মুখের দাগ দূর করার সহজ উপায়-Easy way to remove facial scars
মুখের দাগ নিয়ে অনেক মানুষকে দুশ্চিন্তায় থাকতে দেখা যায়। রোদে পুড়ে, ব্রণ থেকে, বয়সের কারণে মুখে দাগ হতে পারে। বাজারে দাগ ওঠানো অনেক ক্রিম কিনতে পাওয়া গেলেও তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে অনেক বেশি। এজন্য চেষ্টা করুন ঘরোয়া উপায়ে মুখের দাগ দূর করতে।
মুখে দাগ হওয়ার কারণ
মুখে দাগ হওয়ার পিছনে সাধারণ কিছু কারণ চলুন জেনে নেওয়া যাক।
সূর্যের অতি বেগুণী রশ্মি: সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে মুখে কালচে ছোপ পড়তে পারে। হাইপারপিগমেন্টেশন এর প্রধান কারণ।
হরমোনাল চেঞ্জ:মেলাসমার কারণে অর্থাৎ হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে অনেক সময় মুখে কালো দাগ পড়তে পারে।
প্রদাহ: ব্রণ, একজিমা এবং অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়ায় দাগ পড়তে পারে।
মুখের দাগ দূর করার সহজ উপায়
ত্বকে মেছতা, ব্রণ হলে ও চোখের নিচে কালো দাগ পড়লে মুখের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। পাশাপাশি ত্বকে রোদে পুড়ে যাওয়া কালচে দাগও পড়ে। এসব দাগ দূর করার জন্য আছে ঘরোয়া কিছু উপায়।
আলু
আলুতে থাকে ক্যাটেকোলেজ নামক একধরনের উপাদান, যা ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং রোদে পোড়াভাব দূর করতে সাহায্য করে। কখনো কখনো মেছতার কঠিন দাগও দূর করতে পারে আলু। এ জন্য খোসা ছাড়ানো আলু একটু মোটা করে টুকরো করে নিতে হবে। টুকরোগুলো সরাসরি পানিতে না ধুয়ে আলু কাটার আগেই ধুয়ে নেওয়া ভালো। এবার হালকা ভেজা ত্বকে আলুর টুকরোগুলো চক্রাকারে ঘষতে হবে। মনে রাখতে হবে, খুব জোরে ঘষা যাবে না। এক মাস প্রতিদিন দুবার এ পদ্ধতিতে আলু ব্যবহার করলে দাগছোপ চলে যাবে। মাঝেমধ্যে এর সঙ্গে লেবুর রসও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সরাসরি মাঠের আলু ব্যবহার করতে পারলে দ্রুত কাজ হবে।
লেবুর রস আর জলের মিশ্রণ
একমাত্র আপনার চোখের চারপাশটা বাদ দিয়ে মুখে বা গলার অন্যত্র প্রতি একদিন অন্তর লেবুর রস আর জলের মিশ্রণটা লাগিয়ে দেখতে পারেন। চলতে পারে লেবুর রস আর মধুর মিশ্রণও। লেবু প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। এর সাইট্রিক অ্যাসিড আর ভিটামিন সি ক্রমশ গাঢ় কালো ছোপ হালকা করে দেয়। আপনার ফেস মাস্কেও লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যালো ভেরা জেল
অ্যালো ফেরা জেলও দাগ-ছোপ তাড়াতে খুব কার্যকর। সরাসরি অ্যালো ভেরা পাতা থেকে জেল বের করে নিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। অ্যালো ভেরা জেল, চিনি আর লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করে লাগিয়ে নিন ত্বকে।
চন্দন
অধিকাংশ সময় ব্রণ চলে গেলেও তার দাগ থেকে যায়। সঠিক সময় ব্যবস্থা না নিলে দাগ স্থায়ী হয়ে যেতে পরে। এ ধরনের দাগছোপের জন্য চন্দন ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ত্বক উজ্জ্বল করতেও সাহায্য করে। অনেক সময় ব্রণ হওয়া প্রতিরোধ করে এবং দাগ ত্বকে বসতে দেয় না। এ ক্ষেত্রে ২ টেবিল চামচ চন্দনগুঁড়া কিছুটা গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে। মুখের ত্বকে লাগিয়ে। আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে একবার বা দুবারের বেশি মিশ্রণটি ব্যবহার করা উচিত নয়।
হলুদ
হলুদে থাকে কারকিউমিন নামক একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এন্টি মেলানজেনিকের প্রভাবে মুখের কালো দাগ হালকা করতে সহায়তা করে। ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ার সঙ্গে পরিমাণ মতো লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
মধু ও লেবু
লেবু ও মধু পিগমেন্টেইশন দূর করার পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। একটা লেবুর রস নিয়ে তাতে একই পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিন। দাগের ওপর মিশ্রণটি মেখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর তা ধুয়ে ফেলুন।
গ্লিসারিন ও গোলাপ জল
গোলাপ জল ও গ্লিসারিন একসঙ্গে কালচে ভাব দূর করার পাশাপাশি ঠোঁটের চারপাশের শুষ্কতা কমায়। দুইটি উপাদান সমপরিমাণে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে মেখে সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে তা ধুয়ে ফেলুন।
টমেটোর রস
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আরেকটি ফল টমেটো যা ত্বকের দাগ দূর করতে দারুণ কাজ করে। এছাড়াও, টমেটোতে লাইকোপেন থাকে, যা মুখের দাগ দ্রুত দূর করতে সাহায্য করে। টমেটোর প্রাকৃতিক অ্যাসিরিঞ্জেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলো খোলা পোরস সঙ্কুচিত করতেও সহায়তা করে।
পেঁপে
পেঁপে ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস। পাকা পেঁপে নিয়ে তা ভালোভাবে চটকে তারপর মুখে মাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের দাগ দূর করার পাশাপাশি ত্বককে উজ্জ্বল করে পেঁপে।
দুধ
যারা প্রতিদিন বাইরে যান তাদের ত্বকে প্রচুর ধুলা লাগে আর ত্বকের ভাজে ভাজে এসব ধুলা জমে ত্বকের রঙ ও ত্বকের গুণগত মান দুটোই নষ্ট করে। ধুলা আপনার লোমকূপের মাধ্যমে টিস্যুতে জমা হয়ে ত্বকে অক্সিজেন প্রবেশে বাধা দেয়। এই সমস্যা দূর করতে অতি সহজ উপায় হল দুধের মধ্যে এক চিমটি লবণ আর লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগান আর শুকিয়ে যাবার পর ধুয়ে ফেলুন। দুধ ত্বক উজ্জ্বল আর দাগহীন করতে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।