
যেসব খাবার কখনই ফ্রিজে রাখবেন না - Foods that should never be refrigerated
সতেজ রাখার জন্য আমরা অনেক খাবার ফ্রিজে রাখি। ফ্রিজে খাবার রাখলে অনেকদিন খাওয়া যায়। পানি, আইসক্রিম, মাছ, মাংস, সবজিসহ হরেক রকমের খাবার সংরক্ষণ করা যায় ফ্রিজে।
তবে আপনি কি জানেন, এমন অনেক খাবার আছে যা ফ্রিজে রাখলেই নষ্ট হয়ে যায়। ফ্রিজ সব ধরনের খাবার রাখার জন্য নয়। কিছু খাবার ফ্রিজে রাখলে মান কমে যেতে পারে অথবা স্বাদ নষ্ট হতে পারে অথবা তাড়াতাড়ি পঁচে যেতে পারে। শীতল তাপমাত্রায় ভালো থাকে না অনেক খাবারই।
যেসব খাবার ফ্রিজে রাখলেও নষ্ট হয়
পাউরুটি
এটা ঠিক যে পাউরুটি ফ্রিজে রাখলে দীর্ঘসময় ছত্রাক ধরবে না, কিন্তু এর বিনিময়ে স্বাদ হারাতে হবে। ফ্রিজে পাউরুটি শুকিয়ে যায় ও খেতে ততটা সুস্বাদু হয় না। পাউরুটি কক্ষ তাপমাত্রায় দুই থেকে চার দিন সংরক্ষণ করা যায়। তবে ফ্রিজে সাত থেকে ১৪ দিন ভালো থাকে।
কুমড়া একটি সুস্বাদু সবজি। আমাদের দেহের জন্যও খুব ভালো এই সবজিটি। এটি ফ্রিজে না রাখাই ভালো। কারণ বাইরেই এটি কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ দিন রাখা যায়।
পাশ্চাত্যের দেশের পানীয় হলেও বাঙালির প্রতি ঘরেই কফির জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে অনেকে কফি বেশি দিন ভালো রাখতে কফি পাউডার ফ্রিজে রেখে দেন। এতে উল্টা কফির গন্ধটাই উবে যায়। ফ্রিজের ভেতরে তাপমাত্রা খুব কম থাকে। ফলে কফি পাউডার শুকিয়ে যায় এবং গন্ধ চলে যায়। তাই কফি পাউডার রাখতে হবে ফ্রিজের বাইরেই। কাঁচের অথবা এয়ার টাইট যে কোনো পাত্রে কফি সংরক্ষণ করুন।
রসুন খোসা না ছাড়িয়ে রেফ্রিজারেইটরে রাখলে আর্দ্রতার কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। রসুন রাখার উপযুক্ত স্থান হল ঘরে যেখানে বাতাস চলাচল করে ও শুষ্ক স্থান এবং আলো থেকে দূরে।
শসা সতেজ রাখতে স্বাভাবিকভাবে বাইরে সংরক্ষণ করলেই হবে। এ জন্য সবজিটি ফ্রিজে রাখতে হবে না। ফ্রিজে রাখলে শসায় ছোট ছোট দাগ পড়ে যায়। পাশাপাশি এর স্বাভাবিক স্বাদও নষ্ট হয়।
কয়েক সপ্তাহের জন্য বাদাম ভালো রাখতে চাইলে বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা যায়। তবে এক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে চাইলে রেফ্রিজারেইটরে রাখা উচিত।
মধু রেফ্রিজারেইটরে রাখার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। এতে মধু কেবল জমাটই বাঁধে এবং ব্যবহারের আগে আবার গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
অন্ধকার ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখা ভালো। রেফ্রিজারেইটরে রাখতে চাইলে তা দ্রুত নষ্ট হয়। যদি রাখারই প্রয়োজন হয় তাহলে কুচি করে কেটে বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা উচিত।
জলপাই তেল
রেফ্রিজারেইটরে রাখলে তা ঘোলাটে, দানাযুক্ত এবং ঘন হয়ে যায়। রান্নাঘরের মতো আলো কম ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখা উচিত।
আলু
ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় আলুর ‘স্টার্চ’ শর্করায় পরিণত হয়, যা ক্ষতিকারক। আলু না ধুয়ে সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখতে হবে এবং কেবল রান্না করা আলুই রেফ্রিজারেইটরে রাখা যায়।
আলুর মতো মিষ্টি আলুও রেফ্রিজারেইটরে রাখলে স্বাদ ও গঠনে পরিবর্তন আসে। তাই ছায়াযুক্ত ও বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে রাখা উচিত।
কাঁচা আম ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করলে ভালো থাকে। রেফ্রিজারেটরে রাখলে তা পাকে দেরিতে। আর পাকা আম কেটে টুকরা করে ফ্রিজের বরফ জমার অংশে জমিয়ে রাখতে পারেন। পরে গলিয়ে খাওয়া যায়।
পিঠা
পিঠা বা কেক খুব বেশি ঠাণ্ডা হলে স্বাদ নষ্ট হয়। কয়েকদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে বায়ুরোধী পাত্রে রাখা যেতে পারে। কেক যদি ক্রিম সমৃদ্ধ হয় তবে তা রেফ্রিজারেইটরে রাখা উচিত।
শুকনা ফল
শুকনা ফল রেফ্রিজারেইটরে রাখলে অযাচিত আর্দ্রতা এর মান নষ্ট করে দেয়। এগুলো শুষ্ক, অন্ধকার ও বায়ুরোধী পাত্রে রাখা প্রয়োজন। এতে এক বছর পর্যন্ত ভালো রাখা যায়।
গুঁড়া মসলা
শুকনা গুঁড়া মসলা রেফ্রিজারেইটরে রাখলে দ্রুত নষ্ট হয়। এর মেয়াদ অক্ষুণ্ন রাখতে অন্ধকার ও শুষ্ক স্থানে এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় রাখা উচিত।
টমেটো কেচাপ
টমেটো কেচাপে উচ্চ মাত্রায় ভিনিগার, লবণ ও চিনি থাকায় তা ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় রাখাই ভালো।
সয়া সস
এর লেবেলে রেফ্রিজারেইটরে সংরক্ষণ করা কথা বলা হলেও ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় তা ছয় মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
ভেষজ
তুলসী, ধনিয়া, পুদিনা ইত্যাদির মতো টাটকা ভেষজ খাবার রেফ্রিজারেইটরে রাখলে দ্রুত নিস্তেজ ও স্বাদহীণ হয়ে যায়।
রেফ্রিজারেইটরে টমেটো রাখলে সহজে নরম ও জলীয় হয়ে যায়। ফলে স্বাদ নষ্ট হয়। টমেটো সংরক্ষণের জন্য খোলামেলা, বাতাস চলাচল করে, রোদ পড়ে না এরকম জায়গাই যথেষ্ট।