কাকে যাকাত দিবেন ?

যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি ও পবিত্রতা। ইসলামের পরিভাষায় শরীয়তের নির্দেশ এবং নির্ধারণ অনুযায়ী নিজের মালের একটি নির্দিষ্ট অংশের স্বত্বাধিকার কোন অভাবী লোকের প্রতি অর্পণ করাকে যাকাত বলা হয়।যাকাত প্রদানে সমর্থ প্রত্যেক মুসলমানের উপর এই উদ্দেশ্যে ফরজ করা হয়েছে যে, আল্লাহ্ এবং বান্দার হক আদায় করে তার অর্থ-সম্পদ পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয়ে যাবে এবং তার নিজের আত্মা ও তার সমাজ কৃপণতা, স্বার্থান্ধতা, হিংসা, বিদ্বেষ প্রভৃতি অসৎ প্রবণতা থেকে মুক্ত হবে। অন্যদিকে তার মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা, ঔদার্য, কল্যাণ কামনা. পারস্পরিক সহযোগিতা, সহানুভূতির গুণাবলী বৃদ্ধি লাভ করবে।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআন মজীদে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম কর এবং যাকাত আদায় কর' সূরা আল-বাকারা, আয়াত নং-৪৩

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘পাঁচটি বস্তুর উপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ স: তাঁর বান্দা ও রাসূল; নামাজ কায়েম করা; যাকাত আদায় করা; বায়তুল্লাহ্র হজ্জ করা এবং রমযানের রোজা রাখা'। বোখারী এবং মুসলিম শরীফ

যাকাত বন্টনের খাত সমূহঃ মহান আল্লাহ নিজেই যাকাত ব্যয় বন্টনের খাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।

যাকাত বন্টনের নির্ধারিত ৮টি খাতের বিবরণঃ

১।  ফকীরঃ ফকীর হলো সেই ব্যক্তি যার নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। যে ব্যক্তি রিক্তহস্ত, অভাব মেটানোর যোগ্য সম্পদ নেই, ভিক্ষুক হোক বা না হোক, এরাই ফকীর। যে সকল  স্বল্প সামর্থ্যের দরিদ্র মুসলমান যথাসাধ্য চেষ্ট করা সত্ত্বেও বা দৈহিক অক্ষমতাহেতু প্রাত্যহিক ন্যায়সঙ্গত প্রয়োজনটুকু মেটাতে পারে না, তারাই ফকীর।

২। মিসকীনঃ  মিসকীন সেই ব্যক্তি যার কিছুই নেই, যার কাছে একবেলা খাবারও নেই। যে সব লোকের অবস্থা এমন খারাপ যে, পরের নিকট সওয়াল করতে বাধ্য হয়, নিজের পেটের আহারও যারা যোগাতে পারে না, তারা মিসকীন। মিসকীন হলো যার কিছুই নেই, সুতরাং যার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ অর্থ সম্পদ নেই, তাকে যাকাত দেয়া যাবে এবং সেও নিতে পারবে

৩। আমেলীনঃ  ইসলামী সরকারের পক্ষে লোকদের কাছ থেকে যাকাত, উসর প্রভৃতি আদায় করে বায়তুল মালে জমা প্রদান, সংরক্ষণ ও বন্টনের কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ। এদের পারিশ্রমিক যাকাতের খাত থেকেই আদায় করা যাবে। কুরআনে বর্ণিত আটটি খাতের মধ্যে এ একটি খাতই এমন, যেখানে সংগৃহীত যাকাতের অর্থ থেকেই পারিশ্রমিক দেয়া হয়।

৪। মুআলস্নাফাতুল কুলুবঃ  নতুন মুসলিম যার ঈমান এখনও পরিপক্ক হয়নি অথবা ইসলাম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক অমুসলিম। যাদের চিত্ত (দ্বীন ইসলামের প্রতি আকর্ষণ করে) আকর্ষণ ও উৎসাহিত করণ আবশ্যকীয় মনে করে যাকাত দান করা হয়, যাতে তাদের ঈমান পরিপক্ক হয়।

৫। ক্রীতদাস/বন্দী মুক্তিঃ  এ খাতে ক্রীতদাস-দাসী/বন্দী মুক্তির জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে। অন্যায়ভাবে কোন নিঃস্ব ও অসহায় ব্যক্তি বন্দী হলে তাকেও মুক্ত করার জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে।

৬। ঋণগ্রস্থঃ   এ ধরণের ব্যক্তিকে তার ঋণ মুক্তির জন্য যাকাত দেয়ার শর্ত হচ্ছে- সেই ঋণগ্রস্থের কাছে ঋণ পরিশোধ পরিমাণ সম্পদ না থাকা।

৭। আল্লাহর পথেঃ সম্বলহীন মুজাহিদের যুদ্ধাস্ত্র/সরঞ্জাম উপকরণ সংগ্রহ এবং নিঃস্ব ও অসহায় গরীব দ্বীনি শিক্ষারত শিক্ষার্থীকে এ খাত থেকে যাকাত প্রদান করা যাবে। 

৮। মুসাফিরঃ যে সমস্ত  মুসাফির অর্থ কষ্টে নিপতিত তাদেরকে মৌলিক প্রয়োজন পুরণ হওয়ার মত এবং বাড়ী ফিরে আসতে পারে এমন পরিমাণ অর্থ যাকাত থেকে প্রদান করা যায়।


জেনে নিন কি পরিমান সম্পত্তি হলে যাকাত ফরজ
শিয়া ইসলামের ইমাম সমুহ - Imam group of Shia Islam
জিনের আছর থেকে বাঁচার আমল
শিশু সন্তানকে বিপদমুক্ত রাখতে যে দোয়া পড়বেন - The prayer to read to keep the child safe
অযুর পূর্বে ও পরে যে দোয়া পড়তে হয় - Prayers to be recited before and after ablution
ইসলাম ধর্মে গান-বাজনা হারাম - Music is forbidden in Islam
হজ্ব কাদের উপর ফরজ - On whom is Hajj obligatory?
ফরজ গোসলের সঠিক পদ্ধতি - Correct method of Farj Ghusl
কারিন জ্বীন সম্পর্কে হাদিস - Hadith about Qarin Jinn
চট্টগ্রামের বার আউলিয়ার নাম - Name of Bar Auliya of Chittagong