পিরিয়ডের সময় কিংবা কারো কারো ক্ষেত্রে তার আগেই তলেপেটে, মাথায়, কোমরে বা পায়ে ব্যথা হয়ে থাকে, যা খুবই স্বাভাবিক। তাছাড়া কারো কারো বমিভাবও। সব মিলিয়ে শরীরে হয় এক অস্বস্তিকরভাব। অনেকেই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ওষুধ সেবন করেন। তবে নিয়মিত ট্যবলেট সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। চিকিৎসকেরা ব্যথা নিরাময়ে ওষুধ না খেয়ে লাইফ স্টাইল পরিবর্তনের ওপর জোর দিতে বলেন। কিছু খাবার রয়েছে, যে গুলি নিয়মিত খেলে পিরিয়ডের ব্যথা কম হয়।
১.প্রচুর পানি পান
ঋতুস্রাবের সময় প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করা জরুরি। এ ছাড়া লেবুপানি বা পুদিনাপানি পান করতে পারেন।
২.পুষ্টিকর খাবার
যারা মাসিকের সময় পেট ব্যথার যন্ত্রণায় ভোগেন তারা সবসময় ভিটামিন যুক্ত খাবার অর্থাৎ চিনা বাদাম, পেস্তা বাদাম, বাঁধাকপি, কলা। চেরি, টমেটো, চর্বিজাতীয় মাছ, কাঠবাদাম, সবুজ শাকসবজি খাবারের তালিকায় রাখুন।
শরীরে এই সময় প্রয়োজন আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। তাই ফলের মধ্যে বেদানা, খেজুর খেতে পারেন।
৩.দারুচিনি
এক গ্লাস গরম জলে একটুখানি দারুচিনির গুঁড়ো যদি আপনি মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন এবং সেটা যদি দিনে তিনবেলা করতে পারেন তাহলে আপনি ভাল একটি উপকার পাবেন।
৪.পেঁপে
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য পেঁপে খাওয়া বেশ কার্যকর। পিরিয়ডের সময় নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন। কাঁচা পেঁপে পিরিয়ডের ব্যথা কমিয়ে দেয়।
৫.আদা
আদার মধ্যে প্রদাহরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। আদা চা পান করলে এই সময় বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া কয়েক টুকরো আদা গরম জলে সেদ্ধ করে মধু-চিনি সহযোগে দিনে তিন-চারবার পান করতে পারেন।
৬.গরম ভাপ
মাসিকের সময় প্রচন্ড তলপেট যদি ব্যাথা হয় আর এই তল পেট ব্যথায় গরম জলের সেঁক নিলে পেট ব্যথায় বেশ আরাম পাওয়া যায় এবং কিছুটা কম অনুভূত হয় এই ব্যাথা। তাই গরম জলে সেঁক দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারেন হট ওয়াটার ব্যাগ।
৭. তেলর মাসাজ
তলপেট ব্যথার সময় কয়েক ফোঁটা নারকেল বা ল্যাভেন্ডার তেল পেটে দিয়ে হালকা হাতে মাসাজ করুন। ব্যথা তাড়াতাড়ি কমে যাবে।
অ্যালোভেরা রসের সাথে মধু মিশিয়ে একটি জুস তৈরি করে ফেলুন। পিরিয়ডের ব্যথার সময় এটি পান করুন। দিনে কয়েকবার এটি পান করুন। ব্যথা অনেকখানি কমিয়ে দেবে এই পানীয়।
৯.মৌরি
এই দানাদার মসলাতে রয়েছে ‘অ্যান্টিসপাসমডিক’ এবং ‘অ্যান্টিইনফ্লামাটরি’ উপাদান, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ব্যথা বাড়লেই অল্প করে মুখে দিয়ে চাবিয়ে নিতে পারেন অথবা পানিতে ফুটিয়ে অল্প করে চায়ের মতো পান করলেও উপকার পাওয়া যায়।
১০.চর্বি এড়িয়ে চলুন
চর্বিযুক্ত খাবার এ সময় এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। এসব খাবারে ক্ষতিকর উপাদান ও লবণ থাকে, যা পিরিয়ডের সময় ব্যথা বৃদ্ধি করতে পারে। কলা খান। এর পটামিয়ামে উপকার মিলবে।
পিরিয়ডের সময় ব্যথা সহ্যসীমার মধ্যেই সাধারণত থাকে। যদি তা না হয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অসহ্য ব্যথা হতে থাকে, অবশ্যই গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।