জানাজা নামাজের ফরজ ও সুন্নাত কয়টি?
মুমিন মুসলমানের মৃত্যুর পর সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে জানাজা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে দাফন করা হয়। জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। এ নামাজ হচ্ছে আল্লাহর কাছে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা। জানাজার নামাজে বেশি লোক উপস্থিত হওয়া ভালো। তবে বেশি লোক উপস্থিতির জন্য জানাজা দেরি করা ঠিক নয়। জানাজার নামাজের রয়েছে ফরজ ও সুন্নাত। অনেকেই জানে না জানাজা নামাজের ফরজ ও সুন্নত কয়টি ও কী কী?
জানাজার নামাজের ফরজ কয়টি
জানাযা নামাজের ফরজ ২টি
১. আল্লাহু আকবার চার বলা। প্রতি তাকবির এক রাকাআতের স্থলাভিষিক্ত। এ নামাজে রুকু, সিজদা নেই।
২. জানাযার জন্য দাঁড়ানো। ওজর ব্যতিত বসে জানাযার নামাজ আদায় করা বৈধ নয়। কোনো কিছু উপর ওঠে নামাজ পড়াও বৈধ নয়।
জানাজার নামাজের সুন্নাত কয়টি
জানাজার নামাজের সুন্নত চারটি। যথা-
১. আল্লাহর হামদ ও সানা পড়া;
২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর দরূদ পড়া;
৩. মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
৪. জানাযার নামাজের জন্য ন্যুনতম তিন কাতার করা সুন্নাত। বেশি কাতার করতে কোনো বাঁধা নেই। তবে কাতার বেজোড় করা উত্তম।
জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম
জানাজার নামাজে ইমাম মৃতের বক্ষ বরাবর দাঁড়াবে। (বুখারি, হাদিস: ১২৪৬)। ইমামের পেছনে মুক্তাদিদের কাতার হবে। (ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩১০২)
- কাতারবদ্ধ হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়ানোর পর নিয়ত করে প্রথম তাকবিরের পর ছানা পাঠ।
- দ্বিতীয় তাকবীরের পর দরুদে ইবরাহীম পাঠ।
- তৃতীয় তাকবিরের মৃত ব্যাক্তির জন্য দোয়া পড়বে: ‘‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলী হাইয়েনা ওয়া মাইয়্যাতিনা” শেষ পর্যন্ত এবং “রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতে” শেষ পর্যাপ্ত পাঠ।
- চতুর্থ তাকবির দিয়ে সালাম ফিরিয়ে, হাত নামিয়ে জানাজার নামাজ শেষ করতে হয়।
জানাজার নামাজ চার তাকবীরের সঙ্গে আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজে তাকবীর দেয়ার সময় হাত তুলতে হয়, তবে জানাজার নামাজে তাকবীর দেয়ার সময় হাত তোলার প্রয়োজন পড়ে না।
জানাজার নামাজের নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
উচ্চারণ: "নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবা আ তাকবীরাতে ছালাতিল জানাজাতে ফারজুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।"
এখানে নিয়তে ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ পুরুষ/ছেলে লাশ হলে পড়তে হবে, আর লাশ নারী/মেয়ে হলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলতে হবে।
অর্থ: " আমি চার তাকবিরের সহিত ফরজে কিফায়া জানাজার নামাজ কিবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে দাঁড়িয়ে মরহুম ব্যক্তির (পুরুষ/মহিলার) জন্য দোয়া করার উদ্দেশ্যে আদায় করছি। আল্লাহু আকবার।"
তবে নাবালক ছেলের ক্ষেত্রে জানাজার দোয়া পড়তে হবে,
اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًا وْاَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَمُشَفَّعًا
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মাজ আল হুলানা ফারতাও ওয়াজ আল হুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।"
নাবালিকা মেয়ের ক্ষেত্রে জানাজার দোয়া পড়তে হবে,
اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًاوَاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَمُشَفَّعَة
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাও ওয়াজ আলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ ফায়ান।"