আউটসোর্সিং বলে।
আবার, অন্যভাবে বলা যায় কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করিয়ে নেওয়াকে আউটসোর্সিং বলে। আর যারা এই আউটসোর্সিং এর কাজ করে তাদেরকে ফ্রিল্যান্সার বলে।
মনে রাখবেন, এই আউটসোর্সিং কাজ শুধু অনলাইন ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে করানো হয় সেটা কিন্ত নয়। অনলাইন ছাড়াও অফলাইনের মাধ্যমে কোনো ব্যাক্তিকে কোম্পানিতে নিয়োগ না দিয়ে কন্টাকের মাধ্যমে কোনো কাজ করিয়ে নেওয়াকে আউটসোর্সিং এর আওতায় পড়ে।
আউটসোর্সিং এর সুবিধা
কাজ করার স্বাধীনতা
সময়ের স্বাধীনতা অর্থাৎ কাজ করার নির্ধারিত কোন সময় নেই। আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী যেকোনো সময় কাজ করতে পারবেন।
কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্ত থেকে কাজ করা যায়।
কোম্পানী বা ক্লায়েন্ট চয়েস করার দারুণ সুবিধা।
চাকরির চেয়ে বেশি আয় করা যায়।
নিজের যোগ্যতা/মেধাকে সঠিক জায়গায় কাজে লাগানোর সুযোগ।
শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান সম্ভব।
সময় বাঁচে ইত্যাদি ।
আউটসোর্সিং কেন করা হয়?
মনে করুন, আপনার একটি কোম্পানি আছে সেখানে ৩০ জন কর্মচারী কাজ করেন। এদের মধ্যে ১০ জনকে দিয়ে সফটওয়্যারের কাজ করান। আরো ১০ জনকে দিয়ে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করান। আর বাকি ১০ জন কোম্পানি অন্যান্য কাজ গুলো দেখাশুনো করেন।
এবার দেখা গেলো আপনার কোম্পানির মাসে ৩/৪ লোগো ডিজাইন করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্ত আপনার কোম্পানিতে যে কর্মচারীরা রয়েছে তাদের দিয়ে লোগো ডিজাইন করা সম্ভব না।
এক্ষেত্রে খুব কম সময়ের জন্য আপনার লোগো ডিজাইন করার প্রয়োজন হয় বলে আপনি কি কোম্পানিতে একজন লোগো ডিজাইনার নিয়োগ করবেন? আপনি যদি একজন লোগো ডিজাইনার কোম্পানিতে স্থায়ি ভাবে নিয়োগ দেন তাহালে প্রত্যেক মাসে অনেক টাকা বেতন দিতে হবে।
কোম্পানির খরচের কথা চিন্তা করে বাহিরের সোর্স থেকে একজন লোগো ডিজাইনার কে দিয়ে কাজ করিয়ে নিবেন। এতে কর্মচারীকে না রেখে বাহিরে হতে কাজ করানোর জন্য আপনার খরচ অনেক কম হচ্ছে।
মূলত কোনো কোম্পানির খরচ কমানোর জন্য এবং অল্প খরচে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য আউটসোর্সিং করা হয়।
আউটসোর্স কি কি কাজ করা যায়?
গ্রাফিক্স ডিজাইন
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
কাস্টমার সার্ভিস
কপিরাইটিং
ডিজাইন এবং ম্যানুফ্যাকচারিং
মার্কেটিং ও সেলস
অ্যাকাউন্টিং এবং বুককিপিং
আরো অনেক কিছু
আউটসোর্সিং কিভাবে শিখব?
আপনারা হয়তো উপরের লেখা গুলো পড়ে পরিস্কার বুঝতে পারছেন আউটসোর্সিং করার জন্য শেখার কিছুই নেই।
কারণ, আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম হয় না, মূলত আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়। তাই আউটসোর্সিং করার জন্য আপনাকে কোনো কিছু শিখতে হবে না।
তবে, আপনি যদি মনে করেন আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হবেন তাহালে অবশ্যই অনেক কিছু শিখতে হবে।
কিভাবে আউটসোর্সিং থেকে আয় করবেন?
আমি আগেও বলেছি আউটসোর্সিং থেকে টাকা আয় করা বলতে কিছুই নেই। যে কোম্পানি গুলো আউটসোর্সিং করে তারা মূলত কম খরচে ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য আউটসোর্সিং করেন।
আপনি যদি অনলাইন ইনকাম করে টাকা আয় করতে চান তাহালে অবশ্যই আপনাকে ফ্রিল্যান্সার হতে হবে। মনে রাখবেন, আউটসোর্সিং এর সাথে আয়ের সম্পর্ক নেই। তাই আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে টাকা আয় করার কোনো সুযোগ থাকছে না।
আউটসোর্সিং এর জন্য সেরা ওয়েবসাইট
আজ আমি আউটসোর্সিং এর জন্য সেরা ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা করব। আপনি আপনার ইচ্ছে মত, আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতার সাথে মিলে যায়, এমন আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে কাজ করতে পারেন।
পৃথবী ব্যাপী কোম্পানীগুলোর কাজের ধরণ পাল্টে গেছে। অধিকাংশ কোম্পানীই এখন সরাসরি লোকজন নিয়োগ না দিয়ে তাদের সব ধরণের অফিসিয়াল কাজগুলো আউটসোর্স মার্কেটগুলো থেকে করিয়ে নেয়।
ছাত্রাবস্থায় যেসব কাজ করা যায় তাদের মাঝে আউটসোর্সিং অন্যতম। পড়াশুনা শেষ করে বা পড়াশুনায় থাকা অবস্থাতেই নিজের খরচ নিজে চালানোর জন্য আউটসোর্সিং করে থাকে। চাকরির থেকে চার গুন বেশি ইনকাম করে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি আয় করে। সেরা আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট হলোঃ
Upwork- Best Freelancing Website
Fiverr – Freelance Services Marketplace
Toptal-Best Professional Freelancing Website
Freelancer-Hire the best freelancers for any job, online
College recruiter
Guru-Get A Suitable Freelance Job
PeoplePerHour – Best Outsourcing Website
99Designs – Freelance Website For Designers
IFreelance – One Of The Best Freelancing Site
SimplyHired – Get A Online Job
Upwork
Upwork একটি জনপ্রিয় আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট। Upwork এর পুরনো নাম ওডেক্স। এটি, একটি আমেরিকান ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য উদ্যোগ এবং ব্যক্তিরা সংযোগ স্থাপন করে। ২০১৫ সালে, এল্যান্স-ওডেস্ক সংযুক্তিটিকে Upwork হিসাবে পুনরায় ব্র্যান্ড করা হয়েছিল এবং সংস্থার পুরো নামটি এখন আপওয়ার্ক গ্লোবাল ইনক।২০১৫ সালে ক্যাম্পবেল, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।এর সদর দপ্তর সান্টা ক্লারা, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। স্ট্রেটিস করমণলাকিস, ওডিসিয়াস স্যাটালোস এর প্রতিষ্ঠাতা।
ইলেন্সের সাথে এক হয়ে Upwok নাম এখন আরও বড় ও বিস্তৃত। এটি প্রায় ২ মিলিয়ন Client আর ৯ মিলিয়ন Freelancer এর সবচেয়ে বড় আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস । এখানে সবধরনের (যেমন- ছোট, বড়, স্বল্প-মেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী ইত্যাদি) লক্ষ লক্ষ কাজ রয়েছে।
Upwork এ ফিক্সড রেট এবং ঘন্টা হিসেবে কাজ করা যায়। ফিক্সড রেট কাজের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টরা সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার জন্য একটা নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট ঠিক করে দেয় আর ফ্রিল্যান্সাররা নিজেদের ডিমান্ডের সাথে মিলে কাজটি করার জন্য প্রপোজাল দেয়।সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়ে গেলে Client পেমেন্ট করে দেয়। ফিক্সড অ্যামাউন্টের কাজের পেমেন্টের ক্ষেত্রে Upwork কোন দায়িত্ব নেয় না।
Upwork এ ঘন্টা ভিত্তিক কাজই অধিক জনপ্রিয় । কাজের ধরণ অনুযায়ী ক্লায়েন্ট প্রতি ঘন্টার জন্য একটা নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট ঠিক করে দেয়। আর Freelancer রা বিট করে আরো বাড়িয়ে নিয়ে কিংবা ওই অ্যামাউন্টেই কাজ নিয়ে করতে শুরু করে।
Upwork এর অটোমেটিক টাইম ট্রেকার প্রতি মূহুর্তের কাজের ডাটা সংগ্রহ করে রাখে আর বায়ার সেগুলো দেখে শিওর হয় যে তার কাজে কোন ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে কিনা। পেমেন্টের ক্ষেত্রেও কোন জালিয়াতি করার উপায় নেই, কারণ সেই দায়িত্বও আপওয়ার্ক নিয়ে নেয়।ঘন্টা হিসেবে কাজ করলে এক ঘন্টা পার হলেই এই এক ঘন্টার পেমেন্ট আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যায়।
ঘন্টা হিসেবে কাজ দেশে বসে চাকরি করার মতই।কোন একটি অফিসে চাকরি করলে আপনি ৮ ঘন্টা বা কিছুটা কম বেশি সময় নিয়ে কাজ করতেন এবং কাজের সময়ও কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করত। এতে আপনার কিছু করার নেই। প্রতিদিন ইনটাইম অফিসে যেতেই হবে, নাহলে চাকরি থাকবে না। আর এখানে পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করে। আপনি যখন খুশি মন চাইলে কাজ করবেন, নাহলে করবেন না।
আপনার প্রোফাইলেই আপনি নির্ধারণ করে দিতে পারেন দিনে আপনি কয় ঘন্টা কাজ করবেন। আপনার ইচ্ছে মত যত ঘন্টা খুশি আপনি তত ঘন্টাই কাজ করতে পারবেন, এখানে বাধা দেয়ার কেউ থাকবে না। তাহলে আজই শুরু করে দিন।
আপওয়ার্কে দক্ষ অদক্ষ সবার জন্যই সমান কাজের সুবিধা রয়েছে।তবে আপনি দক্ষ হলে অনায়াসে কাজ পেয়ে যাবেন। অদক্ষ হলে আপনার জন্য অপশন হচ্ছে ‘entry-level’ এ জয়েন করা। শুরুর দিকে কাজ পেতে একটু সময় লাগবে। কিন্তু একবার একটা কাজ পেয়ে সেটাকে তাদের আশানুরূপ সম্পন্ন করে দিতে পারলে ধীরে ধীরে আপনার কাজ বাড়তে থাকবে।
Fiverr
২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করা Fiverr অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোর তুলনায় বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছে। নতুন অবস্থায়, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মানুষেরা প্রত্যেকেই আমাকে Fiverr দিয়ে আউটসোর্সিং এর ক্যারিয়ার শুরু করতে বলেছিল। কারণ, এটি নতুনদের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী এবং সহজ।
আপনি যদি আউটসোর্সিং এ একদম নতুন হয়ে থাকেন এবং কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আউটসোর্সিং শুরু করবেন, তা বুঝে উঠতে না পারেন, তবে নিশ্চিন্তে ফাইবারে এ্যাকাউন্ট খুলে কাজ শুরু করে দিন।
ফাইভারে সর্বনিম্ন ৫ ডলার থেকে শুরু করে মোটামুটি ভালো পরিমাণ টাকার কাজ পোস্ট করা হয়। এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং, লোগো ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, অনুবাদ, অডিও ও ভিডিও ইডিটিং এর মতো কাজগুলোর চাহিদা ব্যাপক।
এখানে প্রতিটি প্রজেক্ট সম্পন্ন করার জন্য ক্লায়েন্ট আপনাকে যত টাকা দেবে, তার ২০% কেটে রাখবে ফাইবার। অন্যান্য প্লাটফর্মের মতো ঘন্টাভিত্তিক কোনো কাজ এখনো এখানে চালু হয়নি, এখানে শুধু ফিক্সড রেটের কাজই পাওয়া যাবে।
পেপাল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফার পদ্ধতিতে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ফাইবার থেকে আয় করা টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
Toptal
টপটাল একটি গ্লোবাল রিমোট সংস্থা যা একটি ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে যা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ডিজাইনার এবং ব্যবসায় পরামর্শদাতাদের সাথে ব্যবসায়গুলিকে সংযুক্ত করে।২০১০ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রেনডেন বেনেসকোট, তাসো ডু ভ্যাল এর প্রতিষ্ঠাতা।সিলিকন ভ্যালিতে এর সদর দপ্তর অবস্থিত।
টেকনোলোজি লাভারদের জন্য জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হচ্ছে Toptal. এই সাইটটি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কিংবা একজন ওয়েব ডেভলপার অথবা সিস্টেম অ্যানালাইজারদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী ।আপনি টপটালে শীর্ষ বিকাশকারী, ডিজাইনার এবং আর্থিক বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে পারেন
এখানে সবই ডেভেলপমেন্ট রিলেটেড কাজ অন্যান্য কাজ নেই বললেই চলে । এখানে ক্লায়েন্টের সংখ্যাও সামান্য ।
এই সাইটের প্রধান প্রধান ক্লায়েন্ট হলোঃ
জেপিমরগান
জেনডেক্স
এয়ারবিএনবি ইত্যাদি।
এরকম ফ্ল্যাটের কাজ করতে পারলে আপনার ক্যারিয়ার দাঁড়িয়ে যাবে।
যতটা সহজ ভাবছেন আসলে অতোটা সহজ নয়; আবার তেমন কঠিনও নয়, যতটা আপনি ভয় পাচ্ছেন। Toptal এর স্ক্রিন প্রপেস পার হতে পারলেই আপনি এখনে ইন্টারভিউ দেওয়ার সুযোগ পাবেন। আপনার যদি এর জন্য যোগ্যতা থাকে, অবশ্যই আপনি ইন্টারভিউ দিয়ে টিকে যাবেন। আর সফল হয়ে গেলেই আপনি ১০০% নিশ্চিত হতে পারেন যে, আপনি নিজ দেশে বসে বিদেশে চাকরি পাচ্ছেন। এসব কোম্পানীগুলোর কাজ চাকরি থেকেও অনেক বড় কিছু।
Freelancer
আউটসোর্সিং ওয়েবসাইট গুলোর মধ্যে আরেকটি অন্যতম ওয়েবসাইট হলফ্রিল্যান্সার। ফ্রিল্যান্সার একটি অস্ট্রেলিয়ান ক্লাউড সোর্সিং মার্কেটপ্লেস ওয়েবসাইট, যা সম্ভাব্য নিয়োগকারীদের এমন পোস্ট করতে দেয় যা ফ্রিল্যান্সাররা এরপরে সম্পূর্ণ বিড করতে পারে।Matt Barrie ২০০৯ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এর সদর দফতর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থিত। এছাড়াও ভ্যানকুভার, লন্ডন, বুয়েনস আইরেস, ম্যানিলা এবং জাকার্তাতেও এর অফিস রয়েছে। অসংখ্য লোক এটি ব্যবহার করে। জুলাই 7, 2020 এর হিসাব অনুযায়ী এর ব্যবহার কারীর সংখ্যা 45,618,783 জন।
আপনার যদি প্রতিযোগীতার মন মানসিকতা থাকে, নিজেকে যদি আউটসোর্সিং কাজের জন্য তৈরি করে নিয়ে থাকেন, তাহলে ফ্রিল্যান্সার আপনার জন্য কাজের ফ্রিডম রেখে দিয়েছে। আপনি খুব সহজে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাজ করতে পারেন।
বর্তমানে অনেকে পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিলান্সিং করে ইনকাম করে নিজের খরচ নিজেই চালাচ্ছে। অনেকে আবার চাকরির আশা বাদ দিয়ে এসব করে চাকরির চেয়ে ডাবল ইনকাম করছে। নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী যেকোনো সময় কাজ করা যায়।
অন্যান্য ওয়েবসাইটগুলোর সাথে এ সাইটের প্রধান পার্থক্য হচ্ছে, এখানে আপনাকে অন্য ফ্রিল্যান্সারের সাথে প্রতিযোগীতা করে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে হয়। এতেই খুলে যাবে আপনার আয়ের উৎস, ভবিষ্যৎ সম্ভাবণার দ্বার।
College recruiter
নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে এই সাইট হচ্ছে কলেজ ছাত্রদের জন্য।১৯৯১ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।College recruiter বিশ্বাস কর যে প্রতিটি ছাত্র এবং সাম্প্রতিক গ্রেজুয়েট প্রাপ্ত ছাত্ররা দুর্দান্ত খণ্ডকালীন, মৌসুমী, ইন্টার্নশিপ, বা এন্ট্রি-স্তরের চাকরীর যোগ্য । এখানে সবাই সবার কলিগ, সবাই একে অপরকে বিভিন্ন টিপস দিয়ে সাহায্য-সহযোগীতা করে , কাজ পাইয়ে দেয়। আপনার কাজ হচ্ছে অন্যদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করা এবং সে সম্পর্ককে গভীর করা।
কিন্তু এটাই আপনার প্রধান কাজ নয়, প্রধান কাজ হচ্ছে ক্লায়েন্টের কাজ। ক্লায়েন্টরা মূলত কিছুটা কম টাকায় কাজ করিয়ে নেয়ার জন্য এখানে আসে।এখানে যারা কাজ করে দেয় তাদের প্রায় সবাই স্টুডেন্ট, কারণ সাইটাই প্রধানত স্টুডেন্টদের জন্যই করা।
আপনি যদি পড়াশুনার মাঝে থেকে থাকেন, তাহলে আপনারও জন্যও রয়েছে College recruiter এড হয়ে বাড়তি উপার্জনের সুযোগ।
Guru
অনলাইনে ফ্রিল্যান্সারদের সন্ধান এবং নিয়োগ দেওয়ার জন্য Guru অন্যতম সেরা ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইট। ১৯৯৮ সালে সান ফ্রান্সিসকো, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।পিটসবার্গ, পেনসিলভেনিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর সদর দপ্তর অবস্থিত।ইন্দর গুগলানি, জেমস স্লেভেট এর প্রতিষ্ঠাতা।
ফ্রিল্যান্সাররা ফ্রিল্যান্স কাজের জন্য এবং এছাড়াও কাজের জন্য অনুসন্ধান করতে পারে।এ ওয়েবসাইটে প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারকেই একটি করে ওয়ার্ক রুম দেয়া হয়।আপনি আপনার রুমে বসেই কাজ করবেন। আপনার ইচ্ছেমত নিজের মত করে সাজিয়ে নেবেন নিজের রুম,সেখানে রাখবেন পুরনো কাজের উদাহরণ যা দেখে ক্লায়েন্টরা সহজে আপনাকে চিনবে, আপনার কাজ সম্পর্কে ভাল ধারণা নিতে পারবে।
এর একটি দারুণ সুবিধা হচ্ছে,এ সাইটের অটোমেটিক ক্রলার খুঁজে খুঁজে যে কাজগুলো আপনার জন্য প্রয়োজন সেগুলো আপনার রুমের টেবিলে এনে রাখবে যাতে আপনি সেগুলো দেখে খুব সহজেই নিজের পছন্দ অনুযায়ী কাজটি করতে পারেন।
PeoplePerHour
লন্ডন ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একটি জনপ্রিয় আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসের নাম পিপল পার আওয়ার। নাম দেখেই নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, এখানে ঘন্টা ভিত্তিক রেটে কাজ পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে ঘন্টাভিত্তিক পদ্ধতির পাশাপাশি এখানে ফিক্সড রেটের কাজের সুযোগও তৈরী করা হয়েছে।
এই প্লাটফর্মে প্রতিযোগিতা খুব বেশি। প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য সর্বনিম্ন ২০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। আয় করা টাকার ১৫ থেকে ২০% প্লাটফর্মটি নিযে রেখে দেয়।
পিপল পার আওয়ার ওয়েবসাইটটির পেমেন্ট পদ্ধতি পেপাল, স্ক্রিল, পেওনিয়ার এবং ব্যাংক ট্র্যান্সফারকেন্দ্রিক।
99Designs
যারা ডিজাইন সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চায়, তাদের কাছে ৯৯ডিজাইনস খুবই প্রিয় একটি ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইটটি অনলাইন ডিজাইনের জন্য জনপ্রিয় যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্র্যানসিস্কোকেন্দ্রিক গড়ে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীনির্ভর।
এখানে ডিজাইন কিনতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা তাদের কেমন ডিজাইন লাগবে, তা বিস্তারিতভাবে লিখে একটি কনটেস্টের আয়োজন করে। ডিজাইনাররা ক্লায়েন্টের প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য সেই অনুযায়ী ডিজাইন সাবমিট করে। ক্লায়েন্ট তার পছন্দসই ডিজাইনটি কিনে নেয় এবং ডিজাইন মেকারকে পূর্বনির্ধারিত পরিমাণ অর্থ প্রদান করে।
এখানে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা এবং আয়ের পরিমাণ উভয়ই অত্যন্ত বেশি। প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য এভারেজ ১৯৯ ডলার ইনকাম করা যায়। পেমেন্ট পদ্ধতি পেওনিয়ার এবং পেপালকেন্দ্রিক।
IFreelance
আপনি যদি এ্যাকাউন্টিং, মার্কেটিং, ডিজাইনিং, প্রোগ্রামিং এবং কনটেন্ট রাইটিং এর মতো ক্যাটাগরিতে কাজ করে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, তবে Ifreelance ওয়েবসাইটটিতে এ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
এখানে প্রোফাইল খুলে আপনি কি কি সেবা দিতে পারবেন, সেটা লিখে অফার আকারে প্রদর্শন করার মাধ্যমে প্রজেক্টের অর্ডার পাওয়া যায়। অথবা ক্লায়েন্টের পোস্ট করা কাজে বিডিং এর মাধ্যমেও অর্ডার পাওয়া যেতে পারে।
সমস্যা হলো, Ifreelance সাইটে রেজিষ্ট্রেশন করা অন্যান্য সাইটের মতো ফ্রি নয়। এখানে যুক্ত হতে হলে আপনাকে পেইড মেম্বারশীপ প্যাকেজ কিনতে হবে। তবে অন্যান্য সাইটের মতো এই সাইটটি প্রতিটি কাজের জন্য আপনার প্রাপ্ত মুনাফায় ভাগ বসাবে না। ক্লায়েন্ট যা দেবে, পুরোটা আপনি একাই পাবেন।
SimplyHired
আউটসোর্সিং এর ক্ষেত্রে কাজের বৈচিত্র্যের বিষয়ে তুলনা করলে SimplyHired এর প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ নেই। এখানে প্রযুক্তি থেকে শুরু করে ঘর বাড়ি তৈরীর ইঞ্জিনিয়ারের কাজ পর্যন্ত পাওয়া যেতে পারে। এই ওয়েবসাইটটির কাজগুলো শুধুই অনলাইনে সীমাবদ্ধ থাকে না। অফলাইনেও কাজ করার অনেক অফার এখানে পাওয়া যায় এখানে।
প্রায় ২৪ টি দেশের মানুষেরা এই ওয়েবসাইটে সক্রিয়ভাবে কাজের অফার দিচ্ছে কিংবা কাজ খুঁজছে। তাই এর সাইটের ব্যপ্তি অনেক বেশি।
SimplyHired প্লাটফর্মটি সবময়ই মানসম্মত অথোরিটি মেইনটেইন করার চেষ্টা করে। এখানে কাজের অফারের পাশাপাশি এই প্লাটফর্মের বিভিন্ন ব্যক্তির সফলতা ব্যর্থতার গল্প, ক্যারিয়ার বিষয়ক পরামর্শ ইত্যাদী আর্টিকেল আকারে প্রকাশ করে।
আমাদের শেষ কথা
এই আর্টিকেলের Freelancing Sites List এ উল্লেখিত প্রতিটি সাইটই সমানভাবে বিশ্বস্ত। আপনি এখানে উল্লেখিত যেকোনো সাইটে নিশ্চিন্তে এ্যাকাউন্ট খুলে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।
অনেকের প্রশ্ন থাকে, শুধু একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট এ সক্রিয় থাকব, নাকি একাধিক সাইটে এ্যাকাউন্ট খুলে কাজ খুঁজবো।
এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো, একাধিক সাইটে এ্যাকাউন্ট খুলে রাখুন। তাহলে দ্রুত কাজ পাবেন। প্রথম অবস্থায় শুধু একটি সাইটের উপর নির্ভর করে বসে থাকলে কাজ পাওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পরিশেষে বলব, এই লেখাটি আপনার উপকারে এলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং নিয়মিত এমন লেখা পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন।