যে উপায়ে শরীর থেকে লবণের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়
Ways to reduce salt levels from the body

অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার খেলে ভারসাম্য রাখতে যা খাবেন

লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকলেও মাঝে মাঝে কোনো কারণে বেশি লবণ খাওয়া হয়ে যেতে পারে। এছাড়া অনেকেই আছেন যারা পরিমাণের চেয়ে বেশি লবণ খান। এটি এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। যদি বেশি লবণ খেয়ে থাকেন তাহলে এটি থেকে মুক্তির কিছু উপায় রয়েছে। সেগুলো হলো-

১.বেশি পরিমাণে পানি পান করা

পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করতে সহায়তা করে। নোনতা খাবার খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান কিডনি থেকে সোডিয়াম অপসারণ করতে সহায়তা করে এবং ফোলাভাব থেকে মুক্তি দেয়।

২.দই

আরেকটি পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হলো দই। অতিরিক্ত সোডিয়ামের মোকাবিলায় এর জুড়ি মেলা ভার। শুধু তাই নয়, নিয়মিত দই খেলে অন্ত্র সুস্থ রাখে। 

৩.ব্যায়াম

বেশি পরিমাণে লবণ খেয়ে ফেললে একটু বেশি পরিমাণে ব্যায়াম করতে হবে। এমন ব্যায়াম করুন যা শরীরে বেশি প্রভাব ফেলে এবং ঘাম হয়। ঘামের মাধ্যমে সোডিয়াম শরীর থেকে বের হয়।

৪.কলা

শরীরে লবণের মাত্রা বেশি হলে কলা দারুণ কাজে আসে। এটা পটাশিয়ামে ভরপুর। ফলে রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। কলা পর্যাপ্ত ফাইবার যোগায়। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।

৫.কিউয়ি ফল

কিউয়ি ফলে অ্যাক্টিনিডিন নামক এনজাইম আছে যা, প্রোটিন দ্রবীভূত বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। ফাইবার থাকার কারণে হজমে সাহায্য করে। ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম থাকায় স্বাস্থের জন্যও খুবই উপকারি। প্রতিদিন যদি ২টি করে কিউই ফল খেলে অক্সিডেটভ স্ট্রেস হ্রাস পায়। এছাড়াও কিউইতে ম্যাগনেশিয়ামের থাকায় হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। যদি মনে হয় শরীরে অতিরিক্ত লবণ গিয়েছে, তাহলে চোখ বন্ধ করে কিউয়ি ফল খেলে নিমেষে উপকার মিলবে। 

৬.আদা চা

শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য ঠিক রাখতে আদা চায়ের বিকল্প নেই। এই ভেষজ চা নিয়মিত পান করলে হজমশক্তি বাড়ে। শরীরের ফোলাভাব কমায়।

যতটা লবণ খাওয়া উচিত

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’য়ের স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে, পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক দুই চা-চামচ লবণ খাওয়া দরকার। ১০ গ্রাম লবণে ৪০০ মি.গ্রা. সোডিয়াম থাকে যা প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য।


কীভাবে বুঝবেন শরীরে লবণ বেড়েছে?

ঘন ঘন তৃষ্ণা

পরিমাণমতো পানি পানের পরও পিপাসা কমছে না? শরীরে থাকা বেশি সোডিয়াম তথা লবণটাই আপনার ভেতরকার তরলের ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারছে না। এটা পানিশূন্যতারও প্রাথমিক লক্ষণ। এমনটা দেখা দিলে শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ পরীক্ষা করুন।

পেট ফাঁপা

অল্প খাওয়ার পরও পেট ফেঁপে যাচ্ছে বা হাঁসফাঁস লাগছে? একটু পানি খেলে ভালো লাগবে ভেবে গ্লাসে চুমুক দিলেন। কিন্তু দেখা গেলো পেট আরও ভারী হয়ে গেলো। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণই এর জন্য দায়ী হতে পারে।

অনবরত মাথাধরা

আগে করতো না, কিন্তু ইদানীং প্রায়ই মাথাব্যথায় আক্রান্ত হচ্ছেন? অন্য কোনও সমস্যা না থাকলে ধরে নিন শরীরের অতিরিক্ত লবণই চাপ বাড়াচ্ছে মাথায়।

পেশীর অস্বাভাবিকতা

শরীরে পানি পানি ভাব চলে আসা বা মাংশপেশীর অস্বাভাবিক ব্যথার জন্য অতিরিক্ত লবণও দায়ী। শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য ঠিক না থাকলেও ত্বক কুঁচকে আসে বা ফুলে ওঠে। তাই লক্ষ্য রাখুন, বিশেষ কোনও কারণ ছাড়াই মোটা হয়ে যাচ্ছে কিনা বা ত্বক কুঁচকে আসছে কিনা।

তীক্ষ্ম ব্যথা

অতিরিক্ত লবণ হাড়েরও ক্ষতি করে। বিশেষত নারীদের হাড় ক্ষয়ের পেছনে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণই বেশি দায়ী। তাই হাড়ের ক্ষয়জনিত বা বিভিন্ন জয়েন্টে তীক্ষ্ম ব্যথা হলে লবণের পরিমাণটা পরীক্ষা করে নিন।

স্বাদ লাগছে না?

যতই লবণ দিচ্ছেন মনে হচ্ছে আরেকটু দেওয়া উচিৎ? বেশি লবণ খাওয়ার বড় একটা কুফল এটি। এতে করে পরে লবণ পরিমিত মাত্রায় খেলেও মনে হবে খাবারে মোটেও লবণ হয়নি। অর্থাৎ অতিরিক্ত লবণ আপনার স্বাদের অনুভূতিও বদলে দেয়।