বিটরুট যদিও বাংলাদেশি সবজি নয় তবু বাংলাদেশের বাজারে সবজির দোকানে সারা বছরই বিটরুট পাওয়া যায়। প্রাচীন সময় থেকেই বিটের বিশেষ কদর রয়েছে। প্রাচীন গ্রিক ও রোমানরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে নিস্তার পেতে নিয়ম করে বিট খেতেন।
বিটরুট এর উপকারিতাঃ
(১) রক্তাল্পতা ও আয়রনের ঘাটতি মেটায়
(২) বিটে রয়েছে অতিমাত্রায় নাইট্রেটস। মুখে থাকা ব্যক্টেরিয়ার সংস্পর্শে এসে এই নাইট্রেট মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে
(৩) ঋতুচক্র সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে বিটের জুস খান। বিটে থাকা আয়রণ নতুন লোহিত রক্তকণিকা গঠনে সাহায্য করে
(৪) বিটে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় ফ্রি রেডিক্যাল এর ক্ষতিকারক দিক থেকে শরীরকে বাঁচায়। ফলে এই সবজি নিয়মিত খেলে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।
(৫) বিটের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-টিউমার গুণ। গবেষণায় দেখা গিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত কোষের হাত থেকে সুস্থ কোষগুলোকে বাঁচায়।
(৬) ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে
(৭)বিট খাওয়ার ফলে ব্রেনে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। যারা নিয়মিত বিট খেয়েছে তাদের চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় অনেকটাই বেশি।
(৮) যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, উচিত বেশি করে বিটের জুস খাওয়া। বিপাকের সমস্যা দূর করে হজমশক্তি বাড়ায়
(৯) বিটে ট্রিপ্টোফান ও বিটেইন নামে যে উপাদান থাকে, তা ডিপ্রেশন কাটাতে ভালো কাজ দেয়
বিটরুট দিয়ে কি কি খাবার তৈরি করা যায় ?
(১)বিটের স্যুপ (২) বিটের সরবত (৩) বিটের সবজি (৩) বিটের ফালুদা (৪) বিটের আইসক্রিম (৫) বিটের স্যালাদ (৬)বিটের পাকোরা
এছাড়াও বিভিন্ন খাবার (কেক, চকলেট ) তৈরির জন্য প্রাকৃতিক রং হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
বিটের জুস বানাবেন যেভাবেঃ বিটরুটে সাথে অন্যান্য ফল মিশিয়ে তৈরি করুন সুস্বাধু জুস।নিচে প্রস্তুত প্রনালী দেয়া হলো:
১। বিট ৪ভাগের ১ ভাগ
২। দুধ ১কাপ
৩। চিনি ২চামচ
৪। যে কোন ধরনের ফল ( কলা, আঙ্গুর, ডালিম,কমলা) ১টি অথবা আপনার পছন্দ মতন কম বেশি ফল নিতে পারেন।
বিটের খোসা পরিস্কার করে কেটে ফেলে দিয়ে , পানিতে সিদ্ব করে নিতে হবে । সিদ্ব হওয়ার পর পানি থেকে বিট গুলো আলাদা করে নিতে হবে । বিটের পানি ও দুধ ও যে কোন ফলের রস নিয়ে একত্রে মিশ্রিত করতে হবে। তার পর পরিমান মতন চিনি মিশিয়ে নিতে হবে। যেহেতু বিট মিষ্টি থাকে তাই কম করে চিনি মিশ্রন করতে হবে । বিটের ঘ্রান থাকে যার জন্য অনেকেই খেতে পারে না। বিটের রসের মধ্যে সামান্য পরিমান ফলের রস মিশিয়ে নিলে বিটের ঘ্রান ও স্বাদ পরিবর্তন হবে।
বিটরুটের ফেসপ্যাক: বিটরুট ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ও ভিটামিন সি। তাই প্যাক হিসেবে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
এক চা চামচ দুধের সঙ্গে এক চা চামচ বিটরুটের রস ও পাঁচ ফোঁটা আমন্ড অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এবার ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে বেশ কার্যকর।
এক চা চামচ বিটরুটের রসের সঙ্গে এক চা চামচ কমলার রস মিশিয়ে তুলার বল দিয়ে এই রস পুরো মুখে লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক ত্বকের কালচে দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।
বিটরুট কোথায় পাওয়া যায়?
ঢাকার মহাখালী,কাওরান বাজারসহ বড় সবজির বাজারগুলোয় বিটরুট পাওয়া যায়।এছাড়াও দেশের সুপাশপগুলোয় সারা বছরই বিটরুট পাওয়া যায়।
সাম্প্রতিক মন্তব্য
#Md Robin Islam
এই ফল সব ফলের দোকানে পাওয়া যাবে কি