বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার পর আমল - Actions after being saved from danger

বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার পর আমল - Actions after being saved from danger

যে কোনো মুহূর্তে মুসলমান বিপদগ্রস্ত হতে পারে। তখন ধৈর্যের সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে বিপদকে মোকাবিলা করতে হয়। আল্লাহ তাআলাই তার বান্দাকে বিভিন্ন উছিলায় বিপদ থেকে উদ্ধারের উপায় বাতলে দেন। কারণ বিপদ যিনি দেন, আবার তিনিই রক্ষা করেন।

তাই যে কোনো বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার পর মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে হয়। এতে নেয়ামত লাভ করে মুমিন। কেননা কোরআনুল কারিমের ঘোষণা হচ্ছে- ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা আদায় কর তবে আমি অবশ্যই তোমাদের নেয়ামত বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত ০৭)

এ আয়াতে আল্লাহর নেয়ামত লাভের আনন্দ বা বিপদ থেকে রক্ষার পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হচ্ছে শোকর। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় সেজদায়ে শুকরিয়া আদায় করার কথা এসেছে। এ সেজদায়ে শুকরিয়া বলতে ২ রাকাআত নামাজ পড়া। যাকে ‘সালাতুস শোকর’ বা ‘কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের নামাজ’ বলা হয়। হাদিসে এসেছে- ‘হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে কোনো খুশির সংবাদ বা এমন কিছু পৌঁছতো আর তাতে তিনি সন্তুষ্ট হতেন; তখন তিনি আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের উদ্দেশে সেজদায় লুটিয়ে পড়তেন।’ (আবু দাউদ)

এ হাদিসের আলোকে ইসলামিক স্কলারদের অনেকে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করার কথা বলেছেন। আবার অনেকে শুকরিয়া আদায়ে শুধু সেজদার কথা বলেছেন।

আল্লাহর নেয়ামত লাভে নামাজের পাশাপাশি তাঁর শুকরিয়া আদায়ে দোয়া করার বিষয়টিও উঠে এসেছে। হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম পিঁপড়ার কথা শুনে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করতে দোয়া করেন। যা আল্লাহ তাআলার অনেক পছন্দ হয়। আল্লাহ তাআলা শুকরিয়া জ্ঞাপনের এ দোয়া উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য কোরআনুল কারিমে তুলে ধরেন-

رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَدْخِلْنِي بِرَحْمَتِكَ فِي عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ

উচ্চারণ: ‘রাব্বি আওজিনি আন-আশকুরা নিমাতাকাল্লাতি আন্আমতা আলাইয়্যা ওয়া আলা ওয়া-লিদাইয়্যা ওয়া আন আ’মালা সা-লিহান তারদাহু ওয়া আদখিলনি বিরাহমাতিকা ফি ইবাদিকাস সালিহিন।’

অর্থাৎ ‘হে আমার প্রভু! আমাকে ও আমার পিতামাতাকে যে নিয়ামত তুমি দান করেছ তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার শক্তি দান কর। আর আমি যাতে তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে তোমার অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর।’ (সুরা নামল, আয়াত ১৯)

বিপদ থেকে বাঁচতে যে দোয়া পড়বেন

বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণের জন্য পবিত্র কোরআন এবং রাসুল (সা.) এর হাদিসে কিছু দোয়াও আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, ‘যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)- এর ওপর কোনো কাজ কঠিন হয়ে দেখা দিত, তখন তিনি এ দোয়াটি পড়তেন।’

يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ أَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ وَلا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرَفَةَ عَيْنٍ

উচ্চারণ : ‘ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ।’

অর্থ : হে চিরঞ্জীব! হে বিশ্ব চরাচরে ধারক! আমি তোমার রহমতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (তিরমিজি মিশকাত, হাদিস নম্বর: ২৪৫৪)

দোয়ায়ে ইউনুস (আ.) পড়লে বিপদ দূর হয়

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, মাছের পেটে ইউনুস (আ.) এ দোয়া পড়ে আল্লাহকে ডেকে ছিলেন এবং মুক্তি পেয়েছিলেন। যদি কোনো মুসলিম বিপদে পড়ে এ দোয়া পাঠ করে, আল্লাহ তা কবুল করবেন।’ (আহমাদ, তিরমিজি, মিশকাত, হাদিস নম্বর: ২২৯২)।

لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ، إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

উচ্চারণ : ‘লাইলা-হা ইল্লা আনতা সুবহা-নাকা ইন্নি কুনতুমিনাজ্জালিমিন।’ (সুরা আম্বিয়া: ২১/৮৭)

অর্থ : তুমি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তুমি পবিত্র সুমহান। নিশ্চয়ই আমি সীমা লঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত।

অযুর পূর্বে ও পরে যে দোয়া পড়তে হয় - Prayers to be recited before and after ablution
ঋণ করে হজ্ব করা কি বৈধ - Is it legal to perform Hajj on loan?
কিভাবে গড়ে তুলবেন কুরআনী প্রজন্ম
জানাযার নামাজের ফরজ ও সুন্নাত - Obligation and Sunnah of funeral prayer
ইসলামের দৃষ্টিতে তালাক - Divorce in the eyes of Islam
কালো জাদু থেকে বাচার উপায়
শিয়া ইসলামের ইতিহাস - History of Shia Islam
শিশু সন্তানকে বিপদমুক্ত রাখতে যে দোয়া পড়বেন - The prayer to read to keep the child safe
সালাম ফেরানোর পর যে দোয়া পড়বেন - After returning the salam, recite the prayer
প্রস্রাব-পায়খানার আদব ও শিষ্টাচার - Toilet etiquette and manners