নারীর তালাক নেওয়ার বৈধ উপায় কী? - What is the legal way to divorce a woman?
divorce a woman

নারীরা কি তালাক দিতে পারেন?

নারী-পুরুষের মানবিক প্রয়োজন পূরণে এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সুখময় ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে ইসলাম বিবাহবন্ধনের নির্দেশ দিয়েছে। ইসলামের বিধান মতে, বিবাহ সম্পাদনে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই সম্মতি আবশ্যক। কোনো সাবালক পুরুষ কিংবা নারীকে কোনো ব্যক্তি জোরপূর্বক বিবাহ দিতে পারবে না, এমনকি তার জন্মদাতা মা-বাবাও না। জোরপূর্বক বিবাহ দিলে বিবাহ শুদ্ধ হবে না। কোনো নাবালেগ ছেলে-মেয়েকে তার অভিভাবক জোরপূর্বক বিবাহ দিলেও বালেগ হওয়ার পর তাদের অপছন্দ হলে তারা ওই বিবাহ ভেঙে দিতে পারবে। অতএব, কোনো পুরুষ কোনো নারীকে এবং কোনো নারী কোনো পুরুষকে বিবাহের মাধ্যমে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন। ইসলামী শরিয়ত তাদের ওপর কারো জবরদস্তি চাপিয়ে দেয় না। ইসলামে নারীকে জীবনসঙ্গী নির্বাচনের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়কেই সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। যেন কোনো নারীকে কোনো অসৎ পুরুষের খপ্পরে পড়ে অসহায় ও দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করতে না হয়।

স্ত্রী কি তালাক দিতে পারেন?

ন্যায়সঙ্গত কারণে তালাক ইসলামে বৈধ। তবে এটি সবচেয়ে নিকৃষ্ট বৈধ কাজ। নারীরাও বৈধ উপায়ে এ তালাক নেওয়ার অধিকার রাখে। নারীরা যথাযথ কারণে স্বামী থেকে আলাদা হওয়ার দুইটি বৈধ উপায় আছে। নারীদের তালাক নেওয়ার কারণ দুইটি কী?

দাম্পত্য জীবনে অশান্তির কারণেই স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর আলাদা হয়। তালাকের মাধ্যমে এ সম্পর্কের অবসান ঘটে। তবে নারীর বৈধ দুইটি কারণে স্বামীর কাছ থেকে তালাক নিতে পারে। তাহলো-

১. স্ত্রীকে দীর্ঘদিন দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা

বিবাহিত পুরুষদের অনেকে দীর্ঘদিন স্ত্রীকে একসঙ্গে থাকার দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেকে বছরের পর বছর দূর প্রবাসে জীবন কাটিয়ে দেয়। অনেক নারীই পারিবারিক নানা কারণে স্বামীকে ফিরে আসার দাবী করতে পারে না।

অনেক সময় দেখা যায়, স্বামী কাছে না থাকার কারণে অন্য পুরুষের প্ররোচনায় কিংবা শয়তানের ধোকায় পড়ে পরকীয়াসহ অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ স্বামীর পরিশ্রমের অর্থ অবৈধ/অনৈতিক সম্পর্কের পেছনে খরচ করে থাকে।

অথচ ইসলাম নারীকে তার ইজ্জত রক্ষায়, দাম্পত্য জীবনের শান্তি ধরে রাখতে বৈধভাবে জীবন পরিচালনার পৃথক হওয়ার অধিকার দিয়েছে। এ পরিস্থিতে চাইলে সে স্বামীর কাছ থেকে বৈধভাবেই তালাক গ্রহণ করতে পারে। যার ফলে অবৈধ সম্পর্কে খারাপ পরিণতি ও গোনাহ কিংবা দাম্পত্য জীবনের কষ্ট থেকেও মুক্তি পেতে পারে।

তাই দীর্ঘদিন দাম্পত্য অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকা নারীর জন্য রয়েছে কিছু করণীয়। যারা ধৈর্যধারণ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে অবৈধ সম্পর্কের দিকে পড়ে পরকালকে ধ্বংস করে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাদের জন্য তালাক নেওয়ার আগে এ পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা একান্ত জরুরি। তাহলো-

> স্বামীর অবর্তমানে ধৈর্য ধারণ করতে না পারলে স্বামীকে ঘরে ফিরে আসার জন্য দাবি জানানো।

> যদি তাদের স্বামী ফিরে না আসে এবং এ কারণে সে ধৈর্যধারণ করা সম্ভব না হয়; তবে স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া। এতে ওই নারীর স্বামী ঘরে ফিরে আসার বিষয়টির গুরুত্বসহ বুঝতে পারবে।

> স্বামী যদি ফিরে না আসে এবং তালাক দিতে রাজী না হয় তাহলে ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’-এর আওতায় কাজীর মাধ্যমে ‘খুলা’ (তালাক) করে পৃথক হয়ে যাওয়া।

এ প্রসঙ্গে ফতোয়া

বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার শায়খ সালিহ আল-ফাউজান হাফিজাহুল্লাহ তার এক ফতোয়ায় উল্লেখ করেছেন, ‘যদি কোনো স্বামী তার স্ত্রী থেকে ছয় মাসের বেশি দূরে থাকে আর তার স্ত্রী তাকে ঘরে ফেরার জন্য অনুরোধ করে; তাহলে তার জন্য ঘরে ফিরে আসা বাধ্যতামূলক।

স্বামী যদি এমন কারণে সফরে থাকে যা তার জন্য ফরজ; যেমন- ফরজ হজ পালন বা বাধ্যতামূলক জেহাদে যোগদান, কিংবা (কোনো কারণে) তার জন্য ঘরে ফিরে আসা সম্ভব না হয়, তবে সেক্ষেত্রে (স্বামীর জন্য) ঘরে ফিরে আসা আবশ্যক নয়।

যদি বৈধ কোনো কারণ ছাড়া স্বামী ঘরে ফিরে আসতে অস্বীকার করে আর তার স্ত্রী খুলা (তালাক) দাবি করে, তবে কাজী/বিচারক স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তাদেরকে পৃথক করে দেবে। কারণ এই ব্যক্তি (স্বামী) তার স্ত্রীকে অত্যাবশ্যকীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।’ (আল-মুলাখ-খাস আল-ফিকহি ২/২৯০)

২. স্বামী তার স্ত্রীর জৈবিক চাহিদ পূরণে অক্ষম

যদি কোনো স্বামী তার স্ত্রীর জৈবিক চাহিদা পূরণে অক্ষম হয় কিংবা যৌন দুর্বলতার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হয় আর এ কারণে স্ত্রীও ধৈর্য ধারণ করতে না পারে তবে করণীয় হলো-

স্ত্রী তার স্বামীকে এক বছর পর্যন্ত চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া। যদি চিকিৎসার পরেও স্বামীর অবস্থার পরিবর্তন না হয়; যৌন রোগ থেকে সুস্থ না হয় তবে সেক্ষেত্রে স্ত্রী চিন্তা-বিবেচনা করবে যে, সে এমন বিবাহে আবদ্ধ থাকবে কিনা।

এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বামীর সঙ্গে সংসার করা কল্যাণকর নাকি পৃথক হওয়া আবশ্যক বিষয়টি স্ত্রীর উপর নির্ভর করবে। এ অবস্থায় নারী যদি ধৈর্য ধারণ করতে না পারে, চাইলে সে নারী তার স্বামী বা পরিবারের সঙ্গে আলোচনার করে কাজীর মাধ্যমে খুলা (তালাক) নিতে পারবে। এ অবস্থার শিকার সব নারীর জন্য তা বৈধ।

এ ছাড়াও আরও কিছু কারণে আছে-

> স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দিতে অক্ষম হলে।

> স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হয় তথা পরকীয়া, পাপাচারিতা কিংবা চারিত্রিক অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হয়।

> বৈধ যে কোনো কারণে স্বামীর প্রতি মনে প্রচণ্ড ঘৃণা সৃষ্টি হলে।

> স্বামী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বা কোথাও বন্দি থাকার ফলে স্ত্রী যদি নিরাপত্তাহীনতা কিংবা ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা করে।

> ইসলামি শরিয়ত নির্দেশিত কারণ ছাড়া স্বামী যদি স্ত্রীকে শারীরিক আঘাত, অত্যাচার, অপমান কিংবা অভিশাপ ও গালাগালি দেয়।

> স্বামীর কোনো দুরারোগ্য বা সংক্রমক ব্যাধিতে স্ত্রী আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকলে।

> স্ত্রীকে যদি নির্বাসিত জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হতে বাধ্য করে। অথ্যাৎ স্ত্রীর বাবা-মা, ভাই-বোনসহ মাহরামদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে বাধা দেয়।

> নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে কটুক্তি করার পাশাপাশি স্ত্রীকে ইসলামের বিধান পালনে বাধা দেয় কিংবা স্ত্রীকে কটুক্তি করে।

মনে রাখতে হবে

যে সব স্ত্রী কারণ ছাড়াই স্বামীর কাছে তালাক চায় হাদিসে তাদের ব্যাপারে কঠোর পরিণতির কথা বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

‘যদি কোনো নারী (স্ত্রী) অহেতুক তার স্বামীর কাছে তালাক চায় তবে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধও হারাম হয়ে যায়।’ (আবু দাউদ)

পরকীয়া করলে স্ত্রী কি তার স্বামীকে তালাক দিতে পারেন?

হ্যা, স্বামী যদি অন্য নারীর সাথে মেলামেশা করেন বা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তবে স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। এছাড়াও শারীরকি ও মানসিক নির্যাতন, নৈতিকতাবিরোধী জীবনযাপন, স্ত্রীর সম্পত্তির বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান, স্ত্রীর ধর্মীয় চর্চায় বাধা প্রদান ইত্যাদি কারণে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারেন।


এক তালাকের মাসআলা,average time to remarry after divorce,successful remarriage after divorce,effects of remarriage after divorce,when your ex wife remarried quickly,remarriage after divorce with same person,remarriage after divorce with same person islam,how to pronounce divorce,divorce process,divorce online,divorce marriage,what is divorce pdf,definition of divorce in sociology,divorce ny,divorce essay,ইসলামে মেয়েরা কি তালাক দিতে পারে,মেয়েরা কি স্বামীকে তালাক দিতে পারবে,স্ত্রী তালাক দিলে কি তালাক হয়?,স্ত্রী তালাক দিলে দেনমোহর পাবে কি,স্ত্রী কর্তৃক তালাক হাদিস,বিনা কারনে স্ত্রী কি ডিফোস দিতে পারে,স্ত্রী তালাক দিলে দেনমোহর পাবে কি,কি কি শব্দ বললে তালাক হয়,স্ত্রী কি তালাক দিতে পারবে আল কাউসার,বিনা কারনে স্ত্রী কি ডিফোস দিতে পারে,না জেনে তালাক দিলে কি হয়,মুখে তালাক দেওয়ার নিয়ম,কি কি শব্দ বললে তালাক হয়,কি কি কারণে তালাক হয় না,কি কি কারণে স্ত্রীকে তালাক দেওয়া যায়,তালাক কত প্রকার ও কি কি,স্ত্রী তালাক দিলে কি তালাক হয়?,চলে যাও বললে কি তালাক হয়,স্ত্রী মুখে তালাক দিলে কি তালাক হয়,স্বামী কখন তালাক দিতে পারে,

তথ্যসূত্র: জাগোনিউজ
ফরজ গোসলের সঠিক পদ্ধতি - Correct method of Farj Ghusl
ঘুমানোর দোয়া ও ঘুম থেকে উঠার দোয়া - Dua to sleep and dua to wake up
কাকে যাকাত দিবেন ?
ছেলে শিশুদের ইসলামী নাম
জুমার দিনের মর্যাদাপূর্ণ আমল - The dignified act of Friday
ভন্ড পীর নিয়ে কবিতা - Poems about hypocrites
হালাল রিজিক বৃদ্ধির আমল - Halal sustenance growth period
জ্বর ও মাথাব্যাথায় যে দোয়া পড়বেন - Prayers for fever and headache
আল্লাহ কেন শয়তান সৃষ্টি করলেন? - Why did God create Satan?
ইসলামিক ভাবে জন্মদিনের শুভেচ্ছা-islamic birthday wishes