
ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম
আবহাওয়া বদলের সঙ্গে এই সমস্যাগুলোর ধরণ ও প্রবণতা ওঠানামা করে। তবে তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে সমস্যার মাত্রাটি একটু বেশিই হয়। তৈলাক্ত ত্বকে একনের প্রবণতা থাকে সবচেয়ে বেশি। কারণ ত্বকের তেলের সঙ্গে খুব সহজেই বাইরের ধুলাবালি ও ময়লা আটকে যায়। এছাড়া ত্বক সর্বদা তৈলাক্ত হয়ে থাকায় ত্বকের জন্য উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য বিষয়।
সেক্ষেত্রে সহজলভ্য কয়েকটি ঘরোয়া উপাদান দিয়ে ঘরেই তৈরি করে নেওয়া যাবে তৈলাক্ত ত্বকের ময়েশ্চারাইজার।
১.নারিকেল তেল দিয়ে ময়েশ্চারাইজার
উপকরণ
খাঁটি নারিকেল তেল হাফ কাপ, ভিটামিন ই ক্যাপসুল ৩টা, ল্যাভেন্ডার অ্যাসেন্সিয়াল অয়েল ১২ ফোঁটা।
যেভাবে তৈরি করবেন
একটা বাটিতে গরম পানি নিন। তার ওপর একটা বাটিতে নারিকেল তেল ঢেলে ভালো করে গলিয়ে নিন। এবার এই তেলের মধ্যে সব উপকরণ দিয়ে দিন। এবার পুরো মিশ্রণটা ঠাণ্ডা হলে কাচের পাত্রে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করুন।
২.অ্যালোভেরা ময়েশ্চারাইজার
উপকরণ
নারিকেল তেল ২ চামচ, অ্যালোভেরা জেল ৪ চামচ, ভিটামিন ই অয়েল এক চামচ ও আমন্ড অয়েল ২ চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন
একটি পরিষ্কার বাটিতে প্রথমে অ্যালোভেরা জেল নিয়ে তার মধ্যে নারিকেল তেল, ভিটামিন ই ও আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন গোসলের পর ব্যবহার করুন।
৩.আমন্ড অয়েল ময়েশ্চারাইজার
উপকরণ
আমন্ড অয়েল ১ চামচ ,মধু ১ চামচ,কোকো বাটার ১ চামচ,গোলাপ পানি ২ চামচ।
যেভাবে বানাবেন
কোকো বাটার আর আমন্ড অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন। একটা পাত্রে গরম জল নিয়ে তার উপর অন্য একটি বাটি বসিয়ে কোকো বাটার ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার একটু ঠান্ডা করে মধু আর গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। পুরোটা ঠান্ডা হলে কাচের শিশিতে রাখুন। সংবেদনশীল ত্বক (Sensitive Skin) এর জন্য বেশ ভালো।
৪.অলিভ অয়েল দিয়ে
উপকরণ
অলিভ অয়েল হাফ কাপ,ভিটামিন ই ক্যাপসুল ২টা,নারকেল তেল ১ চামচ,বিসওয়াক্স ১ চামচ।
যেভাবে বানাবেন
অলিভ অয়েল আর নারিকেল তেল খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ওর মধ্যে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে দিন। পুরো মিশ্রণটা ঠান্ডা করে বোতলে ভরে ফেলুন। এই ময়েশ্চারাইজার কিন্তু শুষ্ক ত্বকের জন্য খুব ভালো। তবে সূর্যের আলো পড়ে এমন জায়গায় কৌটা রাখবেন না।
৫.আপেল ময়েশ্চারাইজার
উপকরণ
আপেল ২টা,অলিভ অয়েল ১ চামচ,গোলাপ পানি ৫ ফোঁটা।
যেভাবে বানাবেন
আপেলের বীজ বের করে সিদ্ধ করে নিন। এবার ঠান্ডা করে নিয়ে মিক্সিতে মিহি পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার ওর মধ্যে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে গোলাপ পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। আপেলের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুখকে চকচকে রাখে। সেই সঙ্গে শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই ভালো এই ময়েশ্চারাইজার।
৬.গ্রিন টি ময়েশ্চারাইজার
উপকরণ
গ্রিন টি এসেন্স ১ চামচ,আমন্ড অয়েল ১ চামচ,গোলাপ পানি ১ চামচ,এসেন্সিয়ল অয়েল ১ চামচ,অ্যালোভেরা জুস ১ চামচ,বিওয়াক্স- ১ চামচ।
যেভাবে বানাবেন
আমন্ড অয়েল আর বিওয়াক্স মিশিয়ে গরম করে নিন। এবার ঠান্ডা হলে বাকি উপকরণ মিশিয়ে নিন। ব্যাস, এবার ফ্রিজে রাখলেই তৈরি ময়েশ্চারাইজার। দূষণের হাত থেকে বাঁচায় এই ময়েশ্চারাইজার। এছাড়াও মুখে কোনও দাগ থাকলে আর সংবেদনশীল ত্বকের জন্য খুবই ভালো।
৭.গোলাপ ফুলের পাপড়ির ময়েশ্চারাইজার
উপকরণ
এক কাপ গোলাপের পাপড়ি, গোলাপজল, অ্যালোভেরার রস।
যেভাবে বানাবেন
ময়েশ্চারাইজারটি তৈরি করতে প্রথমে একটি পাত্রে অল্প পরিমাণ গোলাপজল ও গোলাপ ফুলের পাপড়ি নিয়ে ফুটাতে হবে। পানিতে কয়েকবার বলক আসলে ছেঁকে নিতে হবে। এই তরলের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরার রস মিশিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। মিশ্রণটি ঘরোয়া তাপমাত্রায় চলে আসলে বায়ুরোধী কাঁচের পাত্রে ঢেলে সংরক্ষণ করতে হবে এবং নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে।
রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা হলে ১৫-২০ দিন পর্যন্ত এই ময়েশ্চারাইজারটি ভালো থাকবে। গোলাপ ফুলের পাপড়ি সমৃদ্ধ এই ময়েশ্চারাইজারটি ত্বকের ব্রণ ও একনের সমস্যা কমাতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে।
৮.দুধ-অলিভ অয়েল ময়েশ্চারাইজার
উপকরণ
এক কাপের দুই-তৃতীয়াংশ দুধ, ২-৩ চা চামচ লেবুর রস, ২-৩ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল।
যেভাবে বানাবেন
ময়েশ্চারাইজারটি তৈরির জন্য প্রয়োজন হবে একটি পরিষ্কার কাপ। কাপে পরিমাণমতো দুধের সঙ্গে অলিভ অয়েল ও লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, সকল উপাদান যেন ভালোভাবে মিশ্রিত হয়।
এই ময়েশ্চারাইজারে থাকা দুধ ত্বককে কোমল করতে কাজ করবে ও অলিভ অয়েল ত্বকের pH এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। এছাড়া লেবুর রস ত্বকের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি কমাতে ও ত্বকের দাগ দূর করতে কাজ করবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটা সবচেয়ে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার। ঘরে তৈরি এই ময়েশ্চারাইজারটি রেফ্রিজারেটরে সর্বোচ্চ ১০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।