শীতে দাড়ির যত্নে যা করবেন - What to do in winter beard care
পুরুষের চেহারায় আলাদা আভিজাত্যের ছাপ এনে দেয় দাড়ি। এখনকার বেশিরভাগ ফ্যাশন সচেতন তরুণই দাড়ি রাখেন। কিন্তু দাড়ি রাখছি বললেই তো হল না, তার যত্নও দরকার। না হলে দাড়ির গোড়ায় ময়লা জমে নানা ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। শীতের সময় চুলে যেমন আর্দ্রতা দেখা দেয়, তেমনি রুক্ষতা ভর করে দাড়িতেও। তাই শীতে ত্বক, চুলের পাশাপাশি দাড়ির আলাদা যত্ন নেওয়া আবশ্যক।
নিয়মিত পরিষ্কার করা
মাথায় যদি নিয়মিত শ্যাম্পু করেন, তা হলে দাড়িতে নয় কেন? অনেকেরই দাড়ি রীতিমতো ঘন হয়। তার ভিতর ময়লা জমে। ফলে দাড়ির গোড়ায় নানা ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। তা থেকে ক্ষতি হতে পারে ত্বকের। তাই নিয়মিত দাড়ির যত্ন নিতে শ্যাম্পু করা উচিত। কোন জাতীয় শ্যাম্পু আপনার ত্বকের জন্য ভাল, সেটিও মাথায় রাখতে হবে।
তেল ব্যবহার করুন
দাড়িতে ব্যবহার করার জন্য নানা ধরনের তেল পাওয়া যায়। এটি দাড়ির ঘনত্ব ঠিক রাখে। তা ছাড়া দাড়িকে শুষ্ক হয়ে যেতে দেয় না। যদি আপনার ঘাম বেশি হয়, তা হলে সপ্তাহে এক বা দু’দিন এই তেল ব্যবহার করুন। আর ঘাম কম হলে রোজই ব্যবহার করতে পারেন। যদি দেখেন, দাড়ি চটচটে হয়ে যাচ্ছে, তা হলে এর ব্যবহার কমিয়ে দেবেন। কিন্তু বন্ধ করবেন না।
গরম পানিতে মুখ ধুবেন না
শীতে গরম পানিতে মুখ ধোয়া অত্যন্ত আরামদায়ক হলেও আপনার দাড়ির জন্য তা মোটেও ভালো নয়। গরম পানিতে দাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গরম পানিতে আপনার ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। যা থেকে দেখা দিতে পারে চুলকানিও।
সময়মতো ট্রিম করুন
চুলের মতোই আপনার দাড়িও সময়মতো ট্রিম করা দরকার। এটি আপনার দাড়ির ক্ষতি রোধ করতে সহায়তা করে। দাড়ি কাটতে একটি ভাল গ্রুমিং কিট বা ট্রিমারের সাহায্য নিন। এতে দাড়ির ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। প্রতি দুই মাস অন্তর একবার দাড়ি ট্রিম করা প্রয়োজন।
নিয়মিত চিরুনি করুন
চুল যেমন আমরা আঁচড়ে পরিপাটি করে রাখি, দাড়ির ক্ষেত্রেও তেমন যত্ন দরকার। দাড়ি পরিচ্ছন্ন রাখতে ভালো করে আঁচড়ানো জরুরি। দাড়িতে তেল লাগিয়ে ভালো করে আঁচড়ে নিন। এতে তেল সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। আপনার প্রতিদিনের রুটিনের মধ্যে দাড়ি আঁচড়ানো অবশ্যই রাখবেন। তাতে এই শীতেও আপনার মুখভর্তি দাড়ি থাকবে সুন্দর।
ভালো পণ্য ব্যবহার
ত্বক এবং দাড়ির জন্য ভালো পণ্যের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। কারণ কম দামী বা বাজারের সাধারণ পণ্য ব্যবহারের ফলে ত্বকের সঙ্গে চুলেরও ক্ষতি করে। ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়। বাজারে দাড়ির জন্য নির্দিষ্ট ভালো পণ্য রয়েছে যা, আপনার ত্বক এবং চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করবে। সুতরাং শর্টকাট এড়িয়ে চলুন এবং দাড়ির জন্য কিছু ভালো মানের পণ্য বিনিয়োগ করুন।
অ্যালোভেরা ব্যবহার
ত্বক এবং চুলের জন্য অ্যালোভেরা খুবই উপকারি। কারণ, অ্যালোভেরা হল এনজাইমের অন্যতম উৎস। ত্বকে জমে থাকা মৃত কোষগুলিকে দূরে সরিয়ে ত্বক এবং দাড়ির গোড়াকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এটি। তাই, রোজ অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন এবং দাড়িতে আনুন একস্ট্রা সাইন।
ছেঁটে ফেলুন
গালের সব জায়গায় সমান হারে দাড়ি বাড়ে না। কোনও কোনও দাড়ি এ দিক ও দিক থেকে মাথা তোলে। এমন হলে সেগুলি ছেঁটে ফেলুন। কাঁচি বা ট্রিমার ব্যবহার করতে পারেন।
বেশি করে পানি খান
দাড়ির যত্ন নেওয়ার জন্য শরীর আর্দ্র রাখা খুব দরকারি। না হলে দাড়িও রুক্ষ হয়ে যাবে। তাই রোজ তিন থেকে চার লিটার জল খান। তাতে শরীর আর্দ্র থাকবে, দাড়িও নরম থাকবে।
ময়েশ্চারাইজ
দাড়ির জন্য আলাদা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কারণ, মুখের ওই অংশ আর দাড়িবিহীন অংশের ত্বকে পার্থক্য দেখা দেয়। বাজারে এখন অনেক ধরনের বিয়ার্ড অয়েল, বাম বা ক্রিম কিনতে পাওয়া যায়।
চাইলে ঘরেই মাত্র কয়েকটি উপাদান দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন বিয়ার্ড অয়েল। এ জন্য দরকার হবে চার টেবিল চামচ জলপাই তেল, চার টেবিল চামচ নারকেল তেল, চার টেবিল চামচ আমন্ড তেল এবং চার-পাঁচ ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল। এসেনশিয়াল অয়েলের ভেতর টি ট্রি অয়েল, ইউক্যালিপটাস অয়েল বা লেমন অয়েল দেওয়া যেতে পারে। এসেনশিয়াল অয়েল না দিলেও কোনো সমস্যা নেই। সব কটি উপাদান একসঙ্গে মিশালেই তৈরি হবে ঘরোয়া বিয়ার্ড অয়েল। এই তেল আর্দ্রতা বাড়ানোর পাশাপাশি দাড়িতে পুষ্টি জোগায়। এই তেলের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেশন উপাদান ত্বকের নানা রকমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। দাড়ি ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করে এবং রাতে ঘুমানোর আগে এই তেল লাগাতে হবে।