মন ভালো রাখার উপায়

আপনার মন কি খুবই বিচলিত?

আপনি কি প্রায় সময়েই মন খারাপ করতে থাকেন?

কিছুতেই কি মন ভালো থাকে না ?

আর এই কারনেই অবসাদে ভোগেন?

মন আলোর চেয়েও জোরে দৌড়াতে থাকে। মন কিরকম পরিবেশের ওপর দিয়ে বিচরণ করে, তার ওপরেই নির্ভর করে তথ্য কি রকম হবে। মন সবরকমের তথ্য এর খবর রাখে আর সেই তথ্য অনুযায়ী বেশীরভাগ মানুষের সুখ দুঃখের স্ট্যাটাস নির্ভর করে।

আসুন, দেখে নেওয়া যাক কিভাবে মন ভালো করা যায় মাত্র ১৫ টি স্টেপস এর মাধ্যমে।

১। মন ভালো রাখতে দায়িত্ব নিন

মন খারাপ হয় –এই রকম কথা বলবেন না। বার বার এইটা বলা অভ্যেস করুন যে – “মন খারাপ করি।” মন কি এমনি এমনি খারাপ হয়? প্রতিটি ঘটনার পিছনে কোন অন্তর্নিহিত কারন থাকে।“আমিই আমার মন খারাপের জন্য দায়ী। মনের চিন্তাগুলো আমি তৈরি করি।“চিন্তাগুলোর তৈরি করার দায়িত্ব যদি আপনি নিতে পারেন, তাহলে আপনি ক্রমশ বুঝতে পারবেন যে আপনি নিজেই আপনার মনের স্ট্যাটাস তৈরি করেন।যেভাবে একটা বাচ্চার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে থাকেন; ঠিক সেইভাবে আপনি আপনার মন এর দায়িত্ব নিন। মন তো বাচ্চাই। তাইতো নানান রকমের দুষ্টুমি করতে থাকে। আর এই দুষ্টুমিগুলো নিয়ন্ত্রনে আনার দায়িত্ব তো আপনাকেই নিতে হবে।

২। বেশী তথ্য দিয়ে মনকে ভারাক্রান্ত করবেন না

যেসব তথ্য আপনার কোন কাজে আসবে না, সেই রকমের তথ্য সংগ্রহ করবেন না। আর যা যা তথ্য সংগ্রহ করবেন, সেইসব তথ্যগুলোর সত্যতা যাচাই করে নিন। মন তো একটা মন্দির। আর তথ্যগুলো সেই মন্দিরের সদস্য এবং আপনি হলেনএই মন্দিরের মালিক। তাই তথ্যগুলোকে ফিল্টার করে, শুধু পজিটিভ তথ্যগুলোকে মন্দিরে ঢুকতে অনুমতি দিন।

৩। মন ভালো করার জন্য কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকুন

নিজেকে কাজের মধ্যে এতটায় ব্যস্ত রাখুন যেন আপনি উল্টোপাল্টা ভাবার সময় না পান।জানেন তো- যখন আপনার কোন কাজ থাকে না, আপনার মন এদিক-ওদিক থেকে শুধু তথ্য খুঁজে বেড়ায়?আর আপনি যদি দরজাতে পাহারা না দেন এবং সেই দরজা সবসময় খুলে রাখেন তাহলে তো সবাই ঢুকে পড়বে। তাই কাজের মধ্যে ব্যস্ত থেকে মনের দরজাকে বন্ধ রাখুন।

৪। ভালো লাগা কাজগুলোতে ডুবে থাকুন

কি কি কাজ করলে আপনি ভালো থাকেন সেইগুলো আগে জানুন। তারপর যেসব কাজ ভালো লাগে সেইসব কাজ করুন।ওইসব কাজে কোন বাধা এলে সেই বাধার জন্য মনকে ভারাক্রান্ত না করে, কি করে সেই বাধা কাটিয়ে ওঠা যায়- তা নিয়ে ধারণা করুন।বাধা কাটিয়ে ওঠার জন্য বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পরিশ্রমই করতে হয়।

৫। মন ভালো রাখতে নিজেকে সাজান আর আয়নাতে মুখ দেখুন

আপনি যখন নিজেকে সুসজ্জিত করেন, আপনার মধ্যে একটা পজিটিভ শক্তি কাজ করে। আপনি তখন নিজেকে আরও কিভাবে সুন্দর করা যায়, স্মার্ট আউটলুক দেওয়া যায়- তাই নিয়ে ভাবতে থাকেন। আর সেইসব উপায়গুলো খুঁজে বার করে পূর্ণ করতে পারলে, আপনি গর্ববোধ করবেন।

৬। স্বনির্ভর হন

আপনি নিজেকে আরও সুন্দর করতে পারবেন যখন আপনি স্বনির্ভর হবেন। আপনার চেহারাতে উজ্জ্ব্যল্য ফিরে আসবে।টাকাপয়সা রোজগারের দিকে আপনাকে স্বনির্ভর হতে হবে যাতে করে আপনি নিজেকে সাহায্য করতে পারেন; অন্যদের ও যারা অভাবের অন্ধকারে আচ্ছন্ন তাদের কিছু দান করতে পারেন।

৭। মন ভালো রাখতে দান করুন

দান করার জন্য অপেক্ষা করবেন না। আপনার কখন প্রচুর টাকা হবে তার জন্য অপেক্ষা করবেন না ।যখন থেকে আপনি স্বনির্ভর তখন থেকেই দান শুরু করুন। আপনার সাধ্যের মধ্যে যেটুকু কুলোয়, সেইটুকুই দান করুন।দান করা মানে অন্যকে খুশী করা। আর অন্যকে যখন আপনি খুশী করবেন, সেই খুশী আপনার কাছেও আসবে।আপনার চাকুরীতে প্রমশেন হবে ,সেইদিন আপনি দান করবেন – এই আশা মন থেকে মুছে ফেলুন। আপনি যা দেবেন, তাই আপনার কাছে ফিরে আসবে। তাইতো, যখন আপনি স্বনির্ভর নন, তখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে অন্যদের খুশী দিন।

৮। শপিং করুন

নিজেকে আরও ভালোভাবে সুসজ্জিত করার জন্য যা যা লাগবে ধীরে ধীরে সেইসব কিনে ফেলুন।একসাথে সব কেনার পরিকল্পনা করবেন না। নিজের যা যা ভালো লাগে তাই কিনুন। ভালো লাগা গুলোর মধ্যেও বৈচিত্র্য আছে।আপনার হয়তো ৪-৫ টা কাজ ভালো লাগে। কিন্তু এই চার পাঁচটা কাজের মধ্যে কোনটা কম টাকা খরচ করেই সম্ভব হবে ,সেই কাজের জিনিষগুলো আগে কিনুন।

৯। মনের মধ্যে নিজের প্রশংসা করুন

নিজেকে ভালবাসুন। নিজের গুনগুলো খুঁজে বার করুন। নিজের সম্পর্কে কিছু পজিটিভ কথা বলুন। প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কিছু ভালো গুন থাকে। মনের মধ্যে নিজের প্রশংসা করুন কিন্তু অহঙ্কার কে মনের মধ্যে আশ্রয় দেবেন না।

১০। গান, নাচ যা আপনার ভালো লাগে তাই করুন

অবসর সময়ে আমোদপ্রমোদ করুন। যেমন ধরুন, যদি আপনি গান গাইতে ভালবাসেন, গান গাইবেন কিংবা গান শুনবেন। গান পারফেক্ট গাইতে পারছেন না বলে আফসোস করবেন না। যা আপনার মনকে ভালো রাখে, তা বন্ধুই হয়। আবার কখনো নাচ করুন। হোক না নাচ বাজে, আপনার উদ্দেশ্য তো মনকে আনন্দ দেওয়া। আবার কখনো খুব জোরে হাসুন।

১১। মনের রাগগুলোকে ডায়েরি তে লিখুন

মনের মধ্যে কি অনেক কথা জমে আছে? কারো সাথে শেয়ার করতে পারছেন না? মন ভারী হয়ে থাকছে? মনের রাগগুলোকে ডায়েরি তে লিখে মন থেকে ঝেড়ে ফেলুন। আর এইভাবে মনকে খালি করুন, হাল্কা করুন। মন খালি করার পর, সেই শুন্য মনে পজিটিভ শক্তি ভরুন।

১২। কিছুটা সময় শুধু নিজের জন্য কাটান

প্রত্যহ কিছুটা সময় শুধু নিজের সাথে অতিবাহিত করুন। এই সময়ে আপনি চুপচাপ ঈশ্বরের সামনে বসে কিছু ইচ্ছা নিবেদন করুন, কিংবা সারাদিনে কি কি শিখেছেন তাই ভাবুন।আর ভাবুন –আপনি আগামীকাল কি করে আজকের চেয়ে কিছুটা হলেও ভালোভাবে কাটাতে পারবেন।

১৩। নিজেকেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বানান

সবসময় নিজের সাথে নিজের তুলনা করুন। গতকাল আপনি যে যে কাজ যেভাবে করেছিলেন, আজ যেন তার চেয়ে ভালো কিছু করতে পারেন। এইদিকে ফোকাস রাখুন।অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করে নিজেকে কষ্ট দেবেন না।

১৪। প্রকৃতির সাথে কিছুটা সময় কাটান

প্রকৃতির সাথে কিছুটা সময় কাটান। কিংবা খোলা ছাদে পায়চারী করুন। সাথে সপ্তাহে ৩-৪ দিন হলেও ব্যায়াম করুন। প্রকৃতি থেকে কিছু শিখুন। মন খারাপ হলে প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে প্রকৃতির সাথে শেয়ার করুন।প্রকৃতি আমাদের সবচে বড় শিক্ষক আবার সবচে ভালো বন্ধুও। প্রকৃতিকে মনের চোখ দিয়ে দেখুন। আপনি প্রকৃতির কথা ভাববেন, প্রকৃতিও আপনার কথা ভাববে।

১৫। কিছু মটিভেশনাল বই পড়ুন- যা মন ভালো রাখবে

আপনার পছন্দমতো কিছু মটিভেশনাল বই পড়ুন। প্রত্যহ ২ টো পাতা হলেও পড়ুন। সেই দুটো পাতা থেকে সবচে ভালো লাগা কথাগুলো কোথাও লিখে রাখুন।আর এই লিখে রাখা কথাগুলো আপনি আপনার রুমের দেওয়ালে আটকে রাখবেন।

গরুর মাংস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - Advantages and disadvantages of eating beef
ঠোঁটের চামড়া ওঠার কারণ ও প্রতিকার - Causes and remedies for lip skin
ঘর থেকে টিকটিকি তাড়াবেন যেভাবে
মাখনা ফলের উপকারিতা-Benefits of Foxnut fruit
পুঁই শাকের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
তেলাকুচা গাছের গুনাগুন
জামের উপকারিতা
জাম্বুরা খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
চাল কুমড়ার উপকারিতা
ফাউন্ডেশনের নাম ও দাম - Foundation name and price