জামের উপকারিতা
Java plum

জাম ফল

জামের পরিচিতিঃ

ইংরেজি: Java plum, Jambul, Malabar plum

বৈজ্ঞানিক নাম: Syzygium cumini

ফল আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শরীরে শক্তি জোগায়। জাম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত। ব্ল্যাক প্লাম‚ জাম্বুল‚ জাম্বোলান‚ জাম্বাস‚ মালাবার প্লাম‚ রজামান‚ নেরেডু‚ কালা জামুন‚ নাভাল‚ জামালি‚ জাভা প্লাম ইত্যাদি নামে এটি পরিচিত। হাজারো স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে জামের।

বিবরণঃ

এটি দেখতে ১ থেকে ২.৫ সেন্টিমিটার লম্বা, প্রায় আয়তাকার। গাছ ১৪ থেকে ৬০ ফুট বা এর বেশিও লম্বা হতে পারে। পাতা সরল, বড়, চামড়া পুরু এবং চকচকে। গাছ চির সবুজ। চকচকে পাতা এবং চিরসবুজ হবার কারণে এর আলংকরিক মান বেশ ভালো।

বিস্তারঃ

জাম ভারতবর্ষ থেকে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়েছে এবং বর্তমানে এটি সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে বেশ দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রধানত দুই জাতের জাম পাওয়া জায়। জাতগুলি হলো ক্ষুদি- খুব ছোট জাত এবং মহিষে- বেশ বড় ও মিষ্টি।

জামের পুষ্টিগুনঃ

আমাদের দেশীয় ফলগুলোর মধ্যে জাম অন্যতম। এ ফলটিতে থাকে খাদ্য শক্তি, আঁশ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, শর্করা, ক্যারোটিন, চর্বি, আমিষ ও ভিটামিন-সির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। মিষ্টি এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, জিংক, কপার, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ, ফ্রুকটোজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্যালিলাইলেটসহ অসংখ্য উপাদান। 

জামের উপকারিতা

১.জামে আছে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যা ডায়াবেটিস-এর জন্য একটি ভাল বিকল্প। ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার ফল, যা প্রমান করে যে ডায়াবেটিস-এর দ্বিতীয় জটিলতার ঝুঁকি কমায় এই ফলটি। জামের পাতা, ছাল এবং বীজ ডায়াবেটিস-এর জন্য সবচেয়ে উপকারি অংশ। এর মধ্যে জামের বীজ অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রোপার্টিজ হিসেবে প্রমাণিত।

২.জামে ভিটামিন 'এ' আর 'সি' আছে। এছাড়াও এতে থাকে বিভিন্ন মিনারেল, যা আমাদের চোখ এবং ত্বকের জন্য খুব উপকারী।

৩.জামের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানগুলোর মধ্যে আয়রন একটি। এই আয়রন দেহের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। জাম ফলে থাকা আয়রন অ্যানিমিয়া এবং জন্ডিসকে নিরাময় করে এবং বিভিন্ন ধরনের আয়রনঘটিত সমস্যাগুলোর জন্য যারা ভুগছেন তাদের জন্য জাম খুবই ভাল।

৪.জাম ফলটি ক্যালসিয়াম, লোহা, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর পুষ্টি রয়েছে যা সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। জামে থাকা প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও লৌহ  হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য চমৎকারভাবে কাজ করে। 

৫.এতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি আছে‚ এর সাহায্যে দাঁত এবং মাড়ি ভালো থাকে। এছাড়াও মুখের দুর্গন্ধ দূরে রাখতেও সাহায্য করে।

৬.জামে উপস্থিত অক্সিলিক অ্যাসিড‚ গ্যালিক অ্যাসিড‚ ম্যালিক অ্যাসিড‚ ট্যানিন‚ বেটুলিক অ্যাসিড ইনফেকশন দূরে রাখে। 

৭.জাম মুখের ভেতর উৎপাদিত ক্যানসারের সহায়ক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব থেকে দেহকে রক্ষা করে এবং মুখের ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৮.ডায়রিয়ার রোগীদের জন্য জামের রস বেশ উপকারী । নিয়মিত জামের রস খেলে মূত্রথলিও ভালো থাকে। জামে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম থাকায় ওজন কমাতে এটি বেশ কার্যকর।

৯.জামে যেসব উপাদান আছে তা উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও সহায়তা করে।

১০.জামে উপস্থিত পটাসিয়াম এবং ফসফরাসজাতীয় প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানসমূহ হৃদযন্ত্র ভালো রাখে। উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে জাম। এতে থাকা উপাদানসমূহ ধমনীগুলোকে সুস্থ রাখে এবং শক্ত হতে দেয় না।

আরো পড়ুনঃ পেয়ারার পুষ্টিগুণ

নখের যত্নে যা করবেন - What to do with nail care
ডেউয়া ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা
ডালিম খাওয়ার উপকারিতা-Benefits of eating pomegranate
হাতিশুঁড় গাছের উপকারিতা
শতমূলের উপকারিতা ও ঔষদি গুণ
বেড়েলার উপকারিতা
বহেড়ার গুনাগুণ
ত্বকের উজ্জ্বলতার উপায়
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস
সিদল ভর্তা