আনারসের জুসের উপকারিতা - Benefits of pineapple juice
আনারসে থাকা এনজাইম ব্রমেলেইন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। প্রচন্ড গরমে বা ব্যায়াম করার পর অথবা অনেক হাটাহাটি করার পর শরীরের ক্লান্তি দূর করতে ফলের জুস বা শরবত সবময়ই খাওয়া উচিৎ। অন্যান্য ফলের রস থেকে আনারসের জুস খুবই উপকারি। ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি আনারসের জুস ঠাণ্ডা, কাশি, জ্বর ও ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
পুষ্টিগুণ
আনারস ভিটামিন এ, বি ও সির একটি উৎকৃষ্ট উৎস। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ব্রোমেলেইন, বিটা-ক্যারোটিন, মিনারেল, শর্করা, ফাইবার, আয়রন, প্রোটিন ও সহজপাচ্য ফ্যাট খুবই অল্প পরিমাণে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আনারস থেকে প্রায় ৫০০ ক্যালোরি শক্তি পাওয়া যায়।
আনারসের জুস খাওয়ার উপকারিতা
১. নিয়মিত আনারসের জুস বা আনারস খেলে লিভারের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।
২. আনারসে আসে বিটা-ক্যারোটিন, যা ম্যাকুলার ডিজেনারেশন নামের চোখের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৩. আনারসে থাকা পটাসিয়াম আমাদের শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রেখে শক্তি বৃদ্ধিতে উপকারি। এজন্য নিয়মিত আনারসের জুস খাওয়া প্রয়োজন।
৪. আনারসে থাকা ব্রোমেলিন শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে ও প্রদাহ জনিত ব্যথা নিরাময় করতে কাজ করে।
৫. যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা নিয়মিত আনারসের জুস খেতে পারেন। এতে প্রচুর ফাইবার ও কম ক্যালরি আছে।
৬. আনারসে থাকা বেটা ক্যারোটিন রেটিনার সুস্বাস্থ্যে কার্যকর। এছাড়া বয়সজনিত কারণে হওয়া চোখের সমস্যাও দূর করে থাকে। পাশাপাশি আনারস দাঁতের সুরক্ষায়ও কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।
৭.এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, মিনারেলস, ম্যাংগানিজ ও ভিটামিন থাকে। মুখের ভেতরের জীবাণুর আক্রমণ রোধ করে।
৮. যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি হজমের সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য আনারসের জুস খুব ভালো । আনারসের জুসের মধ্যে থাকে ব্রোমেলিন নামক একটি এনজাইম। যা আমাদের হজমজনিত সমস্যা দূর করে।
৯. আনারসের জুসে আছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের বড় উৎস। এটি হাড় মজবুত করে। প্রতিদিন এক গ্লাস করে আনারসের জুস পান করলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
১০. দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না আনারসের জুস। ফলে হৃদপিণ্ড শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করতে পারে খুব সহজে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃদপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে।
১১. শ্বাসনালির বিভিন্ন সমস্যায় উপকারী হিসেবে কাজ করে আনারসের জুস। বিশেষ করে এটি অ্যালার্জি ও হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। পুষ্টিবিদ ল্যাসি এনগো বলেছেন, আনারসের জুসে থাকা ব্রোমেলাইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো মৌসুমি অ্যালার্জির লক্ষণ এবং হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে উপকারী হিসেবে কাজ করে।
১২. অনেক সময় ব্যায়াম করার পর বা অতিরিক্ত ঘামে আমাদের শরীর থেকে পানি বের হয়ে হাইড্রেশনের মাত্রা কমে যেতে পারে। এ সময় এক গ্লাস আনারসের জুস আপনার রিহাইড্রেশন করতে সহায়তা করতে পারে।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. প্রথমে আনারস ভাল করে ধুয়ে উপরের খোসা ভালভাবে কেটে নিন। টুকরো করার আগে আরেকবার ধুয়ে নিবেন যাতে খোসার ময়লা বা কস লেগে না থাকে।
২. এখন আনারসের মাঝখান দিয়ে কেটে ভিতরে শক্ত অংশটুকু ফেলে ছোট ছোট টুকরা করে নিবেন।
৩. আনারসের সাথে, লবণ, বিট লবণ, কাঁচামরিচ, চিনি, গোল মরিচের গুঁড়া ও ফ্রিজের ঠান্ঠা পানি বা বরফের টুকরো মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন।
৪. ব্লেন্ডার করার পর যদি আঁশসহ না খেলে ছেঁকে নিবেন। এরপর গ্লাসে জুস বা শরবত ঢেলে পরিবেশন করুন।
যা যা লাগবে
আনারস ১ টি বা আধা কেজি, বিট লবণ ও লবণ ২/৩ চিমটি, কাঁচামরিচ ১/২টি বা গোলমরিচ গুড়া আধা চামচ, চিনি, বরফ টুকরো ও পানি পরিমাণমত।