বাবা-মা হওয়ার সঠিক বয়স কত?
অনেক পুরুষের ভাবনা, সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের বয়স কোনো বাধা নয়। তাদের এই ধারণা একেবারেই ভুল। যদিও ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সি অনেক পুরুষও সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছেন। গিনেস বুক রেকর্ডসের মতে, ৯২ বছর বয়সি এক পুরুষ সন্তানের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছেন।
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, ৪০ বছরের পর পুরুষদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষদের ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়স পিতা হওয়ার জন্য আদর্শ।
নারীদের ক্ষেত্রে ঋতুবন্ধের পরে সন্তানধারণের কোনও সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু ছেলেদের শরীরে শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়া কখনও বন্ধ হয় না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাদের নারীদের মতো ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’ নেই।
পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে শুক্রাণুগুলো জেনেটিক মিউটেশনের মধ্য দিয়ে যায়। ফলে শুক্রাণুর ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পুরুষদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা প্রভাবিত হয়। শুধু তা-ই নয়, সেই বয়সে যদি তিনি সন্তানের জন্ম দিয়েও ফেলেন, তাহলে শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুদের স্নায়ুতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
প্রথম সন্তান নেয়ার জন্য মেয়েদের ২৫ বছর উপযুক্ত সময়। আর ৩৫ বছর বয়সের পরে সন্তান না নেয়াটাই ভালো। সাধারণত ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত ঝুঁকিহীন হয়ে সন্তান জন্ম দেয়া যায়।
বাবা-মা হওয়ার সঠিক সময়
অনেকেই হয়তো জানেন না যে, বাবা-মা হওয়ার সঠিক বয়স কত? চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, বাবা-মা হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় কখন-
২০ বছরের আগে
এ বয়সে একটি সন্তানকে স্বাগত না জানানোই ভালো। কমবয়সে বাবা-মা হলে সেখানে আর্থিক সমস্যা থাকতে পারে। এমনকি আপনি তখন শিশুকে বড় করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নাও হতে পারেন।
২০-২৪ বছর
২০ বছরের পর থেকে বেশিরভাগ মানুষই খুব উর্বর থাকে। তথ্য অনুসারে, এ বয়সে নারীদের প্রতি মাসে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ২৫ শতাংশ থাকে।
আপনি যদি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকেন তাহলে এ বয়সেও সন্তান নিতে পারেন, বিশেষ করে নারীরা। তবে এই বয়সে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার বুদ্ধি, ধৈর্য ও আর্থিক স্থিতিশীলতা থাকতে হবে।
৩০-৩৪ বছর
ইয়েল ইউনিভার্সিটির প্রসূতিবিদ্যা, স্ত্রীরোগবিদ্যা ও প্রজনন বিজ্ঞানের ক্লিনিকাল অধ্যাপক মেরি জেন মিনকিনের মতে, ৩০-৩৫ বছরের পর থেকে নারীর উর্বরতা কমতে শুরু করে।
অনেকে ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে এ বয়সে ব্যস্ত থাকায় সন্তান নিতে পারেন না। পরবর্তী সময়ে গিয়ে তারা গর্ভধারণে ব্যর্থ হন, তাই ৩০ বছরের পর থেকে সব নারীদেরই গর্ভধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
৩৫-৩৯ বছর
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩২ বছর বয়স থেকেই উর্বরতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে শুরু করে। ৩৭ বছর বয়সে গিয়ে তা আরও কমতে শুরু করে।
আইভিএফ’এর মতো বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার সাফল্যের হারের সম্ভাবনার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। বেশি বয়সে গর্ভধারণের কারণে উচ্চ রক্তচাপ ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের মতো স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে শুরু করে।
৪০-৪৫ বছর
গবেষণা অনুসারে, ৪০ বছর বয়সে নারীদের প্রতি মাসে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৫ শতাংশেরও কম। ৪০ বছরের বেশি বয়স্কদের গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া