ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা

ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা 

Advantages and disadvantages of eggs

ডিম স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তবে অনেকেই দৈনিক ডিম খেতে ভয় পান, যদি ওজন বেড়ে যায় কিংবা হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে এই ভেবে। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, সকালের নাস্তায় একটি করে ডিম খাওয়া শারীরিক বিভিন্ন রোগের সমাধান করতে পারে। তবে এটি নির্ভর করে কে কীভাবে ডিম খাচ্ছেন।

অনেকেই ডিমের কুসুম ফেলে দিয়ে সাদা অংশটা খান। পুষ্টিবিদদের মতে, দিনে একটি নয় অন্তত ২টি ডিম কুসুমসহ খেতে পারবেন। আর যদি এর চেয়েও বেশি ডিম খেতে চান তাহলে সাদা অংশ খেতে পারেন।

অন্যদিকে ডিম যত বেশি ভাজা হয় এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই ডিমের পোচ বা হাফ বয়েল খান। দরকার হলে ফুল বয়েল ডিমও খেতে পারেন। তবে ডিমের অমলেট সপ্তাহে একবার খান।

ডিম কি জাতীয় খাবার

ডিম একটি সহজলভ্য ও উন্নতমানের আমিষজাতীয় খাদ্য; যাতে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন, যা দেহগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সব ধরনের ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে।

ডিমে আছে- প্রোটিন, উপকারি ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, কোলেস্টেরল (১০০ গ্রামে ৩৭৫ মিগ্রা), ভিটামিনের মধ্যে নিয়াসিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, থায়মিন, পিরিডক্সিন, ফোলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ভিটামিন ডি, লিউটিন, জিয়াজেন্থিন, খনিজের মধ্যে রয়েছে- ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফোরাস, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, কপার, সেলেনিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিডের মধ্যে আছে- অলিক অ্যাসিড, লিনোলিক অ্যাসিড, লিনোলেনিক অ্যাসিড, আইকোসাপেন্টাইনোয়িক অ্যাসিড, ডকোহেক্সাইনোয়িক অ্যাসিড, পালমিটিক অ্যাসিড, স্টিয়ারিক অ্যাসিড, আরাচিডোনিক অ্যাসিড এবং ২০ টি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড, যা ছাড়া শরীরে প্রোটিন তৈরি হয় না।

ডিমের পুষ্টি উপাদান

একটি ডিমে অ্যানার্জি থাকে ১৪৩ ক্যালোরি। আর কার্বোহাইড্রেট থাকে ০.৭২ গ্রাম মতো। প্রোটিন থাকে ১২.৫৬ গ্রাম, ফ্যাট থাকে ৯.৫১ গ্রাম। এছাড়া ফসফরাস থাকে ১৯৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৩৮ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক থাকে ১.২৯ মিলিগ্রাম।

ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন ও কুসুমে থাকে ভালো ফ্যাট, আয়রন ও ভিটামিন। শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি, হাড় শক্ত করতে ও মেধার বিকাশে ডিম খুবই কার্যকর। ডিমে আরও আছে ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। আর কুসুমে থাকা ভিটামিন ডি, হাড়ের জন্য ভালো।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অপুষ্টি, রক্তাল্পতা ও ডায়াবেটিসের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়া উচিত। ডায়াবেটিস রোগীদের সুষম পুষ্টিকর খাদ্যের কথা বিবেচনা করে বিজ্ঞানীরা মুরগির ডিম ডায়েটে রাখার কথা বলছেন।

ডিমের উপকারিতা

শরীর সুস্থ রাখতে অনেক পুষ্টির প্রয়োজন হয়। এই পুষ্টি চাহিদা খাদ্যের মাধ্যমে পূরণ হয়। এমন পরিস্থিতিতে ডিম খাওয়া শরীরের পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করতে পারে। ডিম অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা শরীরের শারীরিক ও মানসিক উপকারে কাজ করতে পারে। 

ডিম প্রোটিনের ভালো উৎস:

আমাদের দেহের একটি অতি প্রয়োজনিয় উপাদান হলো প্রোটিন। আর প্রোটিনের খুব ভালো একটি উৎস হলো ডিম। ডিমে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন পাওয়া যায়। ডিমে থাকা প্রোটিন আমাদের দেহের হাড়কে শক্ত এবং মজবুত করে। ডিমে থাকা প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁত ভালো রাখে।

দেহে শক্তি বৃদ্ধি করে:

আমাদের প্রতিদিনের কাজকর্ম করার জন জন্য শক্তি দরকার। সকালের একটি মাত্র ডিম আপনাকে সারা দিন শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে। ডিমে থাকা ভিটামিন-বি আমাদের গ্রহনকৃত খাবারকে এনার্জিতে পরিনত করে।

দৃষ্টি শক্তি বড়ায়:

আমাদের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো আমাদের চোখ। চোখ ভালো রাখতে ভিটামিন-এ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। আর ডিমে রয়েছে ভিটামিন-এ। ডিমে থাকা কেরোটিনয়েড ও ল্যুটেন বৃদ্ধ বয়সে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা থকেনা।

ক্যান্সার প্রতিরোধক:

ক্যানসার একটি মারাত্মক ব্যাধি। ডিমে থাকা ভিটামিন-ই আমাদের ত্বক এবং কোষের ফ্রি র্যাডিকেল ধংস করে। এবং ক্যানসার প্রতিরোধ করে। এছাড়াও নতুন কোষ গঠন করতে সাহায্য করে। অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে নিয়মিত ডিম খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

পেশির ব্যাথা কমায় ও ক্ষয়পূরণ করে:

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারনে আমাদের হাত পায়ের পেশিতে ব্যাথা হয়। ডিম খেলে পেশির ব্যাথা কমে। তাই ডাক্তাররা ব্যায়াম করার পরে ডিম খাওয়ার কথা বলেন।

হার্ট সুস্থ রাখে:

আমাদের হার্ড ভালো রাখা অতি জরুরি। ডিম হার্ডের মধ্যে রক্ত জমাট বাধতে বাধা প্রদান করে। এবং সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরলের মাএা নিয়ন্ত্রণ করে:

আমাদের দেহে দুই ধরনের কোলেস্টেরল পাওয়া যায়। খারাপ কোলেস্টেরল এবং ভালো কোলেস্টেরল। ডিম খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে।

ডিম কোলাইনের উৎস:

আমাদের সার্বিক সুস্থতায় কোলাইন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। দেহে কোলাইনের ঘাটতি হলে লিভারের সমস্যা হয়। ডিমে প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রাম কোলাইন থাকে। তাই ডিম লিভার, স্নায়ু, এবং যকৃত ভালো রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:

আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডিমের ভুমিকা রয়েছে। ডিমে থাকা জিংক আমাদের দেহে কমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। সর্দি, কাশি, জ্বরসহ বিভিন্ন রকমের রোগ প্রতিরোধ করতে ডিম খাওয়া দরকার।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে:

ডিম ওজন নিয়ন্ত্রণের খাবার হিসাবেও কাজ করে। অনেক সময় খিদে বেশি থাকার কারনে আমরা বেশি খেয়ে ফেলি।প্রধানত, বেশি খাওয়ার কারনেই ওজন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ডিম আমাদের খিদে কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তাই ডিম খেতে পারেন ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য।

গর্ভাবস্থার জন্য

গর্ভাবস্থার জন্যও ডিমের উপকারিতা পাওয়া যায়। NCBI ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে ডিম গর্ভবতীকে পর্যাপ্ত পুষ্টি প্রদান করে এবং জন্মের পর অনাগত শিশুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে। ডিমে রয়েছে প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান, যা ভ্রূণের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে। তবে মনে রাখবেন শুধুমাত্র ভালোভাবে রান্না করা ডিমই খাওয়া উচিৎ।

হাঁসের ডিম বেশি উপকারী

প্রোটিনের ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। কেউ হাঁসের ডিম খেতে পছন্দ করেন, কেউ আবার মুরগির। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, মুরগির ডিমের থেকে হাঁসের ডিম বেশি উপকারী। কারণ-

১. ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে থাকে ১৪৯ কিলো ক্যালোরি এনার্জি। আর ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিম থেকে এনার্জি পাওয়া যায় ১৮৫ কিলো ক্যালোরি।

২. কার্বহাইড্রেট ও মিনারেলের পরিমাণ সমান হলেও হাঁসের ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ থাকে বেশি। দুই ডিমেই থাকে ম্যাঙ্গানিজ, দস্তা, তামা, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও আয়রন। 

৩. প্রতি ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে রয়েছে ১৮১ কিলো ক্যালোরি খাদ্যশক্তি। আর  মুরগির ডিমে পাওয়া যায় ১৭৩ কিলো ক্যালোরি খাদ্যশক্তি। 

৪. হাঁসের ডিমের ফ্যাট থাকে ১৩.৭ গ্রাম, মুরগির ডিমে থাকে ১৩.৩ গ্রাম। 

৫. সাইজে বড় হয় হাঁসের ডিম। মুরগির ডিমের চেয়ে হাঁসের ডিম প্রায় ৫০ শতাংশ বড় হয়। 

৬. হাঁসের ডিমের কুসুম মুরগির ডিমের থেকে বড় হয়। এ ছাড়া ফ্যাটের পরিমাণও বেশি থাকে। 

৭. নিউট্রিশনে ভরপুর হাঁসের ডিমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ ও ডি, আয়রন মুরগির ডিমের থেকে বেশি।

ডিমের কুসুম নাকি সাদা অংশ- কোনটি স্বাস্থ্যকর?

প্রায়শই অনেকেই এই কথা শুনেছেন যে ডিমের সাদা অংশ খাওয়া উচিৎ এবং হলুদ অংশ খাওয়া উচিৎ নয়। মানুষ মনে করে হলুদ অংশ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এখানে আমরা বলব ডিমের কোন অংশ বেশি স্বাস্থ্যকর।

ডিম এর সাদা অংশঃ ডিম প্রোটিন সমৃদ্ধ, অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড এবং সাদা অংশ ভিটামিন, যা শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। একই সময়ে, ডিমের ব্যবহার পোড়া ক্ষতের চিকিৎসায়ও সাহায্য করতে পারে। এমন অবস্থায় বলা যায় ডিমের সাদা অংশের উপকারিতা বেশি হতে পারে।

ডিমের কুসুমঃ ডিমের কুসুমে উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল এবং চর্বি পাওয়া যায়। তাই ডিমের হলুদ অংশ খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়তে পারে। অতএব, এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিৎ।

ডিম কীভাবে খেলে উপকার

একটি ডিম থেকে পাওয়া যায় অনেক পুষ্টি উপাদান। তবে বিভিন্ন গবেষণা বিভিন্ন সময় এই প্রিয় খাবারটি খাবে কি খাবে না, এ নিয়ে শঙ্কায় ফেলে।

কোনো গবেষণা বলে,  প্রতিদিন ডিম খাওয়া যাবে, আবার কোনো গবেষণা বলে সপ্তাহে দুটি।  তবে ডিমকে কীভাবে রান্না করে খাচ্ছেন তার ওপর ক্ষতি অনেক নির্ভর করে। 

অনেক তেলে ডিম ভেজে রোজ খেলে তা থেকে ক্ষতি হলে হতেও পারে। আবার ডিম কী দিয়ে খাবেন সেটাও কিন্তু বিবেচনার বিষয়। পরোটা,  লুচি,  খিচুড়ি, বিরিয়ানি ইত্যাদির সঙ্গে ডিম খেলে তা থেকে শরীরে কোলেস্টেরল বাড়ারই কথা। লাল আটার রুটি,  সিরিয়াল মিল্ক আর ডিম সিদ্ধ,  ব্রেড আর ডিম- এভাবে খেলে তা তেমন ক্ষতিকর নয়।

অনেকে ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া বন্ধ রাখে। অথচ ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর পুষ্টি ঘাটতি হয়। তাই ডায়রিয়া হলে একটা ডিম খাওয়া যেতে পারে। যেকোনো বয়সে ডিম একটা আদর্শ প্রোটিন। তবে কিডনি রোগে ডিম খাবে কি খাবে না তা নির্ভর করবে পুষ্টিবিদের ওপর।

ডিমের অপকারিতা

ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নির্ভর করে ডিম কতটা এবং কীভাবে খাওয়া হচ্ছে তার ওপর। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিচে আমরা দেখে নেব ডিম খাওয়ার অপকারিতাগুলো।

ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে, তাই এটি নিয়মিত বেশি পরিমাণে খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে।

ডিম খাওয়ার অপকারিতার মধ্যে রয়েছে অ্যালার্জিও। প্রকৃতপক্ষে, অনেক লোক ডিম খেয়ে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া পায়।

ডিম সঠিকভাবে না রান্না করে খেলে বমি ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

যাদের ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে তাদের ডিমের অতিরিক্ত সেবন এড়িয়ে চলা উচিৎ। ডিমের অতিরিক্ত মাত্রা এই ধরনের রোগীদের অবস্থা খারাপ করতে পারে ।

এখন আপনারা নিশ্চয়ই জেনে গেছেন ডিম খেলে কি হয়। একই সঙ্গে নিশ্চয়ই জেনেছেন যে ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতার ক্ষেত্রে পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর উপকারিতা শুধুমাত্র রোগকে দূরে রাখতে এবং চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে। কিন্তু, তাদের কখনই বোঝা উচিত নয় যে ডিম যে কোনও রোগের নিরাময়। কেউ যদি কোনো ধরনের গুরুতর সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ডিম খাওয়া উচিৎ নয়।

লেবুর শরবত কেন খাবেন
আমের উপকারিতা
ভাঁট গাছের উপকারিতা
বেলের ১৫টি গুনাগুণ ও উপকারিতা
আমের বিচির উপকারিতা
বরবটির উপকারিতা
রোজায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে যা করবেন - What to do to solve gastric problems during ramadan
শীতে দাড়ির যত্নে যা করবেন - What to do in winter beard care
খুশকি দূর করার উপায়-Ways to get rid of dandruff
আনারসের জুসের উপকারিতা - Benefits of pineapple juice