নাভিতে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ
Navel care

নাভিতে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ

৬৭ প্রকার জীবাণুর নিরাপদ আস্তানা হল মানুষের নাভি। দ্য বেলি বাটন বায়োডাইভার্সিটি প্রজেক্টে কাজ করতে গেয়ে গবেষকরা মানুষের নাভির মধ্যে ৬৭ রকম ব্যাক্টিরিয়ার উপস্থিতি টের পেয়েছেন। যা এতদিন অজানাই ছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের শরীরের মধ্যে সবচেয়ে নোংরা জায়গাটি হল নাভি। শরীর থেকে ঘাম চুঁয়ে জড়ো হয় নাভিতে। দিনের পর দিন নাভিগর্ভেই সেই ঘাম শুকোয়। ঘামের সঙ্গেই মেশে নোংরা-ধুলো। রয়েছে মরা ত্বক। গায়ে লোশন মাখলেও তা জমে এই নাভিতেই।

এইসব ব্যাক্টেরিয়া কোন ভাবে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশের সুযোগ পেলে কী হবে- বুঝতে পারছেন নিশ্চয়! রোগের হাত থেকে বাঁচতে চাইলে নাভি থেকে সাবধান।

নাভির যত্ন 

আমাদের শরীরের খুবই গুরত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ অথচ সেই অঙ্গটা অবহেলিত। নাভি যতটা গুরুত্বপূর্ন ঠিক ততটাই অবহেলিত। আমার নাভির দিকে খুব একটা খেয়ালি করি না। আমাদের মধ্যে হয়ত ৮০% মানুষ সপ্তাহে ১ বারও নাভির যত্ন করি না। যার কারণে হতে পারে আমাদের ভয়ানক সব সমস্যা।

আমাদের নিজেদের কর্মের কারণে আমাদের পেটে সমস্যা সহ নানা রোগ হয়। অথচ আমরা দিন শেষে অসুখের জন্য ঔষধ সেবন করি ঠিকি, কিন্তু যে কারণে রোগ হল সেই দিকে গুরুত্বারোপ করি না। আর এ কারণে কিছু দিন না যেতেই পড়তে হচ্ছে অসুখের মুখে, সেবন করতে হচ্ছে নানা মেডিসিন। যা ধীরে ধীরে আমাদের আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং একই সাথে ঢেলে দিচ্ছে মৃত্যুর মুখে।

তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অসুখে না। অভ্যাস ও অসুখ হওয়ার কারণে নজর দিন, তাহলেই কেবল মাত্র সুস্থ্য থাকা সম্ভব।

নাভিকে সঠিকভাবে যত্ন না নিলে হতে পারে অনেক রোগ, তাই আসুন জেনেনি কিভাবে নাভির যত্ন নিবেন। এবং কি কি কারণে নাভি থেকে রোগ ছড়াতে পারে। 

আমাদের প্রতিদিনকার পরিশ্রমের ফলে নাভিতে পড়া ধুলাবালি, নাভিতে জমে সেখান থেকে হতে পারে নানা রোগ ও ইনফেকশন।  তাই চেষ্টা করুন অন্তত ২ দিন পর পর হলেও নাভির যত্ন নিতে। 

নাভি ঠিক রাখার নিয়ম

অনেকেই আছি, যারা শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় শরীরে তেল মালিশ করি। যদিও তেল মালিশ করতে বেমালুম ভুলে যাই নাভিদেশে। যার ফলে নানারকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ঠিক কি কি কারণে নাভির যত্ন নেওয়া উচিত এবং এমনটা করলে কি কি উপকার পাওয়া যায়, তাই নিয়েই আজকে জানাব আপনাদের। নাভিতে নিয়মিত তেল লাগালে নানা উপকার পাওয়া যায়। যেমন-

১. ত্বককে আর্দ্র রাখে

সরষের তেল প্রাকৃতিক গুণসমৃদ্ধ হওয়ায়, ত্বকের যত্নে খুবই উপকারী ভূমিকা নেয়। তাই নিয়ম করে পেটে এবং নাভিদেশে তেল লাগালে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, নাভির যত্নে নারিকেল তেল এবং অলিভ অয়েলও খুবই কাজে দেয়। কারণ এই তেলগুলিতে ফ্যাটি এসিড থাকে, যা শরীরকে চাঙা রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

এ ক্ষেত্রে কিভাবে ব্যবহার করবেন তেলকে? কয়েক ফোঁটা তেল পেটের ওপর দিয়ে ভালো করে মালিশ করতে হবে। এমনটা করলে ত্বক উজ্জ্বল এবং নরম হবে।

২. ময়লা দূর করে

নাভিতে খুব তাড়াতাড়ি ময়লা জমে। যদিও আমরা সারা শরীরের যত্ন নিলেও নাভির কথা বেমালুম ভুলে যাই। তাই তো নাভিতে নিয়ম করে পরিষ্কার রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এ ক্ষেত্রে একটি ছোট তুলোয় জোজোবা, সূর্যমুখী অথবা আঙুর বীজের তেল কয়েক ফোঁটা নিয়ে নাভিতে ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত এমন অভ্যাস করলে নাভিতে জমে থাকা ময়লা এবং মৃত কোষের স্থির ধুয়ে যায়। প্রসঙ্গত, খুব জোরে নাভিতে তুলো ঘষবেন না। এতে আপনি ব্যথা পেতে পারেন। তাই আলতো চাপ দিয়ে নাভি পরিষ্কার করাই সবথেকে ভাল।

৩. সংক্রমণ রোধ করে

সঠিকভাবে নাভির যত্ন নিলে সংক্রমণ দূর হয়। সবথেকে ভালো হয় তেল হিসাবে যদি টি ট্রি-তেল ব্যবহার করা যায়। কারণ এই তেলের মধ্যে জীবাণুনাশক এবং ছত্রাকনাশক উপাদান কয়েছে, যা ইনফেকশনের আশঙ্কা কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে। তবে নিত্যান্তই যদি টি ট্রি-তেল হাতের কাছে না পান, তাহলে কয়েক ফোঁটা সরষের তেলও একইরকম ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। সরষের তেল ব্যবহার করতে হলে তিন ফোঁটা সরষের তেল, এক চা চামচ নারিকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। দিনে একবার থেকে দুবার এই তেলের মিশ্রণটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. পেটে ব্যথা দূর করে

নিয়মত নাভিতে তেল মালিশ করলে পেটে ব্যথার সমস্যা দূর হয়। এ ছাড়াও হজমের সমস্যা, ডায়রিয়া, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে হওয়া পেটে যন্ত্রণা রোধ দারুনভাবে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, বমি বমি ভাব এবং গ্যাসের সমস্যা রোধ করতেও পেটে তেল মালিশ করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত, পেটে তেল মালিশের ক্ষেত্রে পুদিনার তেল অথবা আদার নির্যাসযুক্ত তেল ব্যবহার করা খুবই ভাল। তবে এই ধরনের তেল ব্যবহার করার আগে নারিকেল তেল, বাদাম তেল বা অলিভ অয়েলে মিশিয়ে নেওয়া উচিত।

৫. ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা রোধ করে

মাসের নির্দিষ্ট দিনে ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা নারীদের এক বিভীষিকাময় অধ্যায়। এই সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কীভাবে? পুদিনা তেল, সাইপ্রেস অথবা আদার তেল নিয়মত নাভিতে মালিশ করলে ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা অনেকটাই কমে।

৬. সন্তানধারণে সাহায্য করে

নাভিতে নিয়মিত তেল লাগালে সন্তানধারণে খুবই উপকার হয়। সন্তানধারণের সঙ্গে নাভির ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে। কারণ জন্ম অবধি সন্তান তার মায়ের সঙ্গে নাড়ির দ্বারাই যুক্ত থাকে, যা নাভির সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে শুধুমাত্র নারী নয়, পুরুষদেরও সুস্থ থাকতে একইরকম ভাবে নাভিতে তেল ব্যবহার করা উচিত। এ ক্ষেত্রে নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে দামিয়ানা, ১০টি পেয়েরা পাতা, ১১টি জুনিপার মিশিয়ে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, এই তেলটি ব্যবহার করলে পেটের যন্ত্রণা কমে। সেই সঙ্গে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি পায় এবং ঋতুস্রাব কালীন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৭. নাভিচক্র বজায় রাখতে সাহায্য করে

হাজার বছরের পুরোনো ভারতীয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে নাভির যত্নকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আয়ুর্বেদিক মতে নাভি হল সৃষ্টি এবং কর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই কারণেই নাভিচক্র বজায় রাখতে তেলের ব্যবহার খুবই প্রয়োজন।

নাভিকে সুস্থ রাখতে চন্দন তেল, গোলাপ তেল ইত্যাদিও ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও এগুলি অন্যান্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করাটাই সবথেকে ভাল।

কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা - Home Remedies for Kidney Disease
কেন গাজর খাবেন?
ফুল দীর্ঘস্থায়ী করার সহজ উপায় - Easy way to make flowers last longer
যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে রসুনের ভূমিকা
বিলিম্বি ফলের উপকারিতা ও গুণাগুণ
ইঁদুরে কামড়ালে যা করবেন
জলাতঙ্কের লক্ষণ ও প্রতিকার
বন্ধ নাক খোলার উপায়
বাজারের সেরা হারবাল শ্যাম্পু-best herbal shampoo on the market
বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার উপায়