নামাজে হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে কী নামাজ ভেঙে যাবে?
নামাজ মুমিনের শ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম ইবাদত। নামাজে তাই সার্বক্ষণিক সুস্থির ও পূর্ণ মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করতে হয়। কিন্তু এরপরও অনেক সময় নানা চিন্তাভাবনা চলে আসে। আগের-পরের কত কথা যে মনে পড়ে তার হিসাব নেই। ফলে কিছু কিছু মুসল্লি মাঝেমধ্যে নামাজের রাকাত সংখ্যাও ভুলে বসেন।
নামাজে মনোযোগহীনতার রোগটি নিন্দনীয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) এটিকে ‘শয়তানের ছিনতাই’ বলেছেন। মনোযোগ ও একাগ্রতা ধরে রাখতে রাসুল (সা.) বলেন, ‘এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করো, যেন তাকে তুমি দেখতে পাচ্ছো। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন।’ -(বুখারি, হাদিস : ৫০; মুসলিম, হাদিস : ৮)
আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সুন্দরভাবে অজু করে, অতঃপর মন ও শরীর একত্র করে (একাগ্রতার সঙ্গে) দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, (অন্য বর্ণনায় এসেছে, যেই নামাজে ওয়াসওয়াসা স্থান পায় না) তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১৫১; বুখারি, হাদিস : ১৯৩৪)
নামাজ পড়ার সময় নিজে হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে নামাজ ভেঙে যাবে না। এ বিষয়ে আলেমরা বলেন, নামাজে হাঁচি এলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ না বলাই নিয়ম। তবে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ যেহেতু জিকিরের শব্দ, তাই তা বলে ফেললেও নামাজ নষ্ট হবে না। সুতরাং কেউ ভুলে অভ্যাসবশত হাঁচির পর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে ফেলে নামাজ হয়ে যাবে। এই নামাজ পুনরায় পড়তে হবে না। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/১২০; হালবাতুল মুজাল্লী : ২/৩৯৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া : ২/৩১৭; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলালমারাকি : পৃ. ১৭৮)
রাসুল (সা.) বলেছেন,
إِنّ هَذِهِ الصّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التّسْبِيحُ وَالتّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ.
নামাজে কারো সাথে কথা বলার সুযোগ নেই। নামাজ শুধু তাসবিহ, তাকবি ও কুরআন তিলাওয়াত। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৩৭)
তাই নামাজ অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুল করে কাউকে সম্বোধন করে কিছু বললে বা সালাম দিলে নামাজ ভেঙে যাবে। শুধু নিজে শুনতে পায় এতটুকু নিচু আওয়াজে কথা বলে ফেললেও নামাজ ভেঙে যাবে।
কেউ যদি নামাজ আদায়রত ব্যক্তিকে সালাম দেয়, নামাজি ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুল করে সশব্দে অর্থাৎ মুখে সালামের উত্তর দিলে নামাজ ভেঙে যাবে।