চুল পড়া বন্ধ এবং মাথায় নতুন চুল গজাতে ঘরোয়া উপায়

চুল পড়া বন্ধ এবং মাথায় নতুন চুল গজাতে

চুল পড়ে যাচ্ছে অথবা মাথার চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে এমন সমস্যা অনেকেরই। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দুটি কাজ করতে হবে। একটি হলো চুল ঝরে যাওয়া রোধ করা, অপরটি নতুন চুল গজানো। চুল ঝরে যাওয়া রোধ করা নিয়ে আমরা প্রায়ই বিভিন্ন লেখালেখি দেখি। সেই তুলনায় নতুন চুল গজানোর উপায় নিয়ে জানার সুযোগটা কম।

মূলত, আমাদের বয়স বাড়ার কারণে অথবা বংশগত বা পরিবেশের প্রভাবে চুল পড়ে যেতে থাকে। এ কারণে আমাদের মন তো খারাপ হয়ই, আবার মনে হয় যদি কৈশোরের মতো চুল আবার হতো কোনো ভাবে। আমাদের মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্পে যদি আমরা উদ্দীপনা দিতে পারি, তাহলে মাথায় নতুন চুল গজানো সম্ভব। প্রতিটি চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা রয়েছে। এটাকে যদি বাড়ানো যায়, তাহলেও নতুন চুল গজানো সম্ভব।

কেন চুল পড়ে?

১। এনড্রোজেন হরমোনঘটিত কারনে চুল পড়তে পারে যদি রোগী বয়স্ক হয়ে থাকেন। পারিবারিক ভাবে তিনি এটি বহন করে থাকতে পারেন। এই ধরনের চুল পড়ায় আস্তে আস্তে কপাল চওড়া হতে থাকে। বাচ্চাদের এটা হয় না।

২।চুলে মাত্রারিক্ত ক্যামিকেলস এর ব্যাবহার- চুলে ডাই ব্যবহার,  ব্লিচ, কার্ল এবং হেয়ার ড্রায়ার এর ব্যবহার—বেশি গরম বাতাসে চুল পড়ে যায়।

৩।শাওয়ারের পানি যেখানে প্রতিদিন বেশি লাগে বিশেষ করে বাথ্রুমে ঝর্নায় গোসল করলে।.

৪। জ্বর, মানসিক চাপ, সার্জারি পরবর্তি সময়ে।

৫।  ফানগ্যাস (রিং ওয়ার্ম) সংক্রমণ।

৬।  এলোপেসিয়া এরিয়াটা- যেটা ফ্যামিলিগতভাবে হয়। শরীরের ইমিউন সিস্টেম হেয়ার ফলিকেলসের বিরুদ্ধে কাজ করে।

৭। নিজের চুল নিজে টেনে ছিড়ে আঘাত করার বদঅভ্যাস। এটি একধরনের মনোরোগ। একে  Trichotillomania  বলা হয়।

৮।  থাইরয়েড হরমোনের অভাবজনিত সমস্যা।

৯। সুষম পুষ্টির অভাব।শরীরে আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, বায়োটিন, ভিটামিন এর অভাবে চুল পরে যেতে পারে।

৯। ক্যানসার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহূত কেমোথেরাপি ও র‌্যাডিয়েশনের কারনে।

চুল পড়া বন্ধ এবং মাথায় নতুন চুল গজানোর ঘোরোয়া উপায়

চুল পড়া থেকে শুরু করে খুশকি ও মাথার ত্বকের ইনফেকশনসহ চুল সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো দূর করতে আপনি কি ইতিমধ্যেই কয়েক টন কসমেটিকস এবং বিউটি প্রডাক্ট ব্যবহার করে ফেলেছেন? কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছেন না? তাহলে শুনে রাখুন, চুলপড়া সহ চুলের স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলো শুধুমাত্র এর জন্য সঠিক খাবারগুলো খাওয়ার মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব।

শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য দরকার প্রোটিন এবং পুষ্টি উপাদান। সুতরাং সবসময়ই ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমেই শুধু চুল গজানোর গতি বাড়ানো সম্ভব।

পেয়ারা পাতা

পেয়ারা পাতা চুল পড়া রোধে ও নতুন চুল গজাতে অনেক সহায়ক ভূমিকা রাখে। গবেষকরা দাবি করছেন, নিয়মিত পেয়ারা পাতা ব্যবহারের ফলে মাথার চুল ঝরে পড়া ঠেকায় এবং চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সবুজ এই পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি রয়েছে। এ উপাদানটি চুলের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং খুবই উপকারী।

ব্যবহার

প্রথমে পেয়ারা পাতা ভালো করে পরিষ্কার পানিতে প্রায় ২০ মিনিটের মতো সিদ্ধ করুন। পেয়ারা পাতার মিশ্রণটি লালচে হয়ে যাবে। এবার নামিয়ে ফেলুন। ঠাণ্ডা হওয়ার পর সেই মিশ্রণটি কোনো বোতলে ঢেলে নিয়ে হেয়ার টনিকের মতো নিয়মিত চুলের গোরায় ব্যবহার করুন।


পিয়াজ

চুল পড়া বন্ধ করতে ও নতুন চুল গজাতে ব্যবহার করতে পারেন পেঁয়াজের রস। পেঁয়াজে উচ্চ মাত্রায় সালফার থাকে। পেঁয়াজের রস মাথায় নতুন চুল গজাতেও চুল পড়া বন্ধে সাহায্য করে। মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়া উপাদান জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

ব্যবহার

পেঁয়াজের রস বের করে বাটিতে নিন। রসে তুলার ভিজিয়ে হাতের সাহায্যে মাথার ত্বকে লাগান। ৩০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। পেঁয়াজের রস একটানা সাতদিন ব্যবহারের পড়েই আপনি এর কার্যকারিতা দেখতে পাবেন।


ঘৃতকুমারী

রুক্ষ চুল,শুষ্ক চুল, চুল পড়া এই রকম চুলের শত শত সমস্যায় প্রতিটি নারীকে প্রতিনিয়ত পড়তে হয়। অ্যালোভেরা বা ঘৃত কুমারী স্বাস্থ্যরক্ষার পাশাপাশি ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে দারুন কার্যকর। অ্যালোভেরা পাতার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ও অ্যালোমিন শরীর, ত্বক এবং চুলের জন্য বেশ উপকারী এবং কার্যকর।

ব্যবহার

একটি অ্যালোভেরা পাতা থেকে এর জেলটি বের করে নিন।  তারপর মসৃণভাবে পেস্ট করে নিন। এবার মাথার স্ক্যাপ্ল-এ ভালো করে ঘষে ঘষে লাগিয়ে রাখুন প্রায় ১০-১৫ মিনিট। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতি সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল, নারকেল তেল এবং মধুর প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া এলোভেরা জেল, ডিম এবং টক দই এর হেয়ার প্যাক ও চুলের পুস্টি যোগাতে সাহায্য করে।


কালোজিরা

কালোজিরা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। মাথায় কালোজিরার তেল ব্যবহার করা আর খাবারে কালোজিরা ব্যবহার খুব ভালো ফল দেয়।কালোজিরার তেল চুলের ফলিকলকে ভাইব্রেট করে ও শক্তিশালী করে যার ফলে নতুন চুল সৃষ্টি হয়। এছাড়াও কালোজিরার তেল চুলের গোড়া শক্ত করে ও চুল পড়া কমায়। চুলের দৈর্ঘ্য বাড়াতেও এই তেল উপকারে আসে।

ব্যবহার

নতুন চুল গজানোর জন্য ১:১ অনুপাতে অলিভ অয়েল এবং কালিজিরার তেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে লাগান। এর পর একটি নরম তোয়ালে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে এবং পানি নিংড়ে পুরো চুল মুড়িয়ে মাথায় লাগিয়ে রাখুন ৪০ থেকে ১ ঘন্টা সময়ের জন্য। নিয়ম করে সপ্তাহে ২ বার এভাবে চুলের যত্ন নিলে নতুন চুল গজায়


আমলকী

আমলকীতে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি  যা চুলের স্বাস্থ্য সুন্দর রাখে।  এর ভিটামিন সি চুলের গোড়ায় কোলাজেন-এর মাত্রা বৃদ্ধি করে চুল বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। আর লেবুর রস চুলের খুসকি দূর করে এবং আমলকীর সাথে যুক্ত হয়ে চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।

ব্যবহার

একটি বাটিতে ২ টেবিল চামচ আমলকী গুঁড়ার অথবা বাটার  সাথে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার এটি চুলের গোড়ায়  লাগিয়ে এক ঘন্টা রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে নিন এবং সাধারণ তাপমাত্রার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক-টি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করতে পারেন।


মেহেদি পাতা

এ ভেষজ উপাদান চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চুলে নিয়ে আসে ঝলমলে ভাব। মেহেদির ভেষজ গুণ চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। মেহেদি প্রাকৃতিকভাবে পরিষ্কার করে চুল তাই মেহেদি লাগানোর পর আলাদা করে শ্যাম্পু করার দরকার হয়না ।মেহেদি চুলের আদর্শ খাদ্য। এটি চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

ব্যবহার

২ মুঠো তাজা মেহেদি পাতা অল্প পানি দিয়ে বেটে নিন। আপনি চাইলে এর সাথে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল যোগ করতে পারেন। এবার এটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল আবৃত করে রাখুন ৩০-৩৫ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। প্যাক-টি মাসে ১ বার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ডিম, মেহেদি বাটা অথবা গুড়া মেহেদি এবং যে কোন তেল একসাথে মিশিয়ে চুলে দিতে পারেন। এরসাথে আমলকী যোগ করতে পারেন।


মেথি

মেথিতে রয়েছে একপ্রকার হরমোন যা চুলের বৃদ্ধি ঘটায় আর হেয়ার ফলিকলকে মজবুত রাখে। মেথিতে আছে নিকোটিন অ্যাসিড ও লেসিথিন নামক উপাদান যা পাতলা চুল ঘন করতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুণ স্ক্যাল্পের ইনফেকশন রোধ করে এবং  প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসাবেও কাজ করে।

ব্যবহার

২ টেবিল চামচ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভিজিয়ে রাখা মেথি দানা ছেঁকে নিয়ে এর সাথে  আধা কাপ পরিষ্কার পানি যোগ করে ব্লেন্ডার-এ মসৃণভাবে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এই পেস্ট-টি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু  দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নিন। এটি সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করুন।


নিয়মিত ম্যাসাজ করা

নিয়মিত চুল ম্যাসাজ করতে হবে। এতে করে স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং স্ক্যাল্প উদ্দীপিত হবে। এক টেবিল চামচ ভিটামিন ই নিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করতে থাকুন। ভিটামিন ই চুলের জন্য প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন এর যোগান দেয়। ভিটামিন ই এর সাথে চা এর নির্যাস যোগ করতে পারেন। এই দুটো ভালোভাবে মিশিয়ে হাতের তালু এবং আঙুলের সাহায্যে পুরো মাথার চুলের গোড়ায় গোড়ায় লাগিয়ে নিন। ৫-৬ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিন। চুলগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে সম্পূর্ণ চুল আঁচড়ে নিন।

কিছুক্ষণ পর সাধারণভাবে শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুল গজানোর জন্য দিনে ৩ বার ম্যাসাজ করতে হবে এই নিয়মে। কিন্তু বারবার শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। এতে চুলের ক্ষতি হবে।


প্রোটিন

পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। আমাদের চুল মূলত কেরাটিন দিয়ে গঠিত। এটি অ্যামিনো এসিড দিয়ে তৈরি এক ধরণের প্রোটিন। তাই নতুন চুল গজানোর জন্যে অবশ্যই আপনার শরীরকে পর্যাপ্ত অ্যামিনো এসিড সরবরাহ করতে হবে। মাছ, মাংস, পনির, দুধ, ডিম—আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিনই এগুলোর অন্তত একটি রাখার চেষ্টা করুন।

নতুন চুল গজানোর জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার মাছ, মাংস, পনির, সয়াবিন, মটরশুঁটি, কলা, বাদাম ইত্যাদি থেকেও পেতে পারেন। তবে নন-ভেজিটেরিয়ান খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি।

আয়রন আর জিঙ্ক

আয়রন আর জিঙ্ক আপনার মাথার কোষে অক্সিজেন পরিবহন করে নিতে সহায়তা করবে আর নতুন টিস্যু তৈরিতে এবং ক্ষয়রোধে সহায়তা করবে। পরিমিত পরিমাণে আয়রন আর জিঙ্ক নতুন এবং দ্রুত চুল গজানোর জন্যে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মটরশুঁটি, বাদাম, কলিজা, মাংস, দুধে আপনার প্রয়োজনীয় জিংক আর আয়রন বিদ্যমান।

ভিটামিন সি

পেয়ারা, লেবু, কমলা, আনারস, কামরাঙা, কাঁচা মরিচে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং গজানোর জন্য সহায়ক।

সাধারণ যত্ন

১. নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা এবং আঁচড়ানো। কিন্তু অতিরিক্ত আঁচড়ানো চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়।

২. পেঁয়াজ এর রস চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে নতুন চুল গজাবে।

৩. মেহেদি পাতা কিছুদিন ঘন ঘন ব্যবহার করুন। পাতা বেটে লাগিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৪. শুকনা আমলকি পানিতে ভিজিয়ে লাগাতে পারেন।

৫. খাঁটি কালো জিরা তেল বা নির্যাস বেশি বেশি ব্যবহার করতে পারেন।

গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - Advantages and disadvantages of eating beef
মুখের দাগ দূর করার সহজ উপায় - Easy way to remove facial scars
বিটরুট এর উপকারিতা
অ্যাভোকাডো ফলের উপকারিতা
কেয়া বা কেতকী
মিষ্টি আলুর স্বাস্থ্য উপকারিতা
বাবলা গাছের উপকারিতা ও গুনাগুণ
সুস্থ থাকতে বাচ্চাদেরও নিয়মিত ব্যায়াম - Exercise regularly for children to stay healthy
আই মেকআপ করার নিয়ম - Eye makeup rules
রোজায় মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার কারন ও প্রতিকার - Causes and remedies for bad breath during fasting